নৌকা জাদুঘর নির্মাণ হচ্ছে চট্টগ্রামে
চট্টগ্রামের সাম্পান (বড়), সাম্পান (ছোট), শুলুক, রাজশাহীর পানসি, জোড়া নৌকা, কক্সবাজারের চাঁদ নৌকা, ফিশিং ট্রলার, কিশোরগঞ্জের গয়না, গাইবান্ধার ফেটি, ফরিদপুরের বিক, রংপুরের বাশের ভেলা, সাভারের ডিংগি,ময়মনসিংহের ময়ূরপংখী, চাঁদপুরের ঘাসি, পাবনার মালাও তালের ডোংগা। থ্রি-ডি থিয়েটার থাকবে সেটি সমুদ্রগামী নাবিকগণ ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে কী কী ধরণের অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি হয় তা তুলে ধরা হবে।
নৌকা জাদুঘর নির্মাণ হচ্ছে চট্টগ্রামে
শীঘ্রই জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে হাজার বছরের নৌ-ঐতিহ্য সমৃদ্ধ ‘চট্টগ্রাম নৌকা জাদুঘর’ এর নির্মাণ কাজ শুরু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের ২৮ অক্টোবর জাদুঘরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।
জাদুঘরটিতে কেবলমাত্র নৌকাই নয় বরং নৌকার দাঁড়, গুণ, পাল ইত্যাদিও রাখা হবে সমগ্র বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ১৭টি নৌকা সংগ্রহ বা রেপ্লিকা তৈরি করা হয়েছে। একটি থ্রি-ডি থিয়েটার থাকবে সেটি সমুদ্রগামী নাবিকগণ ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে কী কী ধরণের অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি হয় তা তুলে ধরা হবে।
জাদুঘরে যেসব নৌকা থাকবে সেগুলো হলো- চট্টগ্রামের সাম্পান (বড়), সাম্পান (ছোট), শুলুক, রাজশাহীর পানসি, জোড়া নৌকা, কক্সবাজারের চাঁদ নৌকা, ফিশিং ট্রলার, কিশোরগঞ্জের গয়না, গাইবান্ধার ফেটি, ফরিদপুরের বিক, রংপুরের বাশের ভেলা, সাভারের ডিংগি,ময়মনসিংহের ময়ূরপংখী, চাঁদপুরের ঘাসি, পাবনার মালাও তালের ডোংগা।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলবে বাসায়: ডা: জাহিদ
এর বাইরে বিভিন্ন অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী আরো নৌকা থাকতে পারে সেগুলোও সংগ্রহের কাজ চলছে। এসব নৌকাগুলোর বাইরে যদি আরও নৌকা থাকলে সেগুলোর ছবি ও সন্ধান চট্টগ্রাম প্রশাসনকে দিতে বলা হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষে বলা হয়েছে, শুধু চট্টগ্রাম নয় বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নৌকা, কোথাও পানশি কোথাও ডিঙ্গি, কোথাও বজরা নৌকা রয়েছে, কোথাও ময়ূরপঙ্খী, কোথাও বিগ, কোথাও আলিয়ার ডাঙ্গা ও কোথাও বাঁশের ভেলা রয়েছে। দেশের একেকটি নদী বা অঞ্চলের একেক ধরনের নৌকা, এবং সেই নৌকার যে ইতিহাস তা আমরা আমাদের নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার জন্য এই জাদুঘরটি করতে যাচ্ছি।
জেলা প্রশাসক বলেন, কিছুদিনের মধ্যে আমরা আমাদের নৌকা জাদুঘরের কাজ শুরু করতে যাচ্ছি, কাজ শুরু করতে তিন থেকে ৬ মাস পর্যন্ত আগতে পারে।
নৌকা জাদুঘরে শুধুমাত্র নৌকাগুলোর প্রদর্শনী থাকবে সেটি নয় নৌকার সঙ্গে পাল, দাড় ও বৈঠা, পাশাপাশি আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে থ্রি-ডি এফেক্ট দিয়ে সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে জেলেরা কী ধরনের সমস্যায় পড়ে থাকে বা অনেক সময় ঘূর্ণিঝড় হয়ে থাকে টর্নেডো হয়ে দর্শনের জন্য সেই চিত্রও ফুটিয়ে তোলার। আমাদের দর্শনার্থীরা বুঝতে পারেন রিয়েল একটি অনুভূতি। আমাদের আশা সে কাজটি আমরা কিছুদিনের মধ্যে করতে পারব।
ফৌজদারহাট যে ডিসি পার্ক; হয়েছে তার পাশেই নৌকা জাদুঘরের জন্য স্থান নির্বাচন করা হয়েছে এবং এর পাশেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ এবং জাদুঘরও হবে। আমরা ৩ টি ধাপে নৌকা জাদুঘর বাস্তবায়ন স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা, মধ্যমিয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার আলোকে করতে চাই।
স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা যেটি, তার আওতায় আমরা ইতিমধ্যে নৌকাগুলো তৈরি করে নিয়ে আসছি, আগামীতে আরও কিছু নৌকা আসবে প্রায় শতাধিক নৌকা যেন আমরা আগামী ৩ থেকে ছয় মাসের মধ্যে মিউজিয়ামটিতে স্থাপন করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।
আরও পড়ুন: ইউরোপে কাজের সুযোগ
জেলা প্রশাসক নৌকা জাদুঘরের অর্থায়নের বিষয়ে বলেন, এখন পর্যন্ত আমাদের যে ডিসি পার্ক, ফুল উৎসব বা নৌকা জাদুঘরের আমরা যে কাজগুলো করেছি সেটা চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সীমিত অর্থের মাধ্যমে করেছি। জেলা প্রশাসক আরও বলেন আমরা আনন্দিত যে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এই ব্যাপারে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় আমাদের দুটো প্রজেক্ট একটি অনুমোদনও দিয়েছে সেটা কিছুদিনের মধ্যে অর্থ ছাড় হবে, এবং অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে অন্যটি। নৌকা জাদুঘরের কাজ শুরু হবে যে প্রজেক্ট অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে সেটা অনুমোদিত হয়ে গেলেই।
ফৌজদারহাটে সাগর পাড় থেকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়ে সেখানে ১২৭ টি ফুলের লক্ষাধিক গাছ লাগিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে ডিসি পার্ক। যেখানে কিছুদিন আগেও মাদকের হাট বসতো এখন সেখানে ফুলের মেলা। প্রতিবছরই ডিসি পার্কে হচ্ছে ফুল উৎসব এবং উৎসবে শামিল হচ্ছে সব বয়সী মানুষ।