প্রবাসী

গ্রিসে মৌসুমি কর্মী হিসেবে যেভাবে যাবেন

গ্রিসে মৌসুমি কর্মী হিসেবে যেভাবে যাবেন

ইউরোপের অভিন্ন কোনো নীতি নেই মৌসুমি কর্মী নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিটি দেশের আছে নিজস্ব নীতিমালা। ইউরোপের দেশগুলোতে মূলত প্রয়োজন হয় সবচেয়ে বেশি কৃষিখাতেই মৌসুমি কর্মীর।

ফসল তোলা কিংবা ফসল প্রক্রিয়াজাত করার সময়টাতে এই ভিসা ইস্যু করা হয়। যেমন, ক্রিসমাসের সময় পোল্ট্রি খাতে মৌসুমি কর্মী নেওয়া হয়। মৌসুমি কর্মীদের জন্য বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে ভিসা ইস্যু করা হয়। তাদের সাধারণত অন্য কাজ করতে দেওয়া হয় না মৌসুমি কর্মী ভিসা নিয়ে যারা আসেন। কাজ শুরুর আগে আগে ইউরোপে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় এবং কাজ শেষে তাদের চলে যেতে হয়।

আপনার জানতে হবে যে বিষয়গুলো:- ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভিবাসন পোর্টাল অনুযায়ী মৌসুমি কর্মী ভিসায় গ্রিসে সর্বোচ্চ ৬ মাস কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়। গ্রিক কনস্যুলার কর্তৃপক্ষ চাকরির চুক্তিপত্র যাচাই করে এই ভিসা ইস্যু করে। যে নিয়োগকর্তা আপনাকে নিয়োগ দেবে, তার প্রতিষ্ঠানেই আপনাকে কাজ করতে হবে। এর কোনো ব্যত্যয় গ্রিস কর্তৃপক্ষ মানবে না। ফলে, যে প্রতিষ্ঠানে আপনার চাকরি হবে, সেই প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুযোগ মিলবে না।

কৃষি, মৎস্য ও পর্যটন শিল্পসহ বেশ কয়েকটি খাতে এই মৌসুমি কর্মী ভিসা ইস্যু করে গ্রিস। তবে, মৎস্যখাতে যারা কাজ করবেন, তাদের সর্বোচ্চ ১০ মাসের ভিসা দেওয়া হয়। মিশর, বাংলাদেশ ও আলবেনিয়ার মতো কয়েকটি দেশের সঙ্গে গ্রিসের দ্বিপাক্ষিক চুক্তি রয়েছে। ফলে মৌসুমি কর্মী ভিসার ক্ষেত্রেও বাড়তি সুবিধা পেয়ে থাকেন ওইসব দেশের নাগরিকেরা।

২০২২ সালের ঘোষণা অনুযায়ী প্রতি বছর ৪ হাজার বাংলাদেশিকে মৌসুমি ভিসা দেওয়ার কথা রয়েছে। অনথিভুক্ত বাংলাদেশি বর্তমানে গ্রিসে কর্মরত প্রায় ১৫ হাজার । এই প্রকল্পের অধীনে তারা সবাই নিয়মিত হওয়ার প্রচেষ্টায় রয়েছেন।
বাংলাদেশি কর্মীদের ৫ বছরের জন্য এই ভিসাটি দেওয়া হয়। তবে শর্ত থাকে, এই ভিসার অধীনে বছরে ৯ মাস কাজ করার সুযোগ পাবেন একজন কর্মী। বাকি ৩ মাস ঐ সব কর্মী আর গ্রিসে থাকতে পারবেন না। গ্রিস ছেড়ে নিজ দেশ বাংলাদেশ বা অন্য কোনো দেশে চলে যেতে হবে তাদের। এভাবে ৫ বছর পূর্ণ হওয়ার পরেও তাদের আবারো গ্রিস ছেড়ে যেতে হবে।

গ্রিক কর্তৃপক্ষ প্রতি দুই বছর কোটা পদ্ধতিতে ভিসার সংখ্যা ঘোষণা করে। বছরে বছরে এই সংখ্যা পরিবর্তিত হতে পারে। কোনো বছর পনের হাজার, কোনো বছর ৫ হাজার মৌসুমি কাজের ভিসা দেওয়া হয়। সেই সংখ্যা কখনো কখনো ৬০ হাজারও হতে পারে।

যা যা প্রয়োজন:- গ্রিসে থাকা যাবে না ভিসায় উল্লেখিত মেয়াদের অতিরিক্ত সময়। প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ে গ্রিস ছেড়ে যাওয়া উচিত। গ্রিস থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্য দেশগুলোতে যেতে হলে তৃতীয় দেশের নাগরিকদের ভিসার প্রয়োজন। যে তিন মাস আপনার কাজের অনুমতি নেই সেই সময়টায় নিজ দেশে ফিরে যাওয়া ভালো সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখা হয়।

নির্বাচন প্রশ্নে তিন শীর্ষ দলের বৈঠক

যেভাবে আবেদন:- আপনি যে দেশে আছেন ভিসার জন্য সেই দেশের গ্রিক কনস্যুলেট বা দূতাবাস থেকে আবেদন করতে হবে। গ্রিসে কাজ করার জন্য আপনাকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ক্যাটাগরিতে আবেদন করতে হবে। প্রশাসনিক ফি জমা দিতে হবে মৌসুমি কর্মী ভিসা পেতে। দ্বিপক্ষীয় চুক্তি থাকায় বাংলাদেশের জন্য প্রশাসনিক ফি ১২০ ইউরো, তবে অন্যদের ক্ষেত্রে এটি ১৫০ ইউরো। নিয়োগকর্তা আপনাকে যে নির্দিষ্ট কাজটির জন্য নিয়োগ দিয়েছেন, তার ঘোষণাপত্র জমা দিতে হবে। এই চুক্তিপত্রে আপনার কাজের ধরন এবং আপনার বেতন উল্লেখ থাকতে হবে৷ অদক্ষ কর্মীদের ক্ষেত্রে বেতনের পরিমাণ গ্রিসের সর্বনিম্ন বেতনের কম হতে পারবে না।

নিয়োগকর্তার সঙ্গে আপনার সই করা চুক্তি এবং সেই চুক্তি যে গ্রিসের লেবার ইন্সপেক্টরেট অনুমোদন করেছে, তার ২ টি কপি জমা দিতে হবে। আপনাকে অবশ্যই আবাসনের একটি ঘোষণা দেখাতে হবে, যেটা আপনার চুক্তির সময়কালে আপনাকে দেওয়া হবে। দুই মাসের বেতনের অনুপাতে সামাজিক নিরাপত্তা ফি জমা দিতে হবে। আপনার নিয়োগকর্তার অনুরোধ অনুমোদিত হলে, আপনাকে ভিসা দেওয়া হবে। যদি আপনি মৎস্য খাতে কাজ করেন, তাহলে নিয়োগকর্তাকে আপনার হয়ে ১৫ ইউরো জমা দিতে হবে। আপনি যেখানেকাজ করবেন, সেটি কোথায় নিবন্ধিত হয়েছে, সেটির অবস্থা এবং ধারণ ক্ষমতা উল্লেখ করে বন্দর কর্তৃপক্ষের একটি সনদ জমা দিতে হবে।

One thought on “গ্রিসে মৌসুমি কর্মী হিসেবে যেভাবে যাবেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *