অন্যরকম খবর

বিশ্বের সবচেয়ে দামি মরিচ কেজির ২৭ লাখ টাকা

বিশ্বের সবচেয়ে দামি মরিচ কেজির ২৭ লাখ টাকা

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুতে জন্মানো চারাপিতা মরিচকে বিশ্বের ‘সবচেয়ে দামি’ মরিচ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে এই জাতের ১ কেজি শুকনা মরিচের দাম ২৫ হাজার ডলার। বর্তমানে বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ সাড়ে ২৭ লাখ টাকা প্রায়। বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলার এক ব্যক্তি মূল্যবান এই মরিচ প্রায় ২ বছর ধরে চাষ করছেন। অথচ তিনি ১৫ দিন আগেও জানতেন না এই মরিচের দামের কথা।

দিলদার উদ্দিন পেশায় সাংবাদিক, নোয়াখালী সদর উপজেলার কালিতারা এলাকার বাসিন্দা তাঁর ছাদবাগানে চারাপিতা মরিচের চাষ করছেন। জানাজানি হওয়ায় গণমাধ্যমের কর্মীসহ পাড়া-প্রতিবেশীরা প্রতিদিনই তাঁর বাড়িতে যাচ্ছেন গাছটি দেখতে। তিনি বলেন, প্রায় ২ বছর আগে তাঁর যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী মেয়ের শাশুড়ি দেশে আসার সময় সেখান থেকে কয়েকটি মরিচ এনেছিলেন। এর মধ্যে ২ টি মরিচ তাঁকে দিলে সেগুলোর বীজ তিনি ছাদের টবের মাটিতে পুঁতে রাখেন। কয়েক দিনের মাথায় চারা গাছ জন্মায়। এরপর ২ টি গাছেই দেড় মাসের মাথায় ফুল ও মরিচ ধরে। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে গত দেড় বছরে গাছ ২ টি থেকে তিনি দুই শতাধিক মরিচ খেয়েছেন এবং প্রতিবেশীদের দিয়েছেন।

এই মরিচের দাম তিনি জানতেন না। ইউটিউবে চারাপিতা মরিচ নিয়ে একটি তথ্যচিত্র দেখছিলেন। তখন এই মরিচের আকাশচুম্বী দাম ও বিশ্বজুড়ে এর দুষ্প্রাপ্যতার কথা জেনে বিস্মিত হন। অযত্ন-অবহেলায় ২ টি গাছের একটি বছরখানেক মরিচ ধরার পর মরে যায়। বাকি গাছটিও অন্যান্য গাছের কারণে অনেকটা ঝুঁকির মধ্যে ছিল।

আকাশচুম্বী দাম ও বিশ্বজুড়ে এর দুষ্প্রাপ্যতার কথা জেনেদিনই তিনি মরিচগাছটির আশপাশ থেকে সব আগাছা পরিষ্কার করে গাছটির পরিচর্যা শুরু করেন। তখন গাছটিতে চারটি পাকা মরিচ ছিল। তিনি মরিচগুলো সংগ্রহ করে বাসায় নিয়ে রাখেন। এরপর ওই মরিচ থেকে বীজ নিয়ে বীজতলা তৈরি করেন, যা থেকে ২০টি চারা উৎপাদিত হয়। এর মধ্য থেকে তিনি আটটি চারা এরই মধ্যে টবে স্থানান্তর করেছেন। বাকিগুলো এখনো বীজতলায় আছে।

সাংবাদিক দিলদার উদ্দিন জানান, মরিচে ঝাল কম, তবে তরকারিতে দিলে সুগন্ধ ছড়ায়। চারাপিতা মরিচ ধরার পর প্রথম অবস্থায় সাদা, এরপর সবুজ, পরে হলুদ, তারপর কমলা এবং সবশেষে টুকটুকে লাল বর্ণ ধারণ করে। মরিচের রং পরিবর্তনের প্রতিটি ধাপেই মরিচগুলো দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। দিলদার উদ্দিনের স্ত্রী সালমা ইসলাম সদর উপজেলার চরউরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। সুযোগ পেলে বাগানের পরিচর্যা করেন তিনিও।

পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচলের ১০ অক্টোবর

এই দম্পতির ছাদবাগানে পিচ ফল, ত্বিন ফল, পার্সিমন, চেরি ফল, মালবেরি, ব্ল্যাকবেরি, ট্যাং ফল, রামবুটান, পিনাট বাটার, মিয়াজাকি আম, বেরিকেটেট মাল্টা, আপেল, কমলাসহ ১৪০ প্রজাতির দুর্লভ ফলদ ও ঔষধি গাছ আছে। এসবের মধ্যে দক্ষিণ আমেরিকার পেরুর বিখ্যাত চারাপিতা মরিচ তাঁদের ছাদবাগানে এখন বিশেষ মাত্রা যোগ করেছে।

নোয়াখালী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বলেন, এই মরিচ অনেক মূল্যবান এটি সাধারণত পেরুতে চাষাবাদ হয়। বাংলাদেশের আবহাওয়ায় এই মরিচের আবাদে সফলতা পাওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত ইতিবাচক। তাই এই মরিচের আরও বেশি আবাদ করা যায় কি না, তা তাঁরা খতিয়ে দেখছেন। সাংবাদিক দিলদার উদ্দিনের ছাদবাগানে চারাপিতা মরিচগাছ লাগানোর বিষয়টি তিনি এরই মধ্যে জেনেছেন। এরই মধ্যে নোয়াখালী সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে কাজ শুরুর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

2 thoughts on “বিশ্বের সবচেয়ে দামি মরিচ কেজির ২৭ লাখ টাকা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *