আমাদের দেহে জিংক ও ভিটামিন বি এর অভাব পূরণ করে জিংক বি ট্যাবলেট। জিংক বি কিন্তু শরীরের ওজন বৃদ্ধির কোন ঔষধ নয়, এই ট্যাবলেট নির্দেশিত হয়ে থাকে সাধারণত জিংক এবং ভিটামিন বি এর ঘাটতি পূরণের জন্য। তবে জিংক বি এর ফলে ওজন বাড়তে পারে।

জিংক বি ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয়

আমাদের দেহে ভিটামিন কিংবা অন্যান্য পুষ্টিগুণের ঘাটতি দেখা দেওয়ার মতোই জিংকেরও ঘাটতি দেখা দেয়। শুধু তাই, এই সমস্যাটিকে শীর্ষ শারীরিক সমস্যার মাঝে পাঁচ নাম্বারে রাখা হয়েছে। কেননা শরীরে জিংকের ঘাটতির ফলে দেখা দিতে পারে গুরুত্বর বেশ কিছু রোগের প্রকোপ। প্রতিটি মানুষের শিশু থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধ প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে জিংক তথা জিংক সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করা প্রয়োজন। মানব দেহের প্রতিটি কোষ, টিস্যু, হাড় ও তরলে জিংকের উপস্থিতি পাওয়া যায়। মগজের কোষে জিংকের ঘাটতি দেখা দিলে মগজের কার্যক্ষমতা স্লথ হয়ে যায়। মগজের কার্যকারিতা ও বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে জিংক খুবই জরুরি একটি উপাদান।

নিশ্চয় বোঝা যাচ্ছে কেন জিংক শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় বা জিংককে ঘাটতি দেখা দিলে শরীর কতটা বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে পারে। তবে আমাদের দেশের মানুষ জিংকের ঘাটতি ও তার ভয়াবহতা সম্পর্কে কিছুই জানে না। কিছু লক্ষণের মাধ্যমে নিশ্চিত হতে হবে যে, শরীরে জিংকের ঘাটতি রয়েছে কিনা। এখানে প্রাথমিক কিছু লক্ষণ তুলে ধরা হলো, যা প্রকাশ করে শরীরে জিংকের ঘাটতির সমস্যা।

আমাদের শরীরে জিংকের ঘাটতি দেখা দিলে প্রথমেই তার প্রভাব দেখা দেয় নিউরোলজিক্যাল ক্ষেত্রে। শিশুদের ক্ষেত্রে মনোযোগে সমস্যা ও বয়স্কদের মাঝেই অমনোযোগিতার প্রভাব দেখা দেয়। তবে এমনটা হলেই জিংক ট্যাবলেট খাওয়া যাবে না। তার পরিবর্তে বেশি বেশি জিংক সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। যেসব খাবারে জিংকের উপস্থিতি বেশি, সেই খাদ্য উপাদানগুলো প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে যেমন: কাজুবাদাম, মিষ্টি কুমড়ার বিচি, মটরশুটি, মাশরুম, মুরগির মাংস, দই, কচু শাক প্রভৃতিতে পাওয়া যাবে প্রচুর পরিমাণে জিংক। তাই এই খাবারগুলো নিয়মিত খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।

শরীরে জিংকের ঘাটতির লক্ষণ সমূহ:

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া:-

মানব দেহে সঠিক মাত্রায় জিংকের উপস্থিতি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কার্যকর রাখে। শরীরে জিংকের মাত্রা ঠিক থাকলে টি-সেল উৎপাদন সঠিক মাত্রায় থাকে। আমাদের শরীরে হরমোন রিসেপ্টরের জন্যেও জিংকের প্রয়োজন হয়। মানব দেহে এই সকল কিছু সম্মিলিত ভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বজায় রাখে।

পেটের সমস্যা ও ডায়রিয়ার দেখা দেয়:-

অকারণেই কিছুদিন পরপর ডায়রিয়ার সমস্যা দেখা দিতে থাকে জিংকের ঘাটতি দেখা দিলে। প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় দুই মিলিয়ন শিশু ক্রমাগত ডায়রিয়ার সমস্যায় আক্রান্ত হয় [বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে] এবং ধারণা করা হচ্ছে বেশিরভাগ জিংকের ঘাটতি জনিত সমস্যা ও ব্যাকটেরিয়ার কারণে। এছাড়াও পাকস্থলিস্থ সমস্যার কারণে মলের আরো কিছু সমস্যা, থাইরয়েডের সমস্যা, অ্যালার্জির সমস্যাও দেখা দিয়ে থাকে। এই ঘাটতি প্রকট আকার ধারণ করলে সমস্যা আরো গুরুত্বর আকার ধারণ করে। সবসময়ই বলা হয়ে থাকে জিংকের ঘাটতি পূরণে সামপ্লিমেন্ট হিসেবে কোন ওষুধ নয়, প্রাকৃতিক খাদ্য খেতে হবে বেশি করে।

আরও পড়ুন: কাঁচা হলুদ খাওয়ার অপকারিতা

জিংক বি ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয় ?

জিংক বি ট্যাবলেট শরীরের বিভিন্ন ধরনের বায়োলজিক্যাল ফাংশনের সাহায্য করে থাকে। এই জিংক বি ট্যাবলেট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, ক্ষত সারানোর, পরিপাক, মানসিক এবং শারীরিক বিকাশ ও শিশু-কিশোরদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে সাহায্য করে।

তবে জিংক বি সেবনের ফলে খাবার হজম এবং খাবারের প্রতি রুচি বেড়ে যায়। সে ক্ষেত্রে পরোক্ষ ভাবে বলা যায় যে জিংক বি ট্যাবলেট সেবন করলে মোটা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ডাক্তারের পরামর্শমতো যদি জিংক বি ট্যাবলেট সেবন করা যায় তাহলে খুব সহজেই এই রোগগুলো থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

জিংক বি ট্যাবলেট এর উপকারিতা:-

জিংক বি শিশুদের এবং বয়স্কদের স্নায়ু ও শারীরিক গঠন সুগঠিত করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। জিংক বি ট্যাবলেট ভিটামিন এর পাশাপাশি শরীরের জিংক এর অভাব পূরণের মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক দুর্বলতা নিরাময় সহ ভিটামিন বি এর অভাবে সহ সকল রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।

তাই যদি আপনি মনে করেন যে অরুচি বা ক্ষুধামান্দ্য কিংবা স্নায়ুবিক দুর্বলতা জনিত কারণে দিন দিন আপনার ওজন কমে যাচ্ছে তবে চিকিৎসকের পরামর্শমতো আপনি জিংক বি ট্যাবলেট সেবন করতে পারেন।