স্বাস্থ্য ও পুষ্টি

পুরুষের বন্ধ্যাত্ব যেসব খাবারে

পুরুষের বন্ধ্যাত্ব যেসব খাবারে

পরিসংখ্যান বলছে, বিগত ৪০ বছরে বিশ্বে পুরুষদের শুক্রাণুর পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে। বর্তমানে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা অনেকাংশে বেড়েছে নারীদের পাশাপাশি পুরুষের। স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় নিয়ম না মানাসহ বিভিন্ন কারণে এ সমস্যা বাড়ছে। যেমন- মদপান, ধূমপান, অতিরিক্ত ওজন, ব্যায়াম ও হাঁটাচলা না করা, খাবারে ভেজাল।

এই বাস্তবতা প্রত্যেককে, বিশেষ করে পুরুষদের ভয় পাওয়া উচিত। ঠিক কি কারণে এমনটা ঘটছে, তা নিয়ে নিশ্চিত নন বিজ্ঞানীরা। সাম্প্রতিক কিছু গবেষণা এই তথ্য জানা গেছে, দৈনন্দিন জীবনচর্চা ও খাদ্যাভ্যাস অনেকটাই বাড়িয়ে দিতে পারে বন্ধ্যাত্বের আশঙ্কা। কি কি খাবার খেলে বন্ধ্যাত্বের আশঙ্কা বেড়ে যেতে পারে দেখা যাক:-

বর্তমান গবেষণা বলছে, ফ্যাটিঅ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার ট্রান্স ফ্যাটি অ্যাসিড বা ক্ষতিকর ফ্যাটি অ্যাসিডকে এমনিতেই হৃদযন্ত্রের সমস্যার মূল কারণ হিসেবে দেখা হয়। ট্রান্স ফ্যাট ও আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ খাবার শুক্রাণু উৎপাদনের প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে পারে। এই ধরনের পদার্থ শুক্রাণুর সমস্যার জন্যেও দায়ী। অণ্ডকোষে জমা হতে পারে পলি-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটিঅ্যাসিড। বীর্যে এই ধরনের স্নেহ পদার্থের উপস্থিতি শুক্রাণুর স্বাস্থ্যহানি ঘটাতে পারে। শুক্রাণুর ঘনত্বও কমাতে পারে।

প্রসেসড মিট:- এই প্রক্রিয়াজাত মাংস স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এমন কি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত এই ধরনের মাংস খাওয়ার কারণে স্পার্মের সংখ্যা কমে যাতে পারে এবং স্পার্ম ঠিকমতো চলাফেরা করতেও পারে না। বিশেষজ্ঞদের মতে প্রক্রিয়াজাত মাংস শুক্রাণুর পরিমাণ হ্রাসের অন্যতম প্রধান কারণ। বেকন, সালামি থেকে হটডগ, বার্গার যে যে খাদ্যে এই ধরনের মাংস ব্যবহৃত হয় তাদের উপর করা একটি সমীক্ষা স্পষ্ট এই তথ্য জানা গেছে।

অতিরিক্ত স্নেহজাতীয়:- গবাদি পশুর দুধে স্নেহজাতীয় পদার্থ থাকে অনেক বেশি। বর্তমানে গবাদি পশুদের স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ দেওয়া হয়ে থাকে উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য এর প্রভাব পরে দুধেও। আঠারো থেকে ২২ বছর বয়সী যুবকদের উপর সম্প্রতি করা একটি সমীক্ষা দেখাছে, এই ধরনের দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্য খেলে শুক্রাণুর চলাচল, গতি ও আকৃতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

ধূমপান ও মদপান:- মাঝে মধ্যে মদপান করা খুব বেশি অসুবিধা না হলেও নিয়মিত বা অতিরিক্ত মদপান বিকৃতি ঘটাতে পারে শুক্রাণুর গঠনগততে। একাধিক গবেষণা জানাযায় গাজা ও সিগারেট শুক্রাণুর সমস্যা ডেকে আনতে পারে। এজন্য মদের মতো বিষাক্ত পানীয় নিয়মিত মুখে তোলার অভ্যাস থাকলে এবার ছাড়তে হবে, নইলে বাবা হওয়ার ইচ্ছে কোন দিনও পূরণ হবে না। তাই যেন তেন প্রকারেণ মদ্যপানে অভ্যাস বাদ দিন এতে আপনার সুস্থ থাকার পথ প্রশস্থ হবে। কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত মদ্যপান করলে স্পার্ম কাউন্ট কমে যাওয়া এবং ঘনিষ্ঠতায় অনীহাসহ একাধিক সমস্যার ফাঁদে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে।

খাওয়ার পর হাঁটার পরামর্শ চিকিৎসকদের

সয়া পণ্য:- ফাইটোয়েস্ট্রোজেন রয়েছে ইস্ট্রোজেনের মতো যৌগ যা উদ্ভিদ থেকে আসে সয়া পণ্যগুলিতে। ৯৯ জন পুরুষের এক সমীক্ষা থেকে বোস্টনের একটি ফেরটিলিটি ক্লিনিক সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, শুক্রাণুর ঘনত্ব হ্রাস করতে পারে অতিরিক্ত সয়া গ্রহণ।

অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ:- সবচেয়ে ভয়ের ব্যাপার হল, অধিকাংশ খাদ্যেই এই ধরনের রাসায়নিক মিশে থাকে যা এড়িয়ে যাওয়া কঠিন। শুধু খাদ্য নয়, বর্তমানে উৎপাদন বৃদ্ধি ও খাদ্য সংরক্ষণের জন্য যে ধরনের রাসায়নিক ব্যবহৃত হয় সেগুলিও শুক্রাণুর সমস্যার জন্য মারাত্মক ভাবে দায়ী। গবেষণা বলছে, সয়াতে থাকা ফাইটোস্ট্রোজেনগুলির মতো, জেনোস্ট্রোজেন (যা এই ধরনের রাসায়নিকে থাকে) শুক্রাণুর ঘনত্বকে ধ্বংস করতে পারে। সবজি ও ফলে যে কীটনাশক ব্যবহৃত হয় বা প্রসেসড ফুডে এ ধরনের রাসায়নিক ব্যবহৃত হয়ে শুক্রাণুর সমস্যার জন্য দায়ী থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *