ইফতারে কি খাবেন…
সিয়াম সাধনার মাস রমজানে ভোররাতে সেহরি খেয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকেন মুসলিমরা। আঁশজাতীয় খাবার ধীরে হজম হয়। তাই সামর্থ্য অনুযায়ী আঁশজাতীয় খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন। ফলে ক্ষুধা অনুভব কম হয় এবং পর্যাপ্ত শক্তি পাওয়া যায়। দীর্ঘ সময়ে খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ না করায় পাকস্থলীসহ বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিশ্রাম পায়। সেহরি ও ইফতারে অস্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণসহ ভুল জীবনাচরণের কারণে অনেকে সে সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন।
ইফতারে করণীয়:
# মিষ্টি ফল যেমন: খেজুর, কলা. তরমুজ প্রভৃতি গ্রহণ করা যেতে পারে, এসকল মিষ্টি ফল দেহের প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ লবণের চাহিদা পূরণ করতে সহায়তা করবে।
# খাবার খেতে হবে ধীরে ধীরে ও ভালোভাবে চিবিয়ে ইফতারে সময়, যা খাবার হজমে সহায়ক হবে।
# ঘরে তৈরি তাজা ফলের শরবতইফতারে পানীয় হিসেবে যেমন, ডাবের পানি, ইসবগুল, তোকমা প্রভৃতি গ্রহণ করা যেতে পারে, যা দেহের পানি ও লবণের (ইলেকট্রোলাইট) ভারসাম্য রক্ষা করতে সহায়তা করবে ও কোষ্ঠ্যকাঠিন্য প্রতিরোধে সহায়ক।
# এমন খাবার ইফতারে রাখা যেতে পারে পুষ্টিসমৃদ্ধ ও সহজে হজম হয়। যেমন: দই-চিড়া, সবজি খিচুড়ি, সিদ্ধ ছোলা, বিভিন্ন ধরনের বাদাম এবং শসা-টমেটোর মিশ্রণে তৈরি সালাদ।
# আমিষের চাহিদা পূরণের জন্য ডিম বা ডিমের তৈরি খাবার গ্রহণ করা যেতে পারে ইফতারে সময়।
ইফতারে বর্জনীয়:
অতিরিক্ত লবণ ও চিনিযুক্ত খাবার ও পানীয় চিপস, জিলাপি, কার্বোনেটেড সফট ড্রিংকস, সমুচা, শিঙাড়া, কেক-পেস্ট্রি, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, পিৎজা, বার্গারসহ যাবতীয় জাংক ফুড) এড়িয়ে চলা ভালো। অতিরিক্ত ভাজাপোড়া বা গ্রিল করা সকল খাবার, যেমন: মাংসের ফ্রাই, গ্রিল বা শিক কাবাব পরিহার করা প্রয়োজন। এসকল খাবারে তৈরি হওয়া ট্রান্সফ্যাট হৃদরোগ, স্ট্রোকসহ বিভিন্ন প্রাণঘাতী রোগের অন্যতম প্রধান কারণ। অধিক মসলা ও কৃত্রিম রংযুক্ত পানীয় ও খাবার এড়িয়ে চললে ইফতার পরবর্তী বদহজম, অস্বস্তি ও অন্যান্য শারীরিক জটিলতা এড়ানো সম্ভব। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমীক্ষায় উঠে এসেছে, অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার গ্রহণের জন্য ২০৩০ সাল নাগাদ সত্তর লাখ মানুষ হৃদরোগ বা স্ট্রোকে মতো রোগ আক্রান্ত হয়ে মারা যাবে।