থানায় আটকে নির্যাতন, দুই পুলিশের নামে মামলা…
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর থানায় আবদুল আহম্মদ ওরফে রুবেল নামে এক যুবককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ দেন ভুক্তভোগীর মা আমেনা বেগম।
রোববার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতে অভিযোগ দেন ভুক্তভোগীর মা আমেনা বেগম। মামলাটি আদেশের জন্য রেখেছেন জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার। আবদুল আহম্মদ সোনারামপুর ইউনিয়নের চরশিবপুর গ্রামের লিল মিয়ার ছেলে।
অভিযুক্তরা হলেন– বাঞ্ছারামপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তরুণ কান্তি দে, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আল আমিন মানিক ও উপজেলার মধ্যপাড়ার রবি উল্লাহ। তাদের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনে-২০১৩ মামলাটি করা হয়। জানা গেছে, মামলর তিন নম্বর আসামি রবি উল্লাহর সঙ্গে আবদুল আহম্মদের পরিবারের দীর্ঘ দিনের বিরোধ। রবির বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও করেছেন তারা যা চলমান। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বাদীর পরিবারের ক্ষতি করার ফন্দি আটেন রবি উল্লাহ। এক পর্যায়ে গত ১৪ মার্চ রবির প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় এএসআই আল আমিন সাদা পোশাকে চার পুলিশ সদস্যকে নিয়ে আবদুল আহাম্মদকে গ্রেপ্তার করেন। ঘটনাস্থলে তাকে শারীরিক নির্যাতন করেন তারা। তাকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে থানায় আটকে রাখা হয়। পরে রবির কথা মতো পুলিশ পরিদর্শক তরুণ কান্তি দে ও এএসআই আল আমিন মানিক দফায় দফায় কাঠের রোল ও লাঠি দিয়ে আবদুল আহাম্মদকে মারধর করেন। এতে তার পুরো শরীরে জখম হয়। নির্যাতন অব্যাহত রাখলে সংবাদ সম্মেলনের প্রস্তুতি নেন ভুক্তভোগীর মা। বিষয়টি জেনে দুই পুলিশ সদস্য তড়িঘড়ি করে ১৬ মার্চ দুপুর ২টার দিকে আবদুল আহাম্মদকে একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠান। আদালতের পুলিশ সদস্যরা শরীরে জখম দেখে আবদুল আহাম্মদকে গ্রহণ না করে চিকিৎসার পরামর্শ দেন। তখন আদালতে যাওয়া কয়েকজন পুলিশ কনস্টেবল ভুক্তভোগীকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। পরে বিকেল ৩টার দিকে তাকে ফের আদালতে নেওয়া হয়। আদালত তাকে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আমেনা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে ১৪ মার্চ গ্রেপ্তার করে ১৬ মার্চ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। ২৪ ঘণ্টার অধিক সময় নিজেদের হেফাজতে রেখে আমার ছেলেকে নির্যাতন করেছে পুলিশ। আমি এই মামলায় জুডিসিয়াল তদন্তের দাবি জানাই।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মাসুদুর রহমান জানান, দুই পুলিশ সদস্যসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। আদালত মামলাটি আদেশ দেওয়ার জন্য রেখেছন। আগামী সোমবার আদেশ দিতে পারেন।
একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোনকল রিসিভ না করায় বাঞ্ছারামপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তরুণ কান্তি দের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম জানান, থানায় কোনো নির্যাতন করা হয়নি। এসব মিথ্যা কথা। অভিযোগের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।