ঈদে সুন্দরবন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি
ঈদে সুন্দরবন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি
সবুজ প্রকৃতিতে বুক ভরে নিশ্বাস নিতে ঈদের ছুটিতে সুন্দরবনে ছুটে আসতেন বহু পর্যটক। তবে এবার ঈদুল আজহার ছুটিতে কোনও পর্যটক বা দর্শনার্থী সুন্দরবনের দেখা পাবেন না। তিন মাস সব ধরনের নৌযান চলাচল ও পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা চলছে নদী ও সাগরে মাছের প্রজনন বৃদ্ধির মৌসুম চলায়। এ কারণে এবার পর্যটকরা সুন্দরবন ভ্রমণ করতে পারছেন না।
সুন্দরবন বিভাগ জানায়, গত ২০ মে থেকে বঙ্গোপসাগর ও সুন্দরবনে সব ধরনের মৎস্য আহরণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ আহরণ বন্ধ রেখে মাছের প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে। আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা চলবে। তাই সুন্দরবনে নিষেধাজ্ঞা চলবে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত।
পূর্ব সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র ও করমজল পর্যটন স্পটের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, আগামী তিন মাস সুন্দরবনে পর্যটকদের আগমন ও ভ্রমণও বন্ধ আছে। সুন্দরবনে নদী ও খালে মাছের প্রজনন স্বাভাবিক রাখতে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত পর্যটকবাহী নৌযান সুন্দরবনের অভ্যন্তরে চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। এই সময়ে সুন্দরবনে প্রবেশের জন্য জেলে ও দর্শনার্থীদের কোনও পাস-পারমিট দেওয়া হবেনা। কেউ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সুন্দরবনে প্রবেশ করলে তাহাদের বিরুদ্ধে বন আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুন্দরবনের ট্যুর ব্যবসায়ীরা বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে টানা ৭ মাস বন্ধ থাকার পর ২০২০ সালের ১ নভেম্বর থেকে পর্যটকদের জন্য সুন্দরবন খুলে দেওয়া হয়েছিল। ফলে দীর্ঘদিন পর প্রাণচাঞ্চল্য ফেরে সুন্দরবনকেন্দ্রিক সব পর্যটন শিল্পে। সে সময় অবসাদ কাটাতে অনেকেই সুন্দরবনে বেড়াতে আসেন। গত ২০২১ ও ২২ সালের জুন থেকে আগস্ট টানা তিন মাস করে পর্যটন মৌসুমে সুন্দরবন ভ্রমণ বন্ধ ছিল। আবারও সুন্দরবনে পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আসায় বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা।
আসন্ন ঈদের ছুটিতে হাজার হাজার পর্যটক সুন্দরবন ভ্রমণে আসতেন। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার কারণে তা বন্ধ থাকছে। অন্তত ঈদের ছুটির ৩/৪ দিন সুন্দরবন খুলে দিলে তাদের সংকট কিছুটা কমতো বলে জানান পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, সুন্দরবন খুলে দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই, মাছের প্রজনন বৃদ্ধিতে বৃহত্তর স্বার্থে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর পর্যটকরা সুন্দরবন ভ্রমণ করতে পারবেন।
বানিয়াচং বিশ্বের বৃহত্তম গ্রামের খ্যাতি লাভ করেছে
বন কর্মকর্তা আরও জানান, নতুন আরও চারটি পরিবেশবান্ধব পর্যটন স্পট নির্মাণ করা, সুন্দরবনে পুরনো পর্যটন স্পটগুলোর সংস্কার ও আধুনিকায়নও হচ্ছে। ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এই পর্যটন স্পটগুলো হচ্ছে–সুন্দরবনের পশ্চিম বিভাগে শেখেরটেক, আলীবান্ধা, কালাবড়ি ও কৈলাশগঞ্জ পর্যটন কেন্দ্র। এই পর্যটন স্পটগুলো নির্মিত হলে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের প্রতি দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আগ্রহ আরও বাড়বে।
প্রতি বছর সুন্দরবন ভ্রমণ করেন শত শত দেশি-বিদেশি পর্যটক। পর্যটকদের জন্য পরিবেশবান্ধব পর্যটন স্পট রয়েছে সুন্দরবনে। সেগুলো হচ্ছে:– হারবাড়িয়া, কটকা, করমজল, কচিখালী, দুবলার চর, নীলকমল (হিরনপয়েন্ট) ও কলাগাছিয়া। সহজ যাতায়াত এবং কম সময় লাগার কারণে দেশি পর্যটকরা বেশি যান করমজল ও হারবাড়িয়া পর্যটন স্পটে।