বিয়ে না করলে চাকরি হারাবেন শিক্ষক
বিয়ে না করলে চাকরি হারাবেন শিক্ষক
৩০ কর্মদিবসের মধ্যে বিয়ে করতে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার সাজানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের রনি প্রতাপ নামের এক সহকারী শিক্ষককে নোটিশটি দেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নোটিশকে কেন্দ্র করে সমালোচনা শুরু হয়েছে।
বিদ্যালয় সূত্র জানায়, সহকারী শিক্ষক পদে ঐ বিদ্যালয়ে ২০১৬ সালে যোগ দেন গোপালপুর উত্তরপাড়ার বাসিন্দা রনি প্রতাপ পাল। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম গত ২৬ জুলাই তাকে বিয়ে সংক্রান্ত নোটিশ দেন। সম্প্রতি বিষয়টি ভাইরাল হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়, বিদ্যালয়ের বৃহত্তর স্বার্থে নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে বিবাহের কার্য সম্পন্ন করে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে আপনাকে বিশেষভাবে নির্দেশ দেওয়া হলো। বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে আপনাকে বারবার মৌখিকভাবে তাগিদ দিয়েছি বিয়ে করার জন্য। দুঃখের বিষয়, কয়েক বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও আপনি বিয়ে করেননি। বিদ্যালয়টিতে সহশিক্ষা চালু রয়েছে। অবিবাহিত শিক্ষক নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন অভিভাবকরা।
সহকারী শিক্ষক রনি প্রতাপ নোটিশটি পাওয়ার ২ দিন পর প্রধান শিক্ষককে লিখিত জবাব দেন। জবাবে তিনি লিখেছেন, আমার অভিভাবকরা আমার বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এছাড়া হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা শ্রাবণ থেকে কার্তিক পর্যন্ত বিয়ে করাটা শুভ মনে করে না। বাংলাদেশের হিন্দুদের বিয়ের পাত্র-পাত্রী বাছাইয়ে গুত্র বা বর্ণের বিষয় রয়েছে। তাই পারিবারিক ও ধর্মীয় রীতির কারণে আগামী অগ্রহায়ণ মাসে আমার অভিভাবকরা আমাকে বিয়ে করাবেন বলে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে শিক্ষক রনি প্রতাপ বলেন, হয়রানির ভয়ে তিনি গত ৩০ জুলাই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। প্রধান শিক্ষক স্কুলের সব স্টাফকে ডেকে সবার সামনে তাকে সাফ বলে দিয়েছেন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিয়ে না করলে তাকে চাকরিচ্যুত করা হবে। তিনি অবিবাহিত থাকলেও কোনো অভিভাবক বা শিক্ষার্থী তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করেননি। বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি সিরাজুল ইসলামের স্বাক্ষর জাল করে চেকের মাধ্যমে স্কুলের বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষককের বিরুদ্ধে। সরকারি তদন্তে যাতে তিনি সাক্ষ্য না দেন, সেজন্য তাকে হয়রানি করা হচ্ছে।
আখাউড়া-আগরতলা রেলপথে
স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন বলেন, তাকে নিয়ে কেউ কখনো প্রশ্ন তোলেননি রনি প্রতাপ একজন ভালো শিক্ষক। দুটি সরকারি তদন্তে রনি প্রতাপ মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে না চাওয়ায় প্রধান শিক্ষক তাকে এমন লজ্জাজনক নোটিশ দিয়ে হয়রানি করছেন। এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, সহশিক্ষা চলমান রয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানে অবিবাহিত শিক্ষক থাকলে নানা অসুবিধা হতেই পারে। তাকে এ জন্য দ্রুত বিয়ে করার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গোপালপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজনীন সুলতানা বলেন, এভাবে নোটিশ করার এখতিয়ার কোনো প্রধান শিক্ষকের নেই, ঘটনাটি খুবই লজ্জাজনক।
Pingback: পাকিস্তানের বিশাল জয় অল আউট আফগানিস্তান - Amader Khabar