আশ্বিনার আমের জিআই স্বীকৃতি মিলছে না দাম
আশ্বিনার আমের জিআই স্বীকৃতি মিলছে না দাম
চাঁপাইনবাবগঞ্জের আশ্বিনা আম সম্প্রতি জিআই সনদ (ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের স্বীকৃতি) পেয়েছে। আশ্বিনা আম বিক্রি করে চলতি বছরই উৎপাদন খরচ উঠছে না চাষিদের। এতে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আম্রপালিসহ বিভিন্ন বারি জাতের আমের দাপটে দরপতন হয়েছে আশ্বিনার।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন আশ্বিনা আমবাগান ঘুরে দেখা যায়, এখনো থোকায় থোকায় ঝুলছে শত শত মণ আশ্বিনা আম। দাম না থাকায় আম নামিয়ে বিক্রি করছেন না ব্যবসায়ীরা। কারণ আম বিক্রি করে উৎপাদন খরচ উঠছে না চাষিদের। কানসাট দেশের সবচেয়ে বড় আম বাজারে গিয়ে দেখা যায়, চাষিরা সারি সারি ভ্যানে ডালিতে আশ্বিনা আম সাজিয়ে বসে আছেন তবে বাজার মন্দা। ৯০০-১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ আশ্বিনা আম। চাষিদের দাবি এতে উৎপাদন খরচই উঠছে না তাদের। ফুড ব্যাগিং করা আশ্বিনা জাতের দুই ভ্যান আম নিয়ে কানসাট বাজারে এসেছেন শফিকুল ইসলাম। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত দাম ক্রেতারা বলছেন না এতে চিন্তিত দেখা গেলো তাকে। তিনি বলেন, আমার বাগানে আশ্বিনা জাতের প্রায় ৩০০ মণ আম আছে। সেখান থেকে ২ ভ্যান আম পেড়ে বিক্রি করতে এসেছি কিন্তু ক্রেতা নেই। মণপ্রতি উৎপাদন খরচই আছে ১৩০০-১৪০০ টাকা। কিছু ক্রেতা দাম বলছেন ১ হাজার টাকা মণ। কিন্তু এ দামে আম বিক্রি করেলাভতো দূরের কথা, উৎপাদন খরচই উঠবে না। চলতি আমের মৌসুম ছিল চাষিদের জন্য সর্বোচ্চ খরচের বছর। খরার কারণে সেচও লেগেছে অনেক বেশি। একইসঙ্গে বেড়েছে সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের মজুরি। অথচ সীমাহীন খরচের এ মৌসুমে আমের কাঙ্ক্ষিত দাম পাচ্ছি না আমরা।
আব্বাস বাজার এলাকার আরও একজন আমচাষি বলেন, আম বিক্রি করে উৎপাদন খরচ তুলতে পারছি না। বারবার টাকা চাইছে কীটনাশকের দোকানদাররা কিন্তু টাকা কোথা থেকে দেবো দুশ্চিন্তায় রাতে ঘুম আসছে না। আম্রপালিসহ বিভিন্ন জাতের আম এখন পাওয়া যাচ্ছে। তাই আশ্বিনা আম কম বিক্রি হচ্ছে। আম্রপালিসহ বিভিন্ন জাতের আমের জন্যই আশ্বিনা আমের দরপতন হয়েছে।
ওমানে সংসদ সদস্য আটক পরে মুক্ত
শিবগঞ্জ ম্যাংগো প্রোডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে তিনি বলেন, কয়েকবছর আগেও আগস্ট মাসে আশ্বিনা ছাড়া অন্য কোনো আম থাকতো না। এজন্য আশ্বিনা আমের দাম পেতেন চাষিরা। তবে চলতি বছর আগস্ট মাসেও বারি-৪, আম্রপালি, গৌড়মতিসহ বিভিন্ন জাতের আম বাজারে পাওয়া যাচ্ছে এ আমগুলো অনেক বেশি মিষ্টি। এজন্যই দরপতন হয়েছে আশ্বিনা আমের।
শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রায় ৪০ শতাংশ আশ্বিনা আম উৎপাদন হয় এ আমগুলোর ৩০ শতাংশ ফ্রুড ব্যাগিং। কীটনাশক, ফ্রুড ব্যাগিং সহ বিভিন্ন কৃষিপণ্যের দাম বেড়েছে। এক হাজার ৫০০ টাকার নিচে আম বিক্রি করলে চাষিদের লোকসান হবে। এবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ৩৭ হাজার ৮৫৫ হেক্টর জমিতে আমচাষ হয়েছে। আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন।