তথ্য ও প্রযুক্তি

ওয়্যারলেস চার্জিং জনপ্রিয় হচ্ছে দিন দিন

ওয়্যারলেস চার্জিং জনপ্রিয় হচ্ছে দিন দিন

দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে ওয়্যারলেস চার্জিং। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ওয়্যারলেস চার্জিং সাপোর্টেড হ্যান্ডসেটের সংখ্যা। ওয়্যারলেস চার্জিং তুলনামূলক নতুন প্রযুক্তি মনে হলেও আসলে এর জন্ম মোবাইল ফোনেরও জন্মের আগে। আঠারো শতকের শুরুতে ফ্যারাডের আবেশপ্রক্রিয়ার উপর ভিত্তি করে প্রথম তারবিহীন বিদ্যুতের প্রবাহ করেন ১৮৯৪ সালে নিকোলা টেসলা। টেসলার এই সফলতা প্রায় ১০০ বছর লেগে যায় সাধারণ ভোক্তাদের কাছে পৌঁছাতে।
ওরাল-বি এর মতো কিছু প্রতিষ্ঠান তাদের টুথব্রাশে ওয়্যারলেস চার্জিং নিয়ে আসে নব্বইয়ের দশকে। মোবাইল ফোন বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক পণ্যে এই প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হতে সময় লেগেছে আরও এক যুগ। কিছু প্রতিষ্ঠান তাদের সেলুলার ডিভাইসে এই প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করে একুশ শতকের শুরুর দিকে।

২০১২ সালে নকিয়া লুমিয়া ৯২০ ও স্যামসাং এস ৩ বাজারে আসার পর মোবাইল ফোনে ওয়্যারলেস চার্জিং জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে। অ্যান্ড্রয়েড ফোনে এর ব্যাপক চাহিদা দেখে ২০১৭ সালে অ্যাপল তাদের আইফোন ৮-এ ওয়্যারলেস চার্জিং যুক্ত করে। ছোট-বড় প্রায় সব প্রতিষ্ঠান ২০১৭ সালে থেকে এই প্রযুক্তিকে চার্জিংয়ের ভবিষ্যৎ ধরে নিয়ে এর সংযোজন শুরু করে নিজেদের ডিভাইসে।
যেভাবে কাজ করে

ওয়্যারলেস চার্জিংয়ে ব্যবহার করা হয় ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ইন্ডাকশন নামের একটি বিশেষ ডিভাইস। এই ডিভাইসটি বায়ুতে বৈদ্যুতিক শক্তি ছেড়ে দেয়। অর্থাৎ ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ইন্ডাকশন চালু হলে চারদিকে চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি হয়। মোবাইল ফোনেও ১ টি তামার কয়েল রয়েছে, যা ওয়্যারলেস চার্জিং সাপোর্ট কর, চৌম্বক ক্ষেত্র মোবাইল ফোনের তামার কয়েলের সঙ্গে যুক্ত হয়। চৌম্বক ক্ষেত্র থেকে বৈদ্যুতিক শক্তি উৎপন্ন হয় এবং এটি ফোনের ব্যাটারি চার্জ করা শুরু করে।

ওয়্যারলেস ফোন চার্জিংয়ের সুবিধা:-
# চার্জিং বৈদ্যুতিক ত্রুটির ঝুঁকি কম কর্ড বা তার ছাড়া হয় বলে।

# একাধিক ডিভাইসের জন্য সমস্যা ছাড়া একই চার্জিং প্যাড ব্যবহার করা যায়।

# ইউএসবি চার্জার বহন করার প্রয়োজন নেই। চার্জিং ম্যাটের সঙ্গে যুক্ত ইউএসবি তারের প্রয়োজন।

# চার্জের সময় মোবাইল ফোন অতিরিক্ত গরম হবে না। মোবাইল ফোন সম্পূর্ণরূপে চার্জ হলে ওয়্যারলেস চার্জার   স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায় এবং প্রয়োজনে চার্জ বন্ধ হয়ে যায়। এই কৌশলকে ট্রিকল চার্জিং বলা হয়।

স্যাটেলাইট প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ

ওয়্যারলেস চার্জিংয়ের অসুবিধা:-
# ফোন চার্জ হতে সময় বেশি লাগে ওয়্যারলেস চার্জিংয়ে।

# চার্জিংয়ের সময় ফোনটি সরাসরি প্যাডের সঙ্গে রাখতে হয়, তাই এই সময় ফোন ব্যবহার করা যায় না।

# তারবিহীন চার্জিং প্যাডের দাম কেব্‌ল চার্জারের চেয়ে অনেক বেশি। একটি সুন্দর নতুন প্রযুক্তি হিসেবে, একটি ওয়্যারলেস চার্জিং প্যাড ক্রয় ব্যয়বহুল, বিশেষত যখন নতুন সেলুলার ফোনগুলোর বাক্সে একটি চার্জার পাওয়া যায়।

ওয়্যারলেস চার্জিং ফোনের ক্ষতি করে:-
ওয়্যারলেস চার্জারে ফাস্ট চার্জার থেকে অনেক ধীরগতিতে চার্জ হয়। বাজারে বিভিন্ন ধরনের কম দামের ওয়্যারলেস চার্জার রয়েছে। এমন কথা প্রায়ই শোনা যায় ওয়্যারলেস চার্জিংয়ে মোবাইলের ব্যাটারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, কিন্তু তার জন্য কয়েকটি দিকে খেয়াল রাখা জরুরি।

ওয়্যারলেস চার্জিং কেনার আগে মোবাইল ফোনের চার্জিং স্পিড এবং ওয়্যারলেস চার্জিংয়ের ওয়াট দেখে নেওয়া জরুরি। সেগুলো ব্যবহার করলে মোবাইল ফোনের ব্যাটারির ওপর প্রভাব পড়তে পারে। ফোনের ব্যাটারি সুরক্ষিত রাখতে চাইলে সব সময় ব্র্যান্ডেড এবং ভালো প্রতিষ্ঠানের ওয়্যারলেস চার্জিং ব্যবহার করতে হবে। সঠিক ভাবে ওয়্যারলেস চার্জিং ব্যবহার করলে ফোনের ব্যাটারির ওপরে বেশি প্রভাব পড়ে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *