ইউরোপের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ, জ্বালানি
২০২৩ সালের শীতকালে জ্বালানি সংকটে বিপর্যস্ত ইউরোপের জন্য চিন্তার নতুন কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে রাশিয়া থেকে আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নতুন উৎস থেকে জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে ইউরোপের দেশগুলো।
এবারের শীতকালে যেন একটু বেশিই ভুগতে হয়েছে জ্বালানি সংকটে আক্রান্ত ইউরোপের বাসিন্দাদের। ইউরোপে শীতকাল বলতে যা বোঝায় গড়ে তার স্থায়ীত্ব বছরের তিন মাস। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার জ্বালানি আমদানি বন্ধ হওয়ায় ২০২২ সালে হুমকিতে পড়ে ইউরোপের জ্বালানি ব্যবস্থাপনা। দেশে দেশে বিপর্যস্ত হয় গ্রাহক পর্যায়ে জ্বালানি সরবরাহ। আগে থেকেই মজুত করে রাখা জ্বালানির উপর ভর দিয়ে ২০২২ সালের শীত মৌসুম কাটানো গেলেও, ইউরোপের জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ২০২৩ সালের শীতকাল।
ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির তথ্যমতে, ২০২২ সালে ইউরোপকে শুধুমাত্র গ্যাস কিনতেই ব্যয় করতে হয়েছে ৪০০ বিলিয়ন ইউরো। রাশিয়ার জ্বালানি সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা এবং চীনসহ এশীয় দেশগুলোর জ্বালানির চাহিদা বৃদ্ধি নতুন করে চিন্তার ভাঁজ ফেলছে তাদের কপালে। আসন্ন শীতের জ্বালানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে এখন থেকেই চিন্তাভাবনা করতে হচ্ছে ইউরোপের নীতি নির্ধারকদের। রাশিয়ার তেল সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ২০২২ সালে জ্বালানির জন্য ইউরোপকে অনেক বেশি নির্ভর করতে হয়েছে আমদানি করা এলএনজির ওপর। এজন্য তাদের গুনতে হয়েছে বাড়তি এই অর্থ।
পাশাপাশি জ্বালানি সংকটে বিপর্যস্ত শিল্প এবং গৃহস্থালী পর্যায়ে ভর্তুকি বাবদ এই সময়ে শুধু জার্মানিরই ব্যয় হয়েছে ২৬৫ বিলিয়ন ইউরো। ইউরোপের দেশগুলোর সরকারকে ব্যয় করতে হয়েছে ৬৫৭ বিলিয়ন ইউরোর সমপরিমাণ অর্থ। আগের বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে জ্বালানি সংকট এড়াতে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছে ইউরোপের দেশগুলো। তেলের পাশাপাশি তারা জোর দিয়েছে এলএনজি আমদানির ওপর। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ও কাতার থেকে আমদানি করা এলএনজির উপরই বেশি নির্ভর করতে হচ্ছে তাদের।
কোভিড লকডাউনের কারণে গত বছর প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছিল বেইজিংয়ের অর্থনীতি। কিন্তু লকডাউন শেষে দুর্দান্ত গতিতে প্রত্যাবর্তন করেছে দেশটির অর্থনীতি, বেড়েছে জ্বালানির ক্ষুধাও। অবশ্য এ বছর ইউরোপের এলএনজি আমদানিতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে চীন। এ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে এলএনজি আমদানিতে চীনের সঙ্গে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামতে হবে ইউরোপকে।