স্বাস্থ্য ও পুষ্টি

বন্ধ হবে চুল পড়া জবার জাদুতে

জবা ফুল খুবই কার্যকরি আমাদের চুলের যত্নে। সুন্দর ও আকর্ষণীয় এ ফুল কিন্তু চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে দারুণ কার্যকরী। চুল পড়া থেকে চুল ভেঙে যাওয়া সব ধরনের সমস্যার সমাধান রয়েছে এই ফুলে।

জবা ফুলে আছে ফসফরাস, ভিটামিন সি, রিবোফ্লাভিন’সহ বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। যা চুলের গোড়া মজবুত ও মসৃণ করে তুলতেও সাহায্য করে। একই সঙ্গে লোম কূপে জমা টক্সি দূর করে, রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এসব পুষ্টি।

চুল আরও নরম ও সিল্কি করে তোলে জবার পাতা ও ফুলের নির্যাস। চুল পড়া বন্ধ করতে ও টাক পড়া রোধ করতে সাহায্য করে জবা ফুল। ফ্ল্যাভোনয়েডস, অ্যামিনো অ্যাসিড, মিউকিলেজ ফাইবার ও অ্যান্টি অক্সিডেন্টে ভরপুর জবার পাতা ও ফুলের নির্যাস চুলকে পুষ্টি দেয় ও চুল লম্বা করে।

গবেষণায় দেখা গেছে, ফুল ও পাতা চুলের বৃদ্ধি, চুল ঘন করতে ও ভলিউম যোগ করতে সাহায্য করে। জবা পাতার নির্যাস চুল লম্বা করতে পারে। আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, জবা পাতার নির্যাসে ব্যাকটেরিয়ারোধী ক্ষমতা আছে, যা চুলের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে অবদান রাখে ও খুশকি প্রতিরোধে সহায়তা করে। চুল লম্বা ও ঘন করতে জবা ফুলের তেল ব্যবহার করুন। এই তেল দিয়ে নিয়মিত স্ক্যাল্প ম্যাসাজ করলে চুল লম্বা হয় ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।

কীভাবে তেল তৈরি করবেন:- জবা ফুলে তেল তৈরি করতে প্রথমে ৮/১০টি জবা ফুল ও পাতা নিয়ে ধুয়ে পেষ্ট নিন। তারপর ১ কাপ নারকেল তেল গরম করে তাতে পেস্ট মিশিয়ে নিন। এবার মিশ্রণটি ২/৩ মিনিট সেদ্ধ করুন ও তারপর পাত্রে ঢাকনা দিয়ে ঠান্ডা হওয়ার জন্য অপেক্ষা করুন। আপনার জবা ফুলের তেল প্রস্তুত হয়েগেল।
সমস্যার সমাধানে নিয়মিত জবা ফুলের নির্যাস ও পেঁয়াজের রস ব্যবহার করুন। এই হেয়ার মাস্ক ব্যবহারে চুলের সুপ্ত ফলিকল গুলো বৃদ্ধি পেতে সহায্য় করে। এই হেয়ার মাস্ক তৈরি করতে ৩/৪ চা চামচ জবা ফুলের রস ও সমান পরিমাণ তাজা পেঁয়াজের রসের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। চুল ভাগ করে করে সিঁথিতে অর্থাৎ চুলের গোড়ায় গোড়ায় এই হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করে চুলে ম্যাসাজ করুন। তারপর রেখে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।

জবা ফুলের উপকারীতা:-

# জবা ফুল প্রাকৃতিক আল্ট্রা-ইমোলিয়েন্ট হিসেবে কাজ করে, যা চুলে আর্দ্রতা আটকে রাখে ও চুলকে শুষ্ক ও ঝরঝরে হতে বাধা দেয়। জবা ফুল চুলের প্রাকৃতিক আর্দ্রতাও বজায় রাখে।

# চুলকে গোড়া থেকে শক্তিশালী করে তোলে জবা ফুল ও পাতা। জবা ফুল ও পাতার সক্রিয় উপাদান হলো ফ্ল্যাভোনয়েড ও অ্যামিনো অ্যাসিড, যা মাথার ত্বক ও চুলের গোড়াকে পুষ্ট করে। ফ্ল্যাভোনয়েডগুলো চুলের ফলিকলগুলোতে রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে সহায়ক।

# কেরাটিনের উপস্থিতি চুলের ডগা ভাঙাও রোধ করে। জবা ফুল ও পাতা থাকা অ্যামিনো অ্যাসিড চুলের ফলিকল কোষে কেরাটিন উৎপাদন বাড়ায় ও স্বাস্থ্যকর চুলের বৃদ্ধিতে অবদান রাখে।

# প্রচুর পরিমাণে মিউকিলেজ থাকে জবা ফুল ও পাতায়, যা প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে। জবা ফুল ও পাতা আপনার চুলকে সিল্কি ও মসৃণ করে তুলতে সাহায্য করে।

# অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য মাথার ত্বকে খুশকি সৃষ্টিকারী জীবাণু কমাতে ও এটি চুলের ফলিকল থেকে খুশকি সাহায্য করে জবা পাতা। চুলের পিএইচ ভারসাম্য বজায় রাখতে জবা পাতার নির্যাস নিয়মিত ব্যবহারে করুন।

# খুশকি ও চুলকানির সমস্যায় যারা ভোগেন তাদের জন্য কার্যকরী ওষুধ হতে পারে জবা ফুল। জবা ফুলে থাকা পুষ্টি উপাদান গ্রন্থিগুলোর মাধ্যমে অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ কমাতে সাহায্য করে।

# জবা ফুলে থাকা প্রাকৃতিক রঙ্গক, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন চুল পাকা রোধ করে। ধূসর চুল প্রাকৃতিকভাবে কালো করতে ব্যবহার করতে পারেন জবা ফুলের মাস্ক। এতে থাকা ভিটামিন ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট মেলানিন সংশ্লেষণকে প্রভাবিত করে, যা প্রাকৃতিক রং দেয় চুলকে।

# টাক পড়া প্রতিরোধেও কাজ করে জবা ফুল। কারেন্ট ড্রাগ ডিসকভারি টেকনোলজিসের একটি নিবন্ধ অনুসারে, জবা ফুলের নির্যাসের মতো ভেষজ ওষুধগুলোর কোনো ক্ষতিকারক বা পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া নেই ফলে চুলের পুনর্গঠনের এটি নিরাপদ।

লাল টকটকে জবা ফুলেই সবচেয়ে বেশি পুষ্টি রয়েছে। তাই চুলের যত্নে লাল জবা ব্যবহার করুন নিশ্চিন্তে।

 

ঠোঁট গোলাপি করার উপায়

6 thoughts on “বন্ধ হবে চুল পড়া জবার জাদুতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *