সাড়ে তিন লাখ টাকার মালামাল চেয়ে শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ওসির চিঠি
সাড়ে তিন লাখ টাকার মালামাল চেয়ে শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ওসির চিঠি
হবিগঞ্জের একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়েছেন শায়েস্তাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাজমুল হক কামাল চিটিতে তিনি পুলিশিং ডে ও দুর্গাপূজা উদ্যাপন কমিটির অতিথিদের আপ্যায়ন করতে সাড়ে ৩ লাখ টাকার মালামাল চেয়েছেন। এ বিষয়ে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো অভিযোগ না করা হলেও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি জেনেছেন এবং ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলছেন।
গত ১০ অক্টোবর, এ চিঠি দেন হবিগঞ্জের অলিপুরে অবস্থিত প্রাণ-আরএফএলের হবিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের মহাব্যবস্থাপক (জিএম-প্রশাসন) বরাবর। গতকাল শুক্রবার এ বিষয়ে ফোন দেওয়া হলে ওসি নাজমুল হক বলেন, একটা মামলার বিষয় নিয়ে ব্যস্ত আছেন। এ বিষয়টি নিয়ে পরে কথা বলবেন। আবারও আজ শনিবার দুপুরে ফোন করা হলে তিনি একইভাবে ব্যস্ততা দেখিয়ে এ নিয়ে কথা বলেননি।
চিঠিতে লেখা ছিল, আসন্ন দুর্গাপূজা অসাম্প্রদায়িক ভাবে ও নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে স্থানীয় পূজা উদ্যাপন কমিটির নেতা, জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি সভা করতে চান। সভার অতিথিদের আপ্যায়ন করতে কাচ্চি বিরিয়ানি ৩০০ প্লেট, জিলাপি ৩০ কেজি, মিষ্টি ৩০ কেজি, দই ৩০০ প্যাকেট ও ৫০০ বোতল পানি প্রয়োজন। এ বাবদ ১ লাখ টাকার মালামাল সরবরাহের কথা বলেন ওসি।
ঘুম ভাঙছে জম্বি ভাইরাসের মহামারির শঙ্কা
চিঠিতে আরও লেখা হয় আগামী ২৮ অক্টোবর, সারা দেশে কমিউনিটি পুলিশিং ডে। শায়েস্তাগঞ্জ থানার পক্ষ থেকে কমিউনিটি পুলিশিং ডে এক সুধী সমাবেশ করতে চান। এ সমাবেশের জন্য আরও কাচ্চি বিরিয়ানি ৫০০ প্যাকেট এবং মিষ্টি ও দইয়ের আয়োজন করা হবে। এ সঙ্গে অনুষ্ঠানের মাইকিং, ব্যানার-ফেস্টুন, ফিল্ড ক্যাপসহ বিভিন্ন সামগ্রী দরকার। এ জন্য আরও আড়াই লাখ টাকার মালামাল দরকার। এই দুই অনুষ্ঠানের মোট খরচ সাড়ে ৩ লাখ টাকার মালামাল চেয়ে ওসির স্বাক্ষরিত চিঠিটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়।
ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের প্রধান পরিকল্পনা নির্বার্হী দিলীপ কুমার দেব বলেন, ওসির এ চিঠি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) দেওয়া হয়েছে। ব্যবস্থাপনা পরিচালক সিলেটে ব্যস্ত থাকায় এ বিষয়ে খোঁজ নিতে পারেননি। বিষয়টি নিয়ে শিগগিরই নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন। থানার ওসি এ ধরনের চিঠি দিতে পারেন না। এটা এক ধরনের নীরব চাঁদাবাজি।
হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) বলেন, বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন। তিনি বুঝে উঠতে পারছেন না ওসি এ ধরনের চিঠি কেন দিলেন। এ ধরনের চিঠি দেওয়া অন্যায় বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।