স্বামীকে হত্যার পর পুলিশ ডাকলেন নিজেই…
ঝালকাঠির রাজাপুরে স্বামীকে ঘুমন্ত অবস্থায় হাত-পা-মুখ বেঁধে গলা কেটে হত্যার পর ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে পুলিশের কাছে আত্মমর্পণ করেছেন স্ত্রী।
গত রোববার রাত দেড়টার দিকে উপজেলার গালুয়া ইউনিয়নের পুটিয়াখালী সোনালি মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত স্বামী মো. রবিউল আউয়াল তালুকদার (৪১) ওই এলাকার মৃত আব্দুর রহমান তালুকদারের ছেলে। রবিউলের স্ত্রীর নাম সাফিয়া আক্তার। তিনি শরীয়তপুর জেলার নৈলা থানার মাঝিরহাট ইউনিয়নের নসাশন গ্রামের মৃত নজরুল ইসলামের মেয়ে।
পুলিশ জানায়, ৯৯৯-এ ফোন করে ঘটনাটি পুলিশকে অবহিত করেন। পুলিশ রাত ৩টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধারসহ সাফিয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পারিবারিক কলহের কারণে রবিউল ও তার স্ত্রী সাফিয়ার মধ্যে কিছু দিন ধরে সম্পর্কের অবনতি হয়। এর জেরে রোববার রাতে সাফিয়া খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাওয়ান রবিউলকে। রাত দেড়টার দিকে হাত-পা ও মুখ বেঁধে ধারালো ছুরি দিয়ে বিছানায় ঘুমের মধ্যে রবিউলকে গলা কেটে হত্যা করেন সাফিয়া। সাফিয়া হত্যার দায় স্বীকার করে জানান, সাফিয়া তার দুই সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে স্বামীকে হত্যা করেছে। তার স্বামী আড়াই মাস আগে ২য় বিয়ে করে জমি ওই স্ত্রীর নামে লিখে দিয়েছে।
স্বজন ও স্থানীয়রা জানান যে, ২০০৫ সালে নিহতের রবিউল ও সাফিয়া প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে ঢাকায় গিয়ে বিয়ে করে। তাদের দুটি ছেলেসন্তান রয়েছে। রবিউল ইজিবাইক চালিয়ে ছেলেদের লেখাপড়া ও সংসার চালাতো। বর্তমানে রবিউল দ্বিতীয় বিয়ে করেছে বলে সাফিয়া সন্দেহ করে আসছিলেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কলহ লেগেই থাকত। ঘটনার দিন রোববার সন্ধ্যা থেকেই সাফিয়া তার স্বামীর প্রতি খুব ক্ষিপ্ত ছিল এবং বাড়ির সামনে স্বামীর জন্য দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে করতে হাতে থাকা দাও দিয়ে রাস্তার পাশের চারটি কলাগাছও কেটে ফেলে। তাদের এক ছেলে রাফিন (১৬) নবম শ্রেণিতে পড়ে, আর ছোট ছেলে সাকিব (১২) ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে।
রাজাপুর থানার ওসি পুলক চন্দ্র রায় বলেন, রাতেই সাফিয়াকে আটক করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে সকালে ময়নাতদন্তে ঝালকাঠি মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।