স্বাস্থ্য ও পুষ্টি

আচার খাওয়া শরীরের জন্য উপকারী কি?

আচার খাওয়া শরীরের জন্য উপকারী কি?
কেউ কেউ নিয়মিতই খাদ্যতালিকায় আচার রাখেন গবেষণা বলছে, আচার শরীরের জন্য উপকারী। আবার কিছু গবেষণা অনুযায়ী, প্রতিদিন আচার খেলে শরীরে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। আচারের জুড়ি নেই খাবারের স্বাদ বাড়াতে ও রুচি ফেরাতে। আচার অনেক রকমের হয়। যেমন- আমের আচার, লেবুর আচার, কুলের আচার, তেতুল , মরিচ, জলপাই আচার, আবার রসুন, মাংসের আচারও হয়। অনেকেই ভাবেন, প্রতিদিন আচার খাওয়া শরীরের জন্য উপকারী। এ কারণে

যেসব উপকারিতাও পাওয়া যায়-

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে: মরিচ, হলুদ, লবন ও অন্যান্য মসলার গুণে আচারে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট যুক্ত হয়। আচারে শুধু তেল বা ভিনেগার দেওয়া হয় না, নানা রকমের মসলাও দেওয়া হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত আচার খেলে ইমিউনিটি সিস্টেম বা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাও অনেকটা বেড়ে যাতে পারে।

হজমশক্তি বাড়ায়: সবজি বা ফলের আচার তৈরির ক্ষেত্রে তেল বা ভিনেগারের সঙ্গে বিক্রিয়া করে ল্যাকটিক, সাইট্রিক ও অ্যাসেটিক তৈরি করে। এই তিন অ্যাসিড শরীরের জন্য ভালো। এগুলো শরীরের মধ্যে উপকারী মাইক্রোবসদের আরও শক্তিশালী আর সক্রিয় করে তোলে। এই মাইক্রোবস অন্ত্রে কাজ করে, ফলে আচার খেলে হজমশক্তি বাড়ে, মেটাবলিজম ভালো হয় এবং কিছু ক্ষেত্রে কোলেস্টেরলের মাত্রাও নিয়ন্ত্রিত থাকে।

অনেক সমস্যা দেখা দেয়: সবজি বা ফল দিয়ে তৈরি আচারে ক্যালোরি অনেক কম থাকে। তাই আরও বেশি বেশি অন্যান্য খাবার খেতে ইচ্ছে করে। আবার আচার খুব দ্রুত খাবার হজম করে দেয় এবং ক্ষুধা বাড়িয়ে দেয়, তাই নিয়মিত আচার খেলে অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার একটা প্রবণতা শুরু হয়। কিন্তু কিছু গবেষণা বলছে, প্রতিদিন আচার খেলে শরীরে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই অস্বাস্থ্যকর খাবার অত্যন্ত সুস্বাদু হলেও এতে কোনও পুষ্টিগুণ থাকে না। এই আচার জাতীয় খাবার শরীরে প্রোটিন, ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বাড়তে থাকে। যার ফলে দেখা দিতে পাবে ওজন বৃদ্ধি, ডায়বেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ।

হতে পারে পেটের রোগ: মাত্রাতিরিক্ত হারে আচার খেলে তা পেটের রোগের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তাই সাবধান থাকা জরুরি, আচারে প্রচুর পরিমাণে মসলা থাকে। তাই অতিরিক্ত মসলাদার খাবার খেলে তা যেমন সহজে হজম হতে চায় না, ঠিক তেমনি আচারও শরীরে প্রবেশ করার পর হজম ক্ষমতাকে কমিয়ে দিতে পারে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই গ্যাস এবং বদহজমের মতো সমস্যা বাড়তে পারে।

শারীরিক ক্ষতি: আচার বানানোর সময় যে পদ্ধতিতে ফল এবং সবজি শুকিয়ে নেওয়া হয় তাতে এইসব প্রকৃতিক উপাদান বা উপস্থিতি বেশিরভাগ পুষ্টিকর উপাদান নষ্ট হয়ে যায়। অনেকের ধারণা ফল এবং অন্যান্য উপকারী উপাদান দিয়ে আচার বানানো হয় বলে এই মুখরোচক খাবারটি খেলে শরীরে পুষ্টির ঘাটতি দূর হয়। ফলে আচার খেলে শরীরে পুষ্টির ঘাটতি দূর হয় না বরং শরীরে অতিরিক্তি মাত্রায় তেল এবং লবণের প্রবেশ ঘটায় নানা ধরনের শারীরিক ক্ষতি ও আশঙ্কা তৈরি হয়।

বন্ধ হবে চুল পড়া জবার জাদুতে

ভারসাম্য নষ্ট হয় সোডিয়াম-পটাশিয়ামের: আচারে তেল এবং মসলার পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে লবণও ব্যবহার করা হয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই সোডিয়ামের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। এতে রক্তচাপ বাড়ে। আচার খেলে লবণ শরীরে প্রবেশ করতেই থাকে এতে শরীরে সোডিয়াম এবং পটাশিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট হয়।

আচারের প্রতি আকর্ষণ থাকলে বাড়িতে তৈরি আচার অল্প পরিমাণ খাওয়াই ভালো। বাজার থেকে কেনা আচারে অতিরিক্ত পরিমাণে লবণ, তেল ও রাসায়নিক প্রিজারভেটিভ থাকে যা মোটেও ভালো নয়।

3 thoughts on “আচার খাওয়া শরীরের জন্য উপকারী কি?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *