জাতীয়

সুইটির ঢাবি ক্যাম্পাসে আর ফেরা হলো না…

কান্নাজড়িত কণ্ঠে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত সুইটির বাবা মাসুদ মিয়া। আল্লাহ আমাকে কেন বাঁচিয়ে রাখলেন। আমি মরে গিয়েও যদি আমার সুইটি বেঁচে থাকতো-তাহলে আমি শান্তি পেতাম।

মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার পাচ্চর এলাকায় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন মাসুদ মিয়া। দুর্ঘটনায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান তিনি। প্রিয় সন্তানের মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন তিনি। প্রিয় মেয়ের শোকে হাসপাতালে আহাজারি করছেন মাসুদ মিয়া।

পদ্মা সেতুর কাছে এক্সপ্রেসওয়ে থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে দুমড়েমুচড়ে যাওয়া ইমাদ পরিবহণের যাত্রীবাহী বাসের যাত্রী ছিলেন মাসুদ মিয়া ও তার মেয়ে সুরভী আলম সুইটি। রোববার সকালে গোপালগঞ্জ থেকে তিনি মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সুইটিকে সঙ্গে নিয়ে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী ইমাদ পরিবহণের বাসে উঠেন মাসুদ মিয়া। সুইটিকে ঢাবির ক্যাম্পাসে পৌঁছে দেওয়া ছিল তার উদ্দেশ্য। কিন্তু নিয়তির নিষ্ঠুর বিধানে তার সে উদ্দেশ্য অপূর্ণ থেকে গেল। মেয়েকে নিয়ে তার আর ঢাবি ক্যাম্পাসে যাওয়া হলো না। মেয়েকে উচ্চ শিক্ষিত করে মানুষের মতো মানুষ করাই ছিল তার একমাত্র ধ্যান জ্ঞান। গোপালগঞ্জ সদরের বাসিন্দা মাসুদ মিয়া। স্থানীয় একটি ওষুধ কোম্পানিতে নিরাপত্তা প্রহরীর কাজ করেন। ছোট চাকরি করলেও মেয়ের লেখাপড়ার প্রতি সবসময় যত্মবান ছিলেন তিনি।

কয়েকদিন আগে সুইটি বাড়িতে আসেন। বাড়িতে পড়ালেখায় মনোনিবেশ করতে পারছিলেন না। তাই প্রিয় ক্যাম্পাসে ফিরে যেতে ব্যাকুল ছিল তার মন। সেই ইচ্ছা তার অপূর্ণ থেকে গেল। নিয়তির কাছে হেরে গেলেন সুইটি। শহরের পাঁচুড়িয়া এলাকায় সুইটিদের বাড়িতে চলছে স্বজনদের আহাজারি। স্বজনদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে কেউ অগ্রহ দেখাননি। শোকে স্তব্ধ হয়ে গেছেন পরিবারের সবাই। এতবড় শোক কাটিয়ে উঠতে সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন সুইটিদের প্রতিবেশীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *