পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচলের ১০ অক্টোবর
পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচলের ১০ অক্টোবর
ঢাকার কমলাপুর থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত আগামী ১০ অক্টোবর ৮২ কিলোমিটার এই রেলপথের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐ দিন ট্রেনে করে পদ্মা সেতু পাড়ি দেবেন।
গত রবিবার ০৩ সেপ্টেম্বর, রাতে রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন উদ্বোধনের তারিখসংক্রান্ত এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। রেলপথমন্ত্রী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের আগামী ১০ অক্টোবর পদ্মা সেতু রেল সংযুক্ত প্রকল্পের উদ্বোধনের জন্য সময় দিয়েছেন। আগামী ১০ অক্টোবর কমলাপুর থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চলাচলের আনুষ্ঠানিক সূচনা ঘটবে।
পদ্মা ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন হতে যাচ্ছে, উদ্বোধন কেন্দ্র করে সমাবেশের পরিকল্পনা করা হচ্ছে, এখনো জায়গা চূড়ান্ত করা হয়নি। যেহেতু আগেরবার পদ্মা নদীর ঐ পারে সমাবেশ হয়েছিল, তাই এবার এই পারে সমাবেশ হতে পারে। আগামী বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু হবে। গত ১৭ আগস্ট উদ্বোধন হতে যাওয়া অংশে রেললাইন বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। ২ দিন পর পুরো পথে ট্র্যাককার চালিয়ে পরীক্ষা করা হয়।
প্রকল্প সূত্র বলছে, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের অধীন এই ট্রেন চলাচল শুরু হবে। কারিগরি কাজ শেষ না হওয়ায় শুরুতে মাঝের কোনো স্টেশনে ট্রেন থাকার সুযোগ নেই। নতুন স্টেশন ভবন নির্মাণ ও পুরাতন স্টেশন ভবন পুনর্নির্মাণের কাজ প্রায় অর্ধেক বাকি। কাজ বাকি রেখেই চালু হতে যাচ্ছে ঢাকার কমলাপুর থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল।
প্রকল্পের অগ্রগতির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি কাজ হয়েছে মাওয়া-ভাঙ্গা অংশে ৯৬ শতাংশ। মাওয়া-ভাঙ্গা অংশে সেতু, কালভার্ট, বাঁধের মতো বড় অবকাঠামোর কাজ শেষ হয়ে গেছে। বাকি আছে স্টেশন ভবন ও নতুন স্টেশনে সিগন্যালিং ব্যবস্থা স্থাপনের কাজ। ঢাকা-মাওয়া অংশের কাজ হয়েছে ৭৯ শতাংশ। শুরুতে এই অংশই চালু হচ্ছে। যেখানে গড় কাজ হয়েছে ৮৭.৫ শতাংশ। ঢাকা থেকে মাওয়ার অংশের এখনো বড় ২টি সেতু ও ৭ টি কালভার্ট/আন্ডারপাস নির্মাণের কাজ বাকি আছে। এই অংশে চারটি স্টেশন রয়েছে। সবগুলোর কাজই চলমান। ৭৬ শতাংশ কাজ হয়েছে ভাঙ্গা-যশোর অংশে।
রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, উদ্বোধনের শুরুতে সকল স্টেশনের ট্রেনের বিরতি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। মেট্রো রেলের মতো আমরা ট্রেন চালানো শুরু করে দিতে চাই। মাঝে অনেক জায়গায় কাজ বাকি আছে। মাঝের স্টেশনের কাজগুলো চলমান থাকবে। সেগুলো শেষে সব স্টেশনে ট্রেন থামবে।
ঢাকার কমলাপুর থেকে মাগুরা হয়ে যশোর পর্যন্ত এই রেলপথে ২০টি স্টেশন থাকবে। প্রকল্পের অধীনে মূল পথ ১৬৯ কিলোমিটার। সেখানে লুপ ও সাইডিং ৪২.২২ কিলোমিটার এবং ৩ কিলোমিটার ডাবল লাইনসহ মোট ২১৫.২২ কিলোমিটার রেলওয়ে ট্র্যাক নির্মাণ করা হচ্ছে। রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গার দর্শনা, যশোরের বেনাপোল, খুলনা, রাজশাহীর ট্রেনও এই পথে চালানোর চিন্তা আছে। সে ক্ষেত্রে ভারতে যাওয়ার মৈত্রী ট্রেনও এ পথ ব্যবহার করবে ভবিষ্যতে।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার সুবিধাজনক সময় উদ্বোধনের তারিখ চূড়ান্ত করবেন। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে আমরা এখনো চিঠি পাইনি। আমরা সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুতি কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে সারসংক্ষেপ পাঠিয়েছিলাম।
নারীদের ওজন বিয়ের পর বাড়ে যে কারণে
রেলওয়ের কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল জেলা দিয়ে যশোরের সঙ্গে রেল নেটওয়ার্ক যুক্ত হবে। একই সঙ্গে ভাঙ্গা থেকে পাচুরিয়া-রাজবাড়ী সেকশনটি পদ্মা সেতু হয়ে সরাসরি ঢাকার সঙ্গে যুক্ত হবে। রেলের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চালালে রেলকে লোকসান গুনতে হবে। বর্তমানে খুলনা, দর্শনা, বেনাপোল ও রাজশাহীর সঙ্গে ঢাকার সরাসরি রেল যোগাযোগ রয়েছে। পদ্মা সেতু ব্যবহার করে এসব অঞ্চলে নতুন ট্রেন গেলে বিদ্যমান পথে মাঝের স্টেশনগুলোর যাত্রীরা রেলের সেবা থেকে বঞ্চিত হতে পারে। এমন একটি আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে। তাই এই রেলপথ ব্যবহার করে অন্তত রাজবাড়ীর সঙ্গে ঢাকাকে যুক্ত করা হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক বলেন, ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। সরকারের সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আমরা কাজ করে থাকি। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ হচ্ছে। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে ১৮ হাজার ২১০ কোটি ১১ লাখ টাকা দিচ্ছে সরকার। বাকি ২১ হাজার ৩৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছে চায়না এক্সিম ব্যাংক। ২৭ এপ্রিল ২০১৬ সালে প্রকল্পটি সরকারের ফার্স্ট র্ট্যাক প্রকল্পের তালিকাভুক্ত করা হয়।
Pingback: পাকিস্তানের পথে লিটন - Amader Khabar
Pingback: চাঁদের বুকে স্লিপিং মুডে ল্যান্ডার বিক্রম ও রোভার প্রজ্ঞান - Amader Khabar
Pingback: বিশ্বের সবচেয়ে দামি মরিচ কেজির ২৭ লাখ টাকা - Amader Khabar