জাতীয়

মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন খালেদা জিয়ার…

মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন খালেদা জিয়ার…

খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়াতে তাঁর পরিবারের করা আবেদন স্বরাষ্ট্র থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে এসেছে। তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এখনো এ বিষয়ে মতামত দেননি। কারণ ফাইলটি এখনো তাঁর কাছে উপস্থাপন করা হয়নি।
আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এসব কথা বলেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) ছয় দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আইনমন্ত্রী। রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, প্রস্তাবিত উপাত্ত সুরক্ষা আইনসহ বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে কথা হয়েছে বলে জানান তিনি।

বিএনপির নেত্রীর ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়াতে তাঁর ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ৬ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জানিয়েছেন, আবেদনের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন। আবেদনটি তিনি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন আইন মন্ত্রণালয় মতামত জন্য।
নেত্রীর পরিবারের এক সদস্য বলেন, বরাবরের মতো এবারও তাঁদের আবেদনে খালেদা জিয়ার সাজা মওকুফ চাওয়া হয়েছে। অন্যদিকে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, খালেদা জিয়ার সাজা মওকুফ করার কোনো সুযোগ নেই। তবে সরকারের একাধিক সূত্রের ইঙ্গিত, আগের মতোই খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত রেখে তাঁর মুক্তির মেয়াদ ছয় মাস বাড়ানো হতে পারে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে দুটি শর্তে সরকারের নির্বাহী আদেশে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল ২০২০ সালের ২৫ মার্চ। তখন করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে তাঁর পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেওয়া হয়। যে দুটি শর্তে নির্বাহী আদেশে সরকার খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়েছে, তার প্রথমটি হলো তাঁকে বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। দ্বিতীয় শর্তটি হলো তিনি বিদেশ যেতে পারবেন না। এরপর পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ছয় মাস অন্তর অন্তর তাঁর মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়া ২০১৮ সালে ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রায় দুই বছর জেলে ছিলেন। যদিও খালেদা জিয়ার পরিবার এবারের আবেদনেও শর্ত শিথিল করে তাঁকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার অনুমতি চেয়েছে।

খালেদা জিয়ার রাজনীতি নিয়ে হঠাৎ মন্ত্রীসহ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের বক্তব্যে শুরু থেকেই সন্দেহ প্রকাশ করে আসছে বিএনপি। দলটির নেতারা এসব বক্তব্যের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্ত থাকা খালেদা জিয়ার রাজনীতি করতে পারা না-পারার প্রশ্নে সরকারের অন্তত চারজন মন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। তাঁদের মধ্যে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের বক্তব্য একই রকম। খালেদা জিয়ার মুক্ত থাকার শর্তে যা আছে, তাতে তাঁর রাজনীতি করতে বাধা নেই। সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্ত থাকায় খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন না বলে মনেকরেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।

খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ ২৪ মার্চ শেষ হতে যাচ্ছে। এর আগেই সরকারের দিক থেকে তাঁর রাজনীতি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করার বিষয়টি উদ্দেশ্যমূলক বলে মনে করেন বিএনপির নেতারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *