ভূমিকম্প থেকে সুরক্ষিত থাকার তথ্য
ভূমিকম্প হতে পারে যখন-তখন দুর্ঘটনা রোজ ঘটে না। জানালা; বারান্দা বা ছাদ থেকে লাফ দেবেন না, এতে মৃত্যুও হতে পারে, বয়স্ক, অসুস্থ ব্যক্তি বা পোষা প্রাণী ফেলে যাবেন না। কাঠের খাট, টেবিল বা বেঞ্চের নিচে থাকতে পারেন ও সুযোগ হলে সিঁড়িকোঠায়ও এভাবে আশ্রয় নিতে পারেন।
ভূমিকম্প থেকে সুরক্ষিত থাকার তথ্য
ভূমিকম্প হতে পারে যখন-তখন দুর্ঘটনা রোজ ঘটে না। তবে স্বাভাবিক সময়েই প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হয় সেই বিপদের জন্য। ক্ষয়ক্ষতি কমাতে স্বাভাবিক সময়ে অবশ্যই এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে রাখতে হবে। কখন হবে ভূমিকম্প; আগে থেকে তা জানার সুযোগ নেই, তাই প্রস্তুত থাকতে হবে সব সময়ের জন্য।
ভূমিকম্প হলে কী করতে হবে, মাঝেমধ্যে তার মহড়াও করা উচিত। কীভাবে বেরোতে হবে, বেরোনোর সুযোগ না থাকলে কোথায় কীভাবে অবস্থান নিতে হবে, সবকিছুই অনুশীলন করতে হবে। আবার ভূমিকম্পের সময় অবশ্যই মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে।
ভূমিকম্পের সময়:-
যখন টের পেলেন ভূমিকম্প হচ্ছে, তখন আপনার অবস্থান যদি নিচতলা বা দোতলায় হয়, আপনি সেখান থেকে ১০/১৫ সেকেন্ডের মধ্যে বেরিয়ে যেতে পারবেন, তাহলে মাথা বাঁচিয়ে বেরিয়ে পড়ুন। এবং দ্রুত আশপাশের কোনো ফাঁকা জায়গায় অবস্থান নিন; তবে আপনি যদি বহুতল ভবনে থাকেন, যেখান থেকে বেরিয়ে ফাঁকা জায়গায় পৌঁছতে সময় লাগবে; তাহলে ভবনের ভেতরেই থাকুন, ভবনের বিম বা কলামের সংযোগস্থল তুলনামূলক নিরাপদ জায়গা। মাথায় বালিশ বা ব্যাগ চেপে কিংবা দুহাতে মাথা ঢেকে, এ রকম জায়গায় উপুড় হয়ে বসে থাকতে হবে কম্পন থাকা পর্যন্ত। তাছাড়া কাঠের খাট, টেবিল বা বেঞ্চের নিচে থাকতে পারেন ও সুযোগ হলে সিঁড়িকোঠায়ও এভাবে আশ্রয় নিতে পারেন।
আরও পড়ুন: গরু বা ষাঁড় লাল রঙ দেখতে অক্ষম
যা করবেন না:-
# জানালা; বারান্দা বা ছাদ থেকে লাফ দেবেন না, এতে মৃত্যুও হতে পারে।
# কাচের টেবিল, শোকেসে বা স্লাইডিং ডোর কাছে থাকবেন না।
# ঝুলন্ত কোন বস্তুর নিচে থাকবেন না। কার্নিশ বা আলমারির উপর ভারী বস্তু থাকতে পারে। এগুলোর কাছে দাঁড়াবেন না।
# লিফট ব্যবহার করবেন না।
# বয়স্ক, অসুস্থ ব্যক্তি বা পোষা প্রাণী ফেলে যাবেন না।
ভূমিকম্প থেমে গেলে:-
প্রথম কম্পন থেমে যাওয়ার পর সবারই খোলা জায়গায় গিয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করা উচিত কারণ বড় ধরনের আফটার শক’ এর ঝুঁকি থাকে। রেডিও, মুঠোফোনের বা ইন্টারনেটে সংবাদ জানতে চেষ্টা করুন কোনো নির্দেশনা রয়েছে কি না বা কখন ঘরে ফেরা নিরাপদ। যদি ভবনে চিড় বা ফাটল দেখা দেয় কিংবা অন্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিন।
পূর্বপ্রস্তুতি:-
অনেকে মিলে ফায়ার সার্ভিস থেকে ভূমিকম্প বিষয়ক প্রশিক্ষণ নিয়ে রাখুন। এবং বাড়ির সবার সঙ্গে সেই প্রশিক্ষণের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিন। বাসায় বা প্রতিষ্ঠানের দুর্ঘটনাকবলিত হয়ে আটকা পড়লে ৭২ ঘণ্টা চলার মতো শুকনা খাবার রাখুন সুবিধাজনক স্থানে, উদ্ধারকারী দলকে সংকেত দেওয়ার জন্য বাঁশি এবং লাল কাপড় রাখুন। জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯ নাম্বার বা ফায়ার সার্ভিসের হটলাইন নাম্বার ১৬১৬৩ সব সময় খেয়াল রাখুন।
অগ্নিনিরাপত্তা বিষয়ক প্রশিক্ষণও জরুরি। গ্যাসের লাইন তো শহরজুড়ে ছড়িয়ে আছে মাটির নিচ দিয়েই, ভূমিকম্পে অগ্নিদুর্ঘটনার ঝুঁকিও থাকে। নিজের বাড়ি ও প্রতিষ্ঠানের গ্যাস এবং বিদ্যুৎ সংযোগ ঠিকঠাক আছে কি না, বিদ্যুৎ-ক্ষমতার অতিরিক্ত ব্যবহার হচ্ছে কি না, এসব বিষয়ে খেয়াল রাখুন। জাতীয় ভবন নির্মাণ বিধিমালা মেনে ভবন নির্মাণ করুন, ফায়ার সার্ভিস থেকে অনাপত্তিপত্র নিন ও নিয়মমাফিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখুন।