আল-কায়েদার হাতে জিম্মি সুফিউল আনাম দেশে ফিরলেন
আল-কায়েদার হাতে জিম্মি সুফিউল আনাম দেশে ফিরলেন
জাতিসংঘের কর্মকর্তা আলকায়েদার হাতে অপহৃত বাংলাদেশি লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব:) সুফিউল আনাম বলেছেন, অপহরণের পর তাঁকে কখনো পাহাড়ে আবার কখনো মরুভূমিতে নিয়ে রাখা হয়েছে। অপহরণকারীরা এই পুরো সময়টাতেই কালো কাপড়ে চোখ বেঁধে রেখেছিলেন।
গত বুধবার ৯ আগস্ট, দেশে ফেরার পর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব:) সুফিউল আনাম। দুবাই থেকে এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছান তিনি। জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) শীর্ষ কর্মকর্তারা বিমানবন্দরে তাঁকে গ্রহণ করেন।
ইয়েমেনে আল–কায়েদার হাতে ১৮ মাস আগে অপহৃত হন সুফিউল আনাম। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় এনএসআই–এর তৎপরতায় সুফিউল আনামকে মঙ্গলবার উদ্ধার করা হয়। সুফিউল আনাম উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান।
বুধবার দেশে ফিরে বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের কাছে সুফিউল আনাম বলেন, অপহরণের পর ১৮ মাসে ১৮ বার তার স্থান পরিবর্তন করা হয়। খাওয়া-দাওয়াতে সমস্যা করেনি, কোন শারীরিক নির্যাতনও করেনি। প্রতি মুহূর্তে মনে হয়েছে মেরে ফেলবে আমাকে, তবে ভাবতে পারিনি বেঁচে ফিরব। তিনি আরও বলেন, আমাকে উদ্ধারে সরকারের পক্ষ থেকে চেষ্টা করছে, তা আমি জানতাম না। একবার ভিডিও বার্তা দেওয়া হয়েছিল আমাকে দিয়ে। সেখানে বলতে বলা হয়, আমাকে উদ্ধারে যেন দাবি পূরণ করা হয়। এসব আমি জানতাম না দাবি যে ছিল ৩০ লাখ ডলার ।
আমি ভেবেছিলেন তাঁকে সবাই ভুলে গেছে। কাল অপহরণের ১ বছর ৬ মাস পূরণ হবে। পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে ফেরার সময় আমাকে অপহরণ করা হয়। প্রতিটি দিন ছিল মৃত্যুর ভয়, অবর্ণনীয় দিন কেটেছে। তিনি জানান তাঁকে সহ ৪জন সহযোগীসহ উদ্ধার করা হয়। বাকি চারজন ছিলেন ইয়েমেনি। প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে সুফিউল আনাম বলেন, এই দায়িত্বপালনের কথা ভুলব না। ভাষায় বর্ণনা করা যাবে না। সিনেমায় দেখা যায় এসব। এনএসআই–এর দেখা হওয়ার পর মনে হলো আমাকে ভোলেনি তারা। ভাগ্য ভালো নির্যাতন করেনি। জাতিসংঘে কাজ করি বলে টার্গেট করেছিল মনে হয়। অপহরণকারীরা ভিডিও করেছিলেন, তাঁদের দাবি দাওয়া নিয়ে। কিছু বলতে চাচ্ছি না নিরাপত্তার স্বার্থে।
ইতালি ভিসা আবেদন ফেব্রুয়ারি
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সুফিউল আনাম বলেন, প্রাক্তন সামরিক কর্মকর্তা আমি। দেশের প্রয়োজনে অবশ্যই চ্যালেঞ্জ নিব। পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে। এনএসআই–এর পরিচালক ইমরুল মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ছিল। আমরা ধৈর্য ধরে লেগেছিলাম। দীর্ঘ দিনের চেষ্টায় পর আল–কায়েদার হাত থেকে স্যারকে উদ্ধার করতে পেরেছি। এটা চ্যালেঞ্জিং ছিল, প্রধানমন্ত্রী আস্থা রেখেছিলেন দীর্ঘ প্রক্রিয়া ছিল। দেড় বছরের চেষ্টায় এই সফলতা। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে কীভাবে উদ্ধার করা হলো সে বিষয়ে কিছু বলতে চাননি ইমরুল মাহমুদ। তিনি জানান, কোনো টাকা–পয়সা দিতে হয়নি তাঁকে মুক্ত করতে। ৩০ লাখ মার্কিন ডলার চেয়েছিলেন অপহরণকারীরা।
বিমানবন্দরে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, এনএসআই এর অতিরিক্ত পরিচালক বদরুল হাসান চৌধুরি ও উপপরিচালক, বদরুল হাসান বিদ্যুৎ প্রমুখ।
Pingback: ঘরোয়া উপায়ে ব্যাকপেইন দূর - Amader Khabar
Pingback: দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী অসুস্থ - Amader Khabar