জাতীয়

খুলনা-মোংলা রেললাইনের পাথর-বালু সরে যাচ্ছে

খুলনা-মোংলা রেললাইনের পাথর-বালু সরে যাচ্ছে

খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্পের মেয়াদ ৪ দফায় সময় বাড়ানো শেষ হচ্ছে ৩০ সেপ্টেম্বর। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আরো ২ মাস সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে। রেল কর্তৃপক্ষ অবশ্য এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে সময় না বাড়ালেও অক্টোবরের মধ্যে কাজ শেষ করতে বলেছে। অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে রেল কর্তৃপক্ষ এই পথ উদ্বোধনের প্রস্তুতিও নিয়েছে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, দুর্যোগজনিত কারণে কাজ শেষ হতে আরো সময় প্রয়োজন। যার কারণে অক্টোবরের শেষে খুলনা-মোংলা রেললাইন উদ্বোধন হওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভারতীয় ইরকন ইন্টারন্যাশনাল। দুর্যোগের কথা উল্লেখ করে তাদের আরও সময় বাড়ানোর আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রকল্প পরিচালক। ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইরকন ইন্টারন্যাশনালের কোনো প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

২০১০ সালে আন্তর্দেশীয় বাণিজ্য বিকাশের মোংলা বন্দরকেন্দ্রিক খুলনার ফুলতলা থেকে মোংলা বন্দর পর্যন্ত রেললাইন প্রকল্প শুরু হয়। ৩ বছর মেয়াদের প্রকল্প শেষ হয়নি ১৩ বছরেও।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আন্তর্দেশীয় বাণিজ্য বিকাশে মোংলা বন্দর থেকে প্রতিবেশী দেশ ভারত, নেপাল ও ভুটানের পণ্য পরিবহনে সাশ্রয় ও সহজ করতে খুলনা-মোংলা রেলপথ স্থাপনের প্রকল্প নেওয়া হয়। ভারত এই প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থ দিয়েছে। প্রথম দফায় সময় বাড়ানো হয় ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। দ্বিতীয় দফায় ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর, তৃতীয় দফায় ২০২৩ সালের ৩০ জুন এবং সর্বশেষ ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়।

প্রকল্পসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, প্রকল্পের দীর্ঘসূত্রতা এবং প্রকল্প এলাকার নিরাপত্তা যথাযথ না হওয়ায় কিছু স্থানীয় সমস্যা তৈরি হয়েছে। রেললাইনের বিভিন্ন স্থানের সেতু, কালভার্ট ও লাইনের পাশের (ঢালু অংশে) ঘাস কেটে ফেলায় মাটি সরে গিয়ে ছোট গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। রেললাইনের কিছু স্থানের পাথর ও বালু সরে গেছে। এখানকার বালু-মাটিতে ঘাস না থাকলে এবং একটি নির্দিষ্ট সময় না পার হলে মাটি শক্ত হয় না। বৃষ্টিতে বালু ধুয়ে সরে যায়। কেননা রেললাইনটি বিল ডাকাতিয়াসহ (নিচু জলাভূমি) বেশ কয়েকটি বিলের মধ্যে দিয়ে গেছে। এই মাটি খুবই নরম। কিছু যন্ত্রাংশ চুরি হয়েছে। ধীরগতির কারণে ৩ বছর মেয়াদি প্রকল্পটির ব্যয় ১ হাজার ৭২১ কোটি টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ২৬০ কোটি টাকা।

হাইব্রিড রকেট ইঞ্জিনের সফল পরীক্ষা বাংলাদেশে

অন্যদিকে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল জোনের মহাব্যবস্থাপক বলেন, মোংলা বন্দরের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ স্থাপনে খুলনা-মোংলা রেললাইন প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে। আমাদের আশা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই রেললাইনের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে।

খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পের পরিচালক বলেন, প্রকল্পের মেয়াদ ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। আমরা আগামী মাসের শেষের দিকে উদ্বোধনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। খুলনা-মোংলা রেলপথের মূল লাইন ৬৪ কিলোমিটার। এ ছাড়া লুপ ও ইয়ার্ড লাইন রয়েছে ২৬ কিলোমিটার। সব মিলিয়ে এর দৈর্ঘ্য ৯০ কিলোমিটার। এই অবশ্য ঠিকাদারি কর্তৃপক্ষ কাজ শেষ করার জন্য আরো দুই মাস সময় চেয়েছে। বাড়তি সময় দেওয়া হবে কি না এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *