ভ্রমণ

খান বাহাদুর আহসানউল্লাহর সমাধি কমপ্লেক্স বা নলতা শরীফ, কালীগঞ্জ

নলতা শরীফ (Nalta Sharif) সাতক্ষীরা জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার নলতা গ্রামে অবস্থিত। নলতা গ্রামে ১৮৭৩ সালের ডিসেম্বর মাসে জন্মগ্রহন করেন প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ, শিক্ষা সংস্কারক ও সমাজহিতৈষী খান বাহাদুর আহসানউল্লাহ। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় তাঁর অবদান অনস্বীকার্য তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সিনেটর ছিলেন। এছাড়াও আউলিয়া হিসাবে তিনি ছিলে সমাদৃত। ১৯৬৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি খান বাহাদুর আহসানউল্লাহ-র মৃত্যুর পর তাঁকে নলতায় সমাহিত করা হয়। পরবর্তীকালে তাঁর সমাধিস্থলকে কেন্দ্র করে বর্তমানে খান বাহাদুর আহসানউল্লাহ সমাধি কমপ্লেক্স বা নলতা শরীফ গড়ে উঠেছে। নলতা শরীফের প্রায় ৪০ বিঘা জমির ওপর মসজিদ, মাজার, লাইব্রেরি, অফিস, অতিথিশালা, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, পুকুর এবং ফুলের বাগানে একটি দৃষ্টিনন্দন সমাধি সৌধ রয়েছে। সমাধি সৌধের তিন দিকে ৩ টি সিঁড়িপথ তৈরি করা হয়েছে। প্রধান সিঁড়িপথ তুলনামূলক প্রশস্থ এবং আকর্ষণীয়। সমাধি সৌধে রয়েছে একটি কেন্দ্রীয় গম্বুজসহ মোট ৯ টি দর্শনীয় গম্বুজ। প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসের ৮, ৯ এবং ১০ তারিখ খান বাহাদুর আহসানউল্লাহর মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে নলতা শরীফে বার্ষিক ওরস মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ওরস উপলক্ষ্যে নলতায় মেলার আয়জন করা হয়। এসময় মেলা দেখতে এবং ওরসে যোগ দিতে সারাদেশ থেকে হাজার হাজার ভক্ত-অনুরাগী নলতা শরীফ ছুটে আসেন। এছাড়া নলতা শরীফে ১৯৫০ সাল থেকে প্রতি রমজানে বিশ্বের ২য় বৃহত্তম ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হচ্ছে।

xr:d:DAFYj5wwcLQ:31,j:4529038239,t:23030106

নলতা শরীফ পরিদর্শনের সময়সূচী
নলতা শরীফ সারাবছর দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকে। তবে নলতা শরীফে অবস্থিত জাদুঘর সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছাড়া সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা থাকে।
নলতা শরীফ যেভাবে যাবেন
ঢাকার গাবতলী, নবীনগর, শ্যামলী, কল্যাণপুর এবং সাভার থেকে সাতক্ষীরা যাবার এসি এবং ননএসি বাস রয়েছে। এদের মধ্যে এসপি গোল্ডেন লাইন, এ কে ট্রাভেলস, গ্রীন লাইন, মামুন এন্টারপ্রাইজ, ঈগল পরিবহন, সোহাগ পরিবহন, সৌদিয়া পরিবহন, সাতক্ষীরা এক্সপ্রেস এবং শ্যামলী পরিবহন উল্লেখযোগ্য। বাসের টিকেটের জন্য বাসের মানভেদে ৮৫০ থেকে ১১০০ টাকা।
সাতক্ষীরা থেকে কালীগঞ্জগামী যেকোনো যানবাহনে নলতা শরীফ যেতে পারবেন তবে নলতা শরীফের অবস্থান সাতক্ষীরা-কালীগঞ্জ সড়কের পাশে নলতা বাস স্ট্যান্ডের কাছে তাই বাসে যাওয়াই উত্তম। কালীগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে নলতা শরীফের অবস্থান।
কোথায় থাকবেন
রাত্রি যাপনের জন্যসাতক্ষীরায় বেশকিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে এদের মধ্যে মোজাফ্ফর গার্ডেন, হোটেল সম্রাট,হোটেল সংগ্রাম, হোটেল সীমান্ত, হোটেল মোহনা এবং হোটেল উত্তরা-তে ভালো সার্ভিস পাবেন।
কোথায় খাবেন
সাতক্ষীরা জেলা কুল, আম,ওল, মাছ এবং সুন্দরবনের খাঁটি মধুর জন্য বিখ্যাত। এছাড়া সাতক্ষীরা ঘোষ ডেইরীর সন্দেশ খেয়ে দেখতে পারেন, সন্দেশের স্বাদ অনেক দিন মুখে লেগে থাকবে।
আরও যা যা দেখবেন
নলতা শরীফ ছাড়াও সাতক্ষীরায় ঘুরে দেখার মত বেশ কিছু সুন্দর স্থান রয়েছে। সময় নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন সুন্দরবন, জোড়া শিবমন্দির, মন্টু মিয়ার বাগান বাড়ী, দেবহাটার বনবিবির বটগাছ, মান্দারবাড়ীয়া সমুদ্র সৈকত, সোনাবাড়িয়া মঠবাড়ি মন্দির।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *