রাশিয়ার ঋণ, চীনা মুদ্রায় পরিশোধ করবে বাংলাদেশ
রাশিয়ার ঋণ, চীনা মুদ্রায় পরিশোধ করবে বাংলাদেশ
অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষাপটে রাশিয়ার সাথে লেনদেনে মার্কিন ডলারকে বাইপাস করে এই আন্তর্জাতিক লেনদেন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য রাশিয়া থেকে নেয়া ঋণের মধ্যে ৩১৮ মিলিয়ন ডলার পরিমাণ অর্থ বাংলাদেশ ইউয়ান (চীনা মুদ্রা) ব্যবহার করে পরিশোধ করবে।
এক প্রতিবেদনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট এ তথ্য জানিয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের ইউরোপীয় বিষয়ক শাখার প্রধান ওয়াশিংটন পোস্টকে জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার ১৩ এপ্রিল, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের এক সভায় চীনা মুদ্রা ইউয়ান ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শাখার প্রধান বিষয়টির কূটনৈতিক সংবেদনশীলতার কথা উল্লেখ করে বলেন, যদিও ইউয়ানে মুদ্রায় ঋণ পরিশোধ করার সিধান্ত নেয়া হয়েছে কিন্তু লেনদেন এখনও সম্পূর্ণ হয়নি কারণ অর্থপ্রদানের বিবরণ এখনও সমাধান করা হয়নি।
এমন সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে ১ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান অর্থপ্রদানের অচলাবস্থার সমাধান হয়েছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উপর নিষেধাজ্ঞার কারণে, বিগত বছরে বহুল প্রচলিত অর্থ লেনদেন পদ্ধতি সুইফট ব্যবস্থা রাশিয়ায় নিষিদ্ধ হওয়ায় বাংলাদেশ ডলার ব্যবহার করে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য রাশিয়াকে অর্থ প্রদান করতে পারেনি।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ রাশিয়ার কাছ থেকে নেয়া ১২ বিলিয়ন ডলারের ঋণ এখন ক্রস-বর্ডার ইন্টারব্যাঙ্ক পেমেন্ট সিস্টেম [সিআইপিএস] এর মাধ্যমে ইউয়ান [চীনা মুদ্রা] ব্যবহার করে পরিশোধ করবে। ডলারের আধিপত্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের দায়িত্বে নিয়োজিত রাশিয়ান ঠিকাদার রোসাটম স্টেট অ্যাটমিক এনার্জি কর্পোরেশন এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি।
গত সোমবার চীনা অনলাইন নিউজ জানিয়েছে, ইউয়ান [চীনা মুদ্রা] প্রকল্পের জন্য অর্থ প্রদান করা সবচেয়ে সম্ভাব্য বিকল্প হবে। আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্যের বেশিরভাগই ডলারে ধার্য করা হয় এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরান, রাশিয়া, এবং আফগানিস্তানের মতো দেশ গুলোতে ব্যাংকিং ব্যবস্থা উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞার সমালোচকরা মার্কিন সরকারকে গ্রিন ব্যাংককে অস্ত্রীকরণ এবং এর বৈশ্বিক মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করার জন্য অভিযুক্ত করেছেন।
সুদানে সেনা ও আধাসামরিক বাহিনীর সংঘর্ষে
বাংলাদেশ এই চুক্তি করেছে অন্যান্য দেশগুলোও সম্প্রতি ডলার ব্যবহার করার প্রয়োজনীয়তা এড়াতে ইউয়ান [চীনা মুদ্রা] পেমেন্ট বেছে নেবে বলে ইঙ্গিত দেয়ার পর। গত মার্চ মাসে, চীনের সাথে বাণিজ্যের জন্য ডলার ত্যাগের কথাও ব্রাজিল বলেছিল। এই পরিস্থিতিকে চীনা কর্মকর্তারা এবং রাষ্ট্রীয় মিডিয়া বিশ্বের ধীরে ধীরে “ডি-ডলারাইজেশন“ এবং আমেরিকান আধিপত্যের একটি শেষ পদক্ষেপ হিসাবে ধারণা করছে।
সৌদি আরবসহ পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোকে তেলের জন্য ইউয়ান [চীনা মুদ্রা] গ্রহণ করার জন্য চাপও দিচ্ছেন চীনা। তেল একটি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য যার দাম কয়েক দশক ধরে প্রায় একচেটিয়া ভাবে ডলারে নির্ধারণ করা হয়েছে। ইউয়ান মুদ্রায় বাংলাদেশের পারমাণবিক কেন্দ্রের জন্য অর্থ প্রদান রাশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে যথারীতি বাণিজ্য পুনরায় শুরু করার পথ প্রশস্ত করতে পারে। রাশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য পঙ্গু হয়ে ছিল পূর্বে ইউক্রেনে আক্রমণের পর থেকেই। বিশেষজ্ঞ এবং কর্মকর্তারা বলছেন, বাণিজ্য সম্পর্কের অবনতির প্রধান কারণগুলোর মধ্যে একটি ছিল অর্থপ্রদান ব্যবস্থার অভাব।
গোল্ডেন ভিসা দেবে সংযুক্ত আরব আমিরাত
অর্থপ্রদান সমস্যার মুখে চীন গত বছর বাংলাদেশকে প্রস্তাব দেয় কারেন্সি অদলবদল করার। ফলস্বরূপ বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি অংশকে চীনের সাথে ইউয়ানে চুক্তি নিষ্পত্তি করার অনুমোদন দেয়া হয়। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র, রাশিয়াকে ইউয়ান [চীনা মুদ্রা] অর্থ প্রদানের সিদ্ধান্তের বিষয়টি অস্বীকার বা নিশ্চিত করতে রাজি হননি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, ইউয়ান এটি একটি বিকল্প হতে পারে, ইউয়ান [চীনা মুদ্রা] আমাদের অফিসিয়াল মুদ্রাগুলির মধ্যে একটি। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও এর কিছু অংশ আছে ইউয়ান।
Yeas
ধন্যবাদ আপনাকে