অন্যরকম খবরস্বাস্থ্য ও পুষ্টি

শীতকালে পশমী কাপড় আরামদায়ক কেন

মানবদেহের গড় তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো।

ঋতুভেদে কিন্তু আরামদায়ক পোশাকের ধরন বদলে যায়। তীব্র শীতের হাত থেকে বাঁচার সহজ উপায় হলো আরামদায়ক পোশাক পরা। যে পোশাকটা গরমকালে সবচেয়ে আরামদায়ক, শীতকালে সেই পোশাক পরলে হীতে বিপরীত হবে।

শীতকালে পশমী কাপড় আরামদায়ক কেন

আমাদের দেহের তাপমাত্রার ওপর পোশাকের আরামদায়ক ব্যাপারটা পুরোটাই নির্ভর করে। মানুষ উষ্ণ রক্তের প্রাণী, উষ্ণ রক্তের দেহের কিছু সুবিধা আছে। পরিবেশের তাপমাত্রার সঙ্গে মোটামুটি মানিয়ে চলতে পারে, কিন্তু পুরোপুরি নয়।

তাই মানবদেহের জন্য পরিবেশের ২০-৩০ ডিগ্রি তাপমাত্রা সহনীয়। তবে কমবেশি হলে ঠাণ্ডা বা গরমের অনুভূতি তৈরি হয়। তখন মানবদেহের জৈবরাসায়নিক ক্রিয়াকলাপ ব্যাহত হয়। ফলে খারাপ লাগার অনুভূতি তৈরি হবে, এমনকি বেশিক্ষণ এ অবস্থা চলতে থাকলে অসুস্থও হওয়ার কারণ হতে পারে।

আমাদের দেশে পরিবেশের শীতকালে তাপমাত্রা ২০ সেলসিয়াসের নিচে নেমে যায় কখনো কখনো তা ১০ ডিগ্রির নিচেও নামে। তখন তীব্র শীতের অনুভূতি তৈরি হয় এ অবস্থায় শরীরের অভ্যন্তরীণ কার্যকলাপ ব্যাহত হয়।

আমাদের শীতের তীব্র অনুভূতি তৈরি হয় মগজে। তীব্রতার হাত থেকে বাঁচার সবচেয়ে ভালো উপায় দ্রুত উষ্ণ কোনো স্থানে চলে যাওয়া। কিন্তু কাজও তো থাকতে পারে বাইরে, তা ছাড়া শীতকালে সাধারণ বাড়ি-ঘরের ভেতরেও ঠাণ্ডা থাকে। তাই তীব্র শীতের হাত থেকে বাঁচার সহজ উপায় হলো আরামদায়ক পোশাক পরা।

যে পোশাকটা গরমকালে সবচেয়ে আরামদায়ক, শীতকালে সেই পোশাক পরলে হীতে বিপরীত হবে। তাই ঋতুভেদে কিন্তু আরামদায়ক পোশাকের ধরন বদলে যায়। যেখানে গরমে সুতি পোশাক আরামদায়ক, শীতে সেখানে উল বা পশমের পোশাক আরামদায়ক।

কেন এমন হয়?

তাপ কুপরিবাহী উল বা পশম, এর ভেতর দিয়ে সহজে তাপের আদান-প্রদান হয়। তাই আপনার শরীরের যে তাপমাত্রা সেটা যদি বজায় থাকে, তাহলে আপনি আরাম পাবেন বা বাইরে থেকে বাড়তি তাপ শরীরে জোগান না দিলেও শরীর ঠিকঠাক কাজ করবে। আবার মানবদেহের গড় তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো এটা বজায় রাখতে পারলেই শরীরের সব জৈবিক কাজ ঠিকঠাক সম্পন্ন হবে। এই জন্য আগুন পোহানোর চেয়ে ভালো গরম পোশাকে; নিজেকে মুড়িয়ে নেওয়া আরামদায়ক, বেশি বৈজ্ঞানিক।

আরও পড়ুন: হাসনাহেনা ফুলের গন্ধে কি সাপ আসে

উল বা তুলা দুটিই তাপ কুপরিবাহী। তাই শীতের পোশাক, লেপ-তোশক এগুলো উল অথবা তুলা দিয়ে বানানো হয়। তাই উলের পোশাক পরে থাকলে শরীরের তাপ বাইরে বেরিয়ে আসতে পারে না বা শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রাটা বজায় থাকে। তাপমাত্রার স্বাভাবিকতা বজায় থাকা মানেই আরামদায়ক অনুভূতি লাভ করা।

কিন্তু এ সময় আপনি যদি, সুতি পোশাক পরেন তাহলে ঝামেলা হবে। কিন্তু সুতির পোশাক তুলা দিয়ে তৈরি হলেও এগুলো এমনভাবে বোনা হয় যেন সুতার বুননে ফাঁক থেকে যায়। এর কারণে সহজেই এর ভেতর দিয়ে বাতাস চলাচল করতে পারে। সুতির পোশাক সেই ফাঁক দিয়ে বাতাসের ঘাড়ে সওয়ার হয়ে সহজেই শরীরের তাপ বাইরে বেরিয়ে আসতে পারে এবং শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখা কঠিন হয়ে যায়। তাই শীতকালে সুতির পোশাক পরা ঠিক নয়।

 

সূত্র:-হাউ ইট ওয়ার্কস.

2 thoughts on “শীতকালে পশমী কাপড় আরামদায়ক কেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *