জাতীয়

ইলিশা ২৯ তম গ্যাসক্ষেত্র

ইলিশা ২৯ তম গ্যাসক্ষেত্র

রাষ্ট্রায়ত্ত গ্যাস অনুসন্ধান সংস্থা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রডাকশন কোম্পানি (বাপেক্স) দ্বীপজেলা ভোলায় আরেকটি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করেছে। এ খনিকে দেশের ২৯ তম গ্যাসক্ষেত্র হিসাবে ঘোষণা করল সরকার। জেলা সদরের ইলিশা ইউনিয়নে আবিষ্কৃত। শাহবাজপুর ও ভোলা নর্থের পর ভোলায় এটি তৃতীয় গ্যাসক্ষেত্র। দেশে তীব্র জ্বালানি সংকটের মধ্যে এই ‘ইলিশা গ্যাসক্ষেত্র’ দেশীয় অর্থনীতি ও বাণিজ্যের জন্য স্বস্তির খবর বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।

গত সোমবার রাজধানীর বারিধারায় নিজ বাসভবনে বিদ্যুত্, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এক সংবাদ সম্মেলনে দেশের ২৯ তম গ্যাসক্ষেত্র হিসাবে ইলিশার নাম ঘোষণা করেন। প্রতিমন্ত্রী জানান, ইলিশা-১ অনুসন্ধান কূপ খননের মাধ্যমে এ গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। নতুন গ্যাসক্ষেত্রটিতে প্রায় ২০০ বিলিয়ন ঘনফুট (২০ হাজার কোটি ঘনফুট) গ্যাস মজুত রয়েছে। দেশে গ্রাহক পর্যায়ে গ্যাসের খুচরা দর অনুযায়ী এই পরিমাণ গ্যাসের বাজারমূল্য ছয় হাজার ৫০০ কোটি টাকা। আর যদি দীর্ঘমেয়াদে আমদানি করা এলএনজির দর বিবেচনা করা হয়, তাহলে এর মূল্য দাঁড়াবে ২৬ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা।

প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, এটা খুবই আনন্দের সংবাদ, সৌভাগ্যের বিষয়। ভোলায় সব মিলিয়ে প্রায় ৩ টিসিএফ গ্যাস মজুত আশা করা হচ্ছে। নদীর ঠিক ওপরের দিকে নতুন গ্যাসক্ষেত্রটি আবিষ্কার করা হয়েছে। এখান থেকে গ্যাস পাওয়া যাবে ২৬ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত।

বাপেক্স সূত্র জানায়, ইলিশার দূরত্ব শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্র থেকে ৩৫-৩৮ কিলোমিটার। আর ভোলা নর্থ থেকে এটি ৬ থেকে ৮ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা ইউনিয়নের মালের হাটসংলগ্ন এলাকায় গত ৯ মার্চ ইলিশা-১ কূপটির খননকাজ শুরু করে ১৪ এপ্রিল ৩ হাজার ৪৭৫ মিটার গভীরতায় খনন সম্পন্ন হয়। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান গাজপ্রম বাপেক্সের হয়ে কূপটি খনন করে। এর পরীক্ষা কার্যক্রম ২০ এপ্রিল শুরু হয়ে শেষ হয় ১৬ মে। কূপটির তিনটি স্তরে তিনটি পৃথক ড্রিল স্টিম টেস্টের (ডিএসটি) মধ্যে সর্বশেষ তৃতীয় টেস্ট গত ১৫ মে সম্পন্ন হয়। এই পরীক্ষায় কূপের তিন হাজার ২৫০ থেকে তিন হাজার ২৫৪ মিটার গভীরতায় দুই কোটি ঘনফুট গ্যাস ফ্লো পাওয়া যায়।

ভোলায় আগেও ২ টি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়। ইলিশা নিয়ে এখন গ্যাসক্ষেত্রের সংখ্যা দাঁড়াল তিনে। শাহবাজপুর, ভোলা নর্থ ও ইলিশা ভোলার এই ৩ টি গ্যাসক্ষেত্রে এখন ২ দশমিক ২৩ ট্রিলিয়ন (২ লাখ ২৩ হাজার কোটি) ঘনফুট গ্যাস মজুত রয়েছে। এগুলো থেকে দৈনিক গ্যাস উত্তোলন করা যাবে ২০ কোটি ঘনফুট। এই ৩ টি গ্যাসক্ষেত্রের ৯ টি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন হচ্ছে। এগুলো হলো সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ভোলা নর্থের দুটি, বোরহানউদ্দিন উপজেলার শাহাবাজপুর গ্যাসক্ষেত্রের ছয়টি কূপ ও সর্বশেষ ইলিশা ক্ষেত্রের ইলিশা-১ কূপ।

বান্দরবানে সেনা টহলে দুই সৈনিক নিহত

জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, সিলেটের পর ভোলাই একমাত্র জেলা যেখানে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। ভোলা থেকে আমরা আশা করছি প্রায় ২৬ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত গ্যাস পাওয়া যাবে। সেখানে আমাদের একটি প্রসেস প্ল্যান্টও রয়েছে। আরো একটি আনার কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি, ২ থেকে ৩ বছরের মধ্যে ভোলার গ্যাস পাইপলাইনে দেওয়া সম্ভব হবে। ভোলা থেকে বরিশাল হয়ে খুলনা যাবে ১ টি পাইপলাইন। এর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে। এছাড়া সিএনজি আকারে গ্যাস এনে তিতাস গ্যাস কোম্পানির এলাকার শিল্পকারখানা গুলোতে সরবরাহ করা হবে।

2 thoughts on “ইলিশা ২৯ তম গ্যাসক্ষেত্র

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *