চিলমারী নৌবন্দরে ফেরি চলাচল বন্ধ

চিলমারী নৌবন্দর থেকে চিলমারী-রৌমারী নৌপথে চলাচলকারী ফেরি সুফিয়া কামাল ব্রহ্মপুত্র নদে নাব্য সংকট দেখা দেওয়ায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আবার রৌমারী ঘাটে পন্টুনের র‌্যাম দেবে যাওয়ায় গত ২৮ অক্টোবর শনিবার, বিকাল থেকে এই নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) চিলমারী মেরিন বিভাগের মেরিন অফিসার মো: নজরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

কবে নাগাদ রৌমারী ঘাটের দেবে যাওয়া অংশ মেরামত করে পন্টুন স্থাপন ও ফেরি চলাচল শুরু হবে তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় এই নৌপথে ভোগান্তিতে পড়েছেন পারাপারের অপেক্ষায় থাকা পণ্যবাহী পরিবহনে চালকরা। ব্রহ্মপুত্র নদের উভয় প্রান্তের ঘাটে অপেক্ষমাণ রয়েছে সারি সারি পণ্যবাহী ট্রাক। পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে চিলমারীর রমনা ঘাট এলাকায় পণ্যবাহী অনেক ট্রাক।

আসিম জামিল গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন

ভূরুঙ্গামারী থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রাকের চালক জানান, তারা গত ২ দিন ধরে ঘাটে অপেক্ষমাণ ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন। রবিবার চিলমারীর রমনা ঘাট এলাকায় দেখা যায়, ফেরি পারাপার বন্ধ থাকায় রাস্তায় সারিবদ্ধভাবে পণ্যবাহী পরিবহন অপেক্ষা করছে আবার পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় তারা ফিরে যেতেও পারছেন না।

নৌবন্দর সূত্র জানায়, ফেরি সুফিয়া কামাল রৌমারী থেকে শনিবার সকালে চিলমারীর রমনা ঘাটে পৌঁছার পর আর যাতায়াত করেনি ও রবিবার সকালে তা আরিচা ঘাটের উদ্দেশ্যে চিলমারী ত্যাগ করে। ফেরি কুঞ্জলতা শনিবার দুপুরে চিলমারী থেকে রৌমারী ঘাটে পৌঁছে। কিন্তু রৌমারী থেকে আবারও যানবাহন ও যাত্রী নিয়ে চিলমারীর উদ্দেশে রওনা হওয়ার মুহূর্তে রৌমারী ঘাটের পন্টুনের র‌্যাম দেবে যাওয়া কারণে ফেরিটি চিলমারী বন্দরে ফিরে এলেও আর যাত্রা করতে পারেনি।

বিআইডব্লিউটিসির মেরিন অফিসার জানান, কয়েকদিন ধরে নাব্য সংকটে ফেরি সুফিয়া কামাল চলাচলে সমস্যা হচ্ছিল এবং যেকোন সময় ফেরিটি আটকে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছিল। নদে পানি কমে যাওয়ায় বন্দরের কাছে ওই ফেরিটি ঘুরিয়ে নেওয়ার মতো পর্যাপ্ত জায়গাও পাওয়া যাচ্ছিল না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে পরে ফেরিটি চিলমারী নৌবন্দর থেকে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ও রবিবার সকালে ফেরিটি আরিচা ঘাটের উদ্দেশে রওয়া হয়। এখানে এর বিকল্প কোনও ফেরি আসবে কিনা তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ ঘাটের অ্যাপ্রোস সড়ক ও পল্টুন স্থাপনের স্থান মেরামতের কাজ করছেন। এতে আরও তিন চার দিন সময় লাগতে পারে। মেরামত সম্পন্ন হলে আবারও নৌবন্দরে থাকা অপর ফেরি কুঞ্জলতা পারাপার শুরু হবে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চিলমারী-যমুনা বিটের প্রধান বলেন, নাব্য সংকট কাটিয়ে উঠতে নদে ড্রেজিং কাজ চলছে এই সঙ্গে রৌমারী ঘাট মেরামত করে পন্টুন ও র‌্যাম পুনরায় স্থাপনের কাজের অনুমোদন পাওয়া গেছে। ঘাট মেরামত হলে আগামী দুই-একদিনের মধ্যে আবারও ফেরি চলাচল শুরু হবে।

এলাকাবাসী ফেরি বন্ধের কারণ হিসেবে বিআইডব্লিউটিএ এবং বিআইডব্লিউটিসি’র মধ্যে সমন্বয়হীনতাকে দায়ী করছে। এলাকাবাসী দাবী নাব্যতা সংকট দূর করতে উপযুক্তভাবে ড্রেজিং করা জরুরি। ড্রেজিং না করে উল্টো ফেরি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া এ এলাকার জনগণের সঙ্গে তামাশা।

সবসময় ভালো মানুষ হতে চেয়েছি মৌসুমী হামিদ

রেল-নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সভাপতি বলেন, এই নৌপথের জন্য অন্তত ৪ টি ফেরি প্রয়োজন। ফেরি না দিয়ে উল্টো দুটো ফেরির একটি প্রত্যাহার করা এ অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে তামাশা। এলাকাবাসীর দাবী অবিলম্বে ঘাট মেরামত করে ফেরি পারাপার চালুসহ এই নৌপথে ৪ টি ফেরি চালু করার।

চিলমারী নৌবন্দরের হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে এবং সারা দেশের সঙ্গে এই চিলমারী নৌবন্দরের নৌযোগাযোগ পুনরায় স্থাপনের লক্ষ্যে চলতি বছরের ২০ সেপ্টেম্বর চিলমারী-রৌমারী নৌপথে ফেরি চালু হয়। আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ফেরি চলাচল ও বন্দরের উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করেন। কিন্তু মাত্র ১ মাসের ব্যবধানে এই নৌপথে ফেরি চলাচল মুখ থুবড়ে পড়েছে।