১৮তম বাংলা চ্যানেল সাঁতার-২০২৩
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৩২ মিনিটে ২ নারীসহ ৪৩ জন সাঁতারু বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিতে সাগরে নামেন। টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথের স্রোতোধারাটির নাম ‘বাংলা চ্যানেল। তৃতীয়বারের মতো বাংলা চ্যানেলে সাঁতারে বিজয়ী হয়েছেন, ১৬ দশমিক ১ কিলোমিটার চ্যানেলটি পাড়ি দিতে তার সময় লেগেছে ৩ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট।
১৮তম বাংলা চ্যানেল সাঁতার-২০২৩
ঢাকার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাইফুল ইসলাম রাসেল, বিশ্বের কঠিনতম ইংলিশ চ্যানেলসহ সাতটা চ্যানেল পাড়ি দিতে চাই। একদিন দেশের বাইরে লং ডিস্টেন্স সাঁতার দিয়ে বাংলাদেশের পতাকা ওড়াতে চাই। তিনি টানা তৃতীয়বারের মতো বাংলা চ্যানেলে সাঁতারে বিজয়ী হয়েছেন, ১৬ দশমিক ১ কিলোমিটার চ্যানেলটি পাড়ি দিতে তার সময় লেগেছে ৩ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৩২ মিনিটে ২ নারীসহ ৪৩ জন সাঁতারু বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিতে সাগরে নামেন। টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমপাড়া সমুদ্রসৈকত থেকে শুরু হয় সাঁতার। সাঁতার শেষ হয় সেন্ট মার্টিন দ্বীপের উত্তর সৈকতে। টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথের স্রোতোধারাটির নাম ‘বাংলা চ্যানেল।
শিক্ষক সাইফুল ইসলাম রাসেল এ বছর থাইল্যান্ডের ফুকেটে অনুষ্ঠিত ওশেনম্যান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে সপ্তম স্থান অধিকার করেছেন। রাসেল বলেন, সাঁতার নিয়ে মানুষের মধ্যে ভীতি আছে, সেটি দূর করতে কাজ করবেন তিনি। বর্তমানে রাসেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিংপুলের ট্রেনার।
এবার এই আয়োজনের নাম দেওয়া হয়েছে ‘১৮তম বাংলা চ্যানেল সাঁতার-২০২৩ এর আয়োজন করেছে ষড়জ অ্যাডভেঞ্চার ও এক্সট্রিম বাংলা। এবং সহযোগিতায় আছে বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ড, ভিসাথিং, ইউনাইটেড সিকিউরিটিজ লিমিটেড, সরকার অ্যাগ্রো ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। শাহপরীর দ্বীপ সমুদ্রসৈকতে সাঁতারে অংশ নিতে গত সোম, মঙ্গল ও বুধবার বিকেলে দল বেঁধে অনুশীলন করেন।
বাংলা চ্যানেল দশমবারের মতো পাড়ি দিয়েছেন বাংলাদেশের আয়রনম্যান মোহাম্মদ শামসুজ্জামান আরাফাত। তিনি দশমবারের মতো পাড়ি দিতে পেরে উচ্ছ্বসিত। চার ঘণ্টা ১৫ মিনিট সাঁতরে টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিন পৌঁছেছেন তিনি। এটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সাঁতার প্রতিযোগিতা। আমি প্রতিবারই অংশগ্রহণ করার চেষ্টা করছি।
এদিকে লিপটন সরকার ২০ বার বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন। এই বাংলা চ্যানেল ২০ বার পাড়ি দিয়ে একক রেকর্ড গড়েছেন লিপটন সরকার। যার মধ্যে ২০১২ সালে দুবার সাঁতরে পার হয়েছেন এই চ্যানেল। এইবার তিনি সময় নিয়েছেন ৫ ঘণ্টা ২৬ মিনিট। একক রেকর্ড গড়তে পেরে তিনি আনন্দিত। প্রতিবছর এত সাঁতারুর অংশগ্রহণে বোঝা যায়, বাংলাদেশে দূরপাল্লার সাঁতার জনপ্রিয়। বাংলাদেশকে বিশ্বে পরিচিত করে তুলতে এবং মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে বাংলা চ্যানেলে প্রতিবছর সাঁতারের আয়োজন করে ষড়জ অ্যাডভেঞ্চার। বাংলা চ্যানেল সাঁতারের প্রধান সমন্বয়ক ও ষড়জ অ্যাডভেঞ্চারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লিপটন সরকার।
আরও পড়ুন: নেইমারের কোপা আমেরিকা নিয়ে সংশয়
ভারতীয় সাঁতারু রচনা শর্মা প্রথমবারের মতো বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন। প্রথমবারে ৫ ঘণ্টায় এ চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন রচনা শর্মা। তিনি জানান, কয়েক বছর আগে বাংলা চ্যানেল সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এবার পাড়ি দিতে পেরে তিনি আনন্দিত।
সাঁতারে অংশ নেওয়া আরেক নারী বাংলাদেশের শোহাগী আক্তার। শোহাগী ৪ ঘণ্টা ২৬ মিনিটে বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন। তবে প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় হওয়া প্রতিযোগীদের চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে ছিলেন শোহাগী।
প্রয়াত কাজী হামিদুল হক বঙ্গোপসাগরে দূরপাল্লার সাঁতারের উপযোগী ১৬ দশমিক ১ কিলোমিটার দূরত্বের বাংলা চ্যানেল টি আবিষ্কার করেন, ২০০৬ সালে প্রথমবারের মতো বাংলা চ্যানেল সাঁতার অনুষ্ঠিত হয়। এবার ৪৩ জন সাঁতারুর মধ্যে দুজন সাঁতার শেষ করতে পারেননি।