বিদ্যুৎ চুরি মহোৎসব হাওরের হাউজবোটে

বিখ্যাত হাওর বাওড়েরের জেলা সুনামগঞ্জ। কিছু দিন আগেও বর্ষা মৌসুমে জেলার তাহিরপুর উপজেলা থেকে ছোট ছোট নৌকায় করে পর্যটকরা টাঙ্গুয়ার হাওর, নীলাদ্রি, শহীদ সিরাজ লেকসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটে ঘুরতে বেড়াত। কালের বিবর্তনে হারিয়ে সেইসব ছোট নৌকা। হাওরের পর্যটন এলাকাগুলো এখন বড় বড় হাউজবোটের দখলে ।

দাপটের সঙ্গে হাওরের চারদিকে ঘুরে বেড়াচ্ছে এসব বোট। এর ফলে দিন দিন নষ্ট হচ্ছে হাওরের সৌন্দর্য, বিনিষ্ট হচ্ছে রূপবৈচিত্র। এইসব বড় বড় এসব হাউজবোটগুলো বিদ্যুৎ বিভাগের চোখ ফাঁকি দিয়ে চুরি করে বিভিন্ন দোকান থেকে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ লাইন টানছে।

সুনামগঞ্জ পৌর শহরের সুরমা নদীর পাড় সাহেববাড়ি ঘাট এলাকার ৫০ থেকে ৬০টি বিভিন্ন ধরনের হাউজবোট রয়েছে। এই হাউজবোটগুলো পর্যটকদের কাছ থেকে ২ দিনের জন্য এক লাখ ২০ হাজার টাকা থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত প্যাকেজে নিয়ে থাকে। নদীর পাশে সড়কের ওপারে গড়ে ওঠা দোকানপাট থেকে বিদ্যুতের লাইন টেনে এই হাউজবোটের ভেতরে থাকা লাইট, ফ্যান, চার্জার লাইট, আইপিএসসহ বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি চার্জ দেওয়া হয়। শুধু সাহেববাড়ি ঘাট নয়, বৈঠাখালী ঘাট, শহরের লঞ্চঘাট, ওয়েজখালীসহ প্রায় শতাধিকের ওপরে হাউজবোটগুলোতে এভাবেই অবৈধ লাইন টেনে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে। দিন দুপুরে অবৈধভাবে লাইন টেনে নৌকাগুলোতে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হলেও সুনামগঞ্জ বিদ্যুৎ বিভাগ নীরব ভূমিকাই পালন করছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের ওপাশের দোকান থেকে লম্বা তারে লাইন টেনে মাটির নিচে বোর্ড বসিয়ে সেখান থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ দিচ্ছে হাউজবোটগুলোতে। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা ব্যবহার করা হচ্ছে চোরাই এই বিদ্যুৎ। সাহেববাড়ি ঘাট এলাকার একাদিক বাসিন্দা বলেন, দেশে যখন বিদ্যুৎ সংকট তখন এসব হাউজবোট অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন কেউ যাতে অহেতুক বিদ্যুৎ অপচয় না করে।

ওজন ও অ্যাসিডিটি কমায় জোয়ান

অথচ এখানকার হাউজবোটগুলো ইচ্ছামতো অবৈধভাবে লাইন টেনে বিদ্যুৎ অপচয় করছে। এদেরকে আইনের আওতায় আনা জরুরি। এটা দুঃখজনক, বিদ্যুৎ বিভাগের এদিকে নজর দেওয়া উচিৎ। সুনামগঞ্জ পৌর শহরের সাহেববাড়ি ঘাটে থাকা হাউজবোটের ম্যানেজার ও কর্মচারীদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তারা কোনো উত্তর দেবেন না বলে সেখান থেকে চলে যান।

সুনামগঞ্জ বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, নদীতে থাকা হাউজবোটে লাইন টেনে কেউ বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে পারবে না এটা এক প্রকার বিদ্যুৎ চুরি করে ব্যবহার করা হচ্ছে। যারা অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো। তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।