আফগানিস্তানে ভয়াবহ মানবিক সংকটের কবলে
আফগানিস্তানে ভয়াবহ মানবিক সংকটের কবলে
পর পর শক্তিশালী ভূমিকম্পে বহু মানুষের প্রাণহানি হয়েছে আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলে। জাতিসংঘ জানিয়েছে সবশেষ, ৩২০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আফগানিস্তানের স্থানীয় তালেবান কর্মকর্তা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানকে জানিয়েছেন, নিহতের সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি।
আফগানিস্তানের তালেবান কর্মকর্তা বলেন, আমাদের সাহায্যের প্রয়োজন, নিহতদের সংখ্যা অনেক। ধ্বংসস্তূপের নিচে রয়েছে এখনও অনেকে। আমরা মানুষকে সাহায্য করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পে উল্লেখযোগ্য হতাহতের সম্ভাবনা রয়েছে। দুর্যোগ আরও ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে।
ইউএসজিএস ওয়েবসাইটে পোস্ট করা একটি মানচিত্রে আফগানিস্তান অঞ্চলে ৭ টি ভূমিকম্পের কথা জানানো হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ৫.৯ মাত্রার ভূমিকম্প হেরাত থেকে ২১.৭ মাইল উত্তর-উত্তর-পশ্চিমে, ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্প জিন্দাজান থেকে ২০.৫ মাইল উত্তর-উত্তর-পূর্বে এবং হেরাত শহর থেকে প্রায় ২৬ মাইল পশ্চিমে জিন্দাজানের ১৮ মাইল উত্তর-উত্তর-পূর্বে আরেকটি ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে।
ভূমিকম্পের ফুটেজে দেখা গেছে, গ্রামগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। লোকজন তাদের মৃত প্রিয়জনদের ধ্বংসস্তূপ থেকে বের করে আনছে। শত শত মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে রয়েছে। বহু গ্রামের রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জিন্দাহ জান জেলার বাসিন্দা দাউদ হেরাত থেকে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, কয়েক ডজন গ্রাম পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। আমি আমার ৯ জন আত্মীয়ের লাশ হেরাতে নিয়ে গিয়েছি। আমি আপনাদের বলতে পারি, আমার আত্মীয়দের গ্রামে মাত্র ৫০ জন বেঁচে আছেন। আজ সকাল পর্যন্ত সেখানে ৪০০ জনেরও বেশি মানুষ বসবাস করছিল। এখানে একটা বিপর্যয় ঘটছে।
বিয়ে অন্য কাউকে করবেন অনন্যা পান্ডে
পূর্ব আফগানিস্তানের এর আগে ২০২২ সালের জুনে একটি দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যার ফলে পাথর এবং কাদা-ইটের ঘরগুলো সমতলে মিশে যায়। গত দুই দশকের মধ্যে আফগানিস্তানে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ওই ভূমিকম্পে অন্তত এক হাজার মানুষ নিহত ও প্রায় ১ হাজার ৫০০ মানুষ আহত হয়।
আফগানিস্তানে প্রায়ই ভূমিকম্পের দুর্যোগ সৃষ্টি হয়। বিশেষত হিন্দুকুশ পর্বতমালায়, যা ইউরেশীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলের নিকটে অবস্থিত। তালেবান ক্ষমতায় ফিরে আসার পর ২০২১ সালের আগস্টে থেকে বৈদেশিক সহায়তা ব্যাপকভাবে প্রত্যাহারের কারণে আফগানিস্তানে ইতিমধ্যে একটি ভয়াবহ মানবিক সংকটের কবলে পড়ে আছে।