শাখা হয় না কেন তালগাছে
শাখা হয় না কেন তালগাছে
এটাই স্বাভাবিক প্রকৃতিক নিয়ম গাছের কান্ডে ডালপালা থাকবে, পাতা থাকবে, ফুল হবে ও ফল ধরবে। অধিকাংশ গাছেই কান্ড থেকে ছোট ছোট শাখা থাকে বা হয়। অনেক গাছের কান্ড থেকে কোনো শাখাই বের হয় না যেমন তালগাছ, নারকেলগাছ, সুপারিগাছ ও খেজুরগাছ।
পাতার ওপর দিকে বা পাতার গোড়া থেকেই বের হয় গাছের ডাল বা শাখা। কান্ডে যে জায়গা থেকে পাতা বের হয় তাকে বলা হয় কান্ডের পর্ব। অন্য জায়গাগুলোর তুলনায় কান্ডের পর্বের জায়গাটা কিছুটা ফোলা থাকে। ডাল বা শাখা কান্ড থেকে অকারণে বের হয় না।
পাতার গোড়ায় কান্ডের পর্বের মধ্য অংশে ছোট্ট একটা মুকুল তৈরি হয় আগে থেকেই। এই মুকুল থেকে শুধু ডাল বা শাখা তৈরি হয় বলে এদের অঙ্গজ মুকুল বলে। আবার পাতার গোড়ায় থাকে বলে এদের কাক্ষিক মুকুল ও বলা হয়। বেড়ে ওঠার জন্য কান্ডের মাথায় এক ধরনের কোষও থাকে। যার নাম ভাজক টিস্যু।
এই কোষগুলো সব সময়েই বিভাজিত হয়, সব বিভাজিত কোষ থেকে নিচের অংশে পাতা কুড়ি ইত্যাদি তৈরি হচ্ছে। কান্ডের ডগায় যে ভাজক টিস্যু থাকে তার কোষগুলো বিভাজিত হয়েই পাতা এবং কাক্ষিক মুকুল তৈরি হয়। যে সব গাছে শাখা থাকে তাতে এই দুটো অংশ আলাদা আলাদা ভাবে তৈরি হতে পারে, এরা কেউ কাউকে দেয় না।
নিজেকে নিজে কাতুকুতু দিলে হাসি পায় না কেন
তালগাছের অগ্রমুকুল থেকে পাতা বা শাখার অংশ দুটোই আলাদা হয়ে যায়। তাল গাছের পর্বের মধ্য অংশ্য খুবই ছোট, তাই পর্বগুলি খুব কাছাকাছি থাকে। ফলে পাতাও খুবই কাছাকাছি বের হয়। তাল গাছে পাতা সবই মাথার উপরে এক জায়গায় জড়ো হয় কান্ডের গায়ে ছাড়নো নয়।
এছাড়াও তালগাছের পাতার গোড়া বেশ চওড়া হয়। পত্রবৃন্ত কান্ডে অনেকটা অংশ ঢেকে রাখে, ফলে কাক্ষিক মুকুল চাপা পড়ে যায় আর বাড়তে পারে না এবং তা শুকিয়ে আসে বা নষ্ট হয়। তাই আর কোনো শাখা বা ডাল তৈরি হবার সম্ভবনা থাকে না। এইকারণে ডালের কান্ড থেকে কোনো শাখা তৈরি না হয়ে শুধু লম্বায় বাডতে থাকে।
সূত্র: উদ্ভিদ বিজ্ঞান/ ভূপেন্দ্রনাথ স্যানাল