নীলিমার সন্ধান যখন পেয়েই গেছি
নীলিমার সন্ধান যখন পেয়েই গেছি
সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে দিনভর ঘোরাঘুরির পর যেসব পর্যটক রাত যাপন করেন, তাঁদের নিয়ে সন্ধ্যার পর নৌকা, হাউসবোটগুলো আস্তানা গাড়ে হাওরের উত্তর পাড়ে টেকেরঘাট এলাকায়। ভারতের মেঘালয় পাহাড়ের কোল ঘেঁষে টেকেরঘাটের অবস্থান। চোখ জুড়ায়, মনে প্রশান্তি এনে দেয় পাহাড়ের সবুজে।
আশপাশে পর্যটকবাহী অসংখ্য নৌকা, হাউসবোট জলের উপর ভাসছে। হাউসবোটর কোনোটির ছাদে গান গাইছেন পর্যটকেরা কোনোটিতে গল্প-আড্ডা, আবার কেউবা নীরবে তাকিয়ে আছেন উত্তরের পাহাড়ের দিকে। সকালের ভ্রমণপথ নির্ধারণ করার জন্য রাতের আড্ডা শেষে ঘুমের আগে সংক্ষিপ্ত বৈঠকে বসেন অনেকেই। পাহাড়ে অসংখ্য বাতি জ্বলছে। কী পরিষ্কার লাগছে সবকিছু! যেন বৃষ্টি ধুয়ে দিয়েছে পাহাড়কে। হাওরের জলে মৃদুমন্দ বাতাসে খেলা করছে ছোট ছোট ঢেউ।
নীলাদ্রি তো পাশেই, এটা ওইটার ছোট বোন নীলিমা। এলাকার লোকজনই এই নাম দিছেন লাকমাছড়া থেকে এখানে আসতে রাস্তাটা বেশ খারাপ। সুন্দরী নীলিমার সন্ধান যখন পেয়েই গেছেন তখন একনজর দেখে না যাওয়া ঠিক হবে না। মোটরসাইকেল ছোটেন দল নিয়ে। সকালের মিষ্টি রোদ গায়ে মেখে ছুটে যান নীলিমার কাছে। পাহাড়ের পাদদেশের রাস্তাটা বড়ই খারাপ। কাঁচা-পাকার সঙ্গে দুয়েকটি স্থানে একেবারে ভাঙা, কাদাপানি মাড়িয়ে সীমান্তঘেঁষা এই গ্রামের নাম লালঘাট। কিন্তু লালঘাটে তো লালের চিহ্ন নেই, চারদিকে সবুজ আর সবুজ।
ত্বকে আসবে উজ্জ্বলতা নিয়মিত ব্যবহারে
সমতল থেকে খানিকটা উঁচু টিলার উপর গাছগাছালির ফাঁক দিয়ে পৌঁছে যান মেঘালয় পাহাড়ের পায়ের কাছে। ইচ্ছা করলে সেখান ছোঁয়া যায় সীমান্তের কাঁটাতার সেটা আসলে সীমান্তের শূন্যরেখা (নো ম্যানস ল্যান্ড)। স্বচ্ছ পানির একটি ধারা মেঘালয় পাহাড় থেকে এসেছে। এই জলের ধারা ছোট-বড় পাথরের ওপর দিয়ে, কোথাও পাশ দিয়ে নেমে লালঘাট গ্রামের মধ্য দিয়ে সাপের মতো এঁকেবেঁকে গিয়ে মিশেছে হাওরে। জায়গাটা দেখে মনে হলো, সবুজ শাড়ির আঁচলে প্রকৃতি এলাকাটাকে ঢেকে রেখেছে। তাই সুন্দরী নীলিমার খোঁজ এখনো অনেকেই জানে না। জায়গাটা দারুণ, গহিন বনের ভেতরে লুকিয়ে আছে সুন্দরী পাহাড়ি এই ঝরনা।
যাঁরা টাঙ্গুয়ার হাওর, টেকেরঘাটের নীল জলের শহীদ সিরাজ লেকে (নীলাদ্রি), দৃষ্টিনন্দন শিমুলবাগান, রূপের নদ জাদুকাটা, লাকমাছড়া ঘুরতে আসেন, তাঁরা ইচ্ছা করলেই পাহাড়ি ঝরনা নীলিমায় ঢুঁ মারতে পারেন। শরীরটা ভেজাতে পারেন নীলিমার ঠান্ডা জলে। এতে মনপ্রাণ সতেজ হবে।