মহাকাশে সাধারণ কলম দিয়ে লেখা যায় না কেন?
মহাকাশে সাধারণ কলম দিয়ে লেখা যায় না কেন?
সাধারণ কলম বা বলপেনে তরল ঘন-আঠালো কালি ব্যবহার করা হয়। কলম বা বলপেনে নিবের শেষ মাথায় থাকে ছোট্ট একটা ধাতব বল। এই ধাতব বল নিব থেকে বেরোতে পারেনা ও এক জায়গায় থেকে ঘুরতে পারে। কলম থেকে বলের কারণে কালি সরাসরি বেরিয়ে যেতে পারে না। এবং নিবের বলে এসে ধাক্কা খায়।
নিবের গায়ে মেখে যায় কালি এবং লেখার সময় বল কাগজের সঙ্গে ঘষা খেয়ে ঘুরতে থাকে। কালি মাখা দিকটা ঘুরে এসে কাগজে লেখা তৈরি হয়। নিবের বল প্রতিনিয়ত ঘুরছে বলে অনবরত কালিও মাখছে নিজের গায়ে এবং অনবরত লেখা হচ্ছে কাগজে।
লোহায় মরিচা পড়ে কেন?
কিন্তু ঝর্ণা কলমের নিবে এ রকম ঘূর্ণ্যমান বল থাকে না। কিন্তু অ্যাডজস্ট করা বল থাকে নিবের মাথায়।
কালি ছড়িয়ে পড়তে বা গড়িয়ে পড়তে বাধা দেয় নিবের রাবার প্যাড। এটা কিন্তু সব সময় ভেজা সপসপে অবস্থায় থাকে। তাই নিব ঘষলেই লেখা হয়।
আবার শুধু কালি আর কলম দিয়ে লেখা যায় না।
লেখার জন্য মহাকর্ষ বলের উপস্থিতি দরকার হয়। মহাকর্ষ বলের কারণে কলমের কালি নিচের দিকে চলে আসার প্রবণতা দেখায়। মহাকর্ষ বল যদি না থকে কলমের উপরের দিকের কালি নিচের দিকের কালির উপর চাপ প্রয়োগ করতে পারত না। এবং যেখানকার কালি সেখানেই থেকে যেত।
মহাকাশে বা মহাশূন্য স্টেশনে এমনটাই ঘটে। সেখানে মহাশূন্য স্টেশন এমনভাবে ঘোরে, পৃথিবীর মহাকর্ষ বলের প্রভাব এর ভেতরে থাকে না বললেই চলে। যার জন্য সেখানকার বিজ্ঞানীরা লেখালেখির জন্য চাইলেও সাধারণ কলম ব্যবহার করতে পারেন না।
মহাকাশে বিজ্ঞানীরা তাহলে লেখেন কিভাবে?
প্রথমে একটা সমাধান করেছিলেন মহাকাশে বিজ্ঞানীরা, কিন্তু সেটা ছিল ভুল। রুশ বিজ্ঞানীরা কলমের বদলে পেনসিল ব্যবহারের চেষ্টা করেছিলেন। পেনসিল দিয়ে সহজেই ঘষে কাগজে লেখা সম্ভব, মহাকর্ষ বল এখানে দরকার হয় না। কিন্তু সমস্যাটা ছিল অন্য জায়গায় পেনসিলের শিষ তৈরি হয় গ্রাফাইট দিয়ে। এবং লেখার সময় মহাশূন্য স্টেশনের ভেতর গ্রাফাইটের কণা ছড়িয়ে পড়ে।
নভোচারীদের নিঃশ্বাসের সঙ্গে শরীরে ঢুকে স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। আবার বিদ্যুৎ পরিবাহী গ্রাফাইট। তাই গ্রাফাইট কণা বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির ভেতর ঢুকে শর্ট সার্কিট তৈরি করে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে।
বা হাতে ঘড়ি পরা হয় কেন?
এ সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে ১৯৬৫ সালে, যুক্তরাষ্ট্রের ফিশার কম্পানি নভোচারীদের জন্য এক বিশেষ কলম তৈরি করে। যেহেতু ওখানে মহাকর্ষীয় চাপ পাওয়া যাবে না, তাই কলমের ভেতরে নাইট্রোজেন গ্যাসের সাহায্যে বিশেষ চাপের ব্যবস্থা করা হয়। এখনো সেই ধরনের কলম মহাকাশে ব্যবহার করা হয়।
সেই কলম তৈরি করতে ফিশার কম্পানি বিনিয়োগ করেছিল ১০ লাখ ডলার। এ কলম দিয়ে যে কোনো সমতলে বা কোণ থেকে লেখা সম্ভব। এবং অত্যন্ত নিম্ন তাপমাত্রায় যেমন কাজ করতে পারে, তেমনি ৩০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় কোনো ক্ষতি হয় না।
সূত্র:- লাইভ সায়েন্স।
Rights Watch
Thank U
Thank U
Thank U
Pingback: ইসিম নাকি ফিজিক্যাল সিম কোনটা ভালো - amaderkhabar