স্বাস্থ্য ও পুষ্টি

অ্যালার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায়

শিশুর স্মৃতিশক্তি বাড়াবে যে খাবার

অ্যালার্জির সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে চোখ ও ত্বক চুলকানো, হাঁচি, ভরাট নাক, গলা শক্ত হয়ে যাওয়া, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, বমি হওয়া, রক্তচাপ কমে যাওয়া, মাথা ঘোরা এমনকি মূর্ছা যাওয়া। একেক জনের কাছে অ্যালার্জির লক্ষণ একেক রকমও হয়।

অ্যালার্জি হলো আমাদের শরীরের প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থার ত্রুটি। যার অ্যালার্জি আছে, তার শরীর রোগ-জীবাণুর পাশাপাশি ক্ষতিকর নয় এমন বস্তুকেও ক্ষতিকর মনে করে, তার বিরুদ্ধেও প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ক্ষতিকর নয় এমন সব বস্তুর প্রতি শরীরের এই অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়াকে অ্যালার্জি বলা হয়। এ কারণে অন্যদের জন্য ক্ষতিকর না হলেও অ্যালার্জি আছে এমন ব্যক্তির কাছে গরুর গোস্ত, ইলিশ মাছ কিংবা চিংড়ি মাছ ক্ষতিকর।

অ্যালার্জির লক্ষণ:- একেক জনের কাছে অ্যালার্জির লক্ষণ একেক রকম হয়। তবে সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে আছে চোখ ও ত্বক চুলকানো, হাঁচি, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, ভরাট নাক, গলা শক্ত হয়ে যাওয়া, রক্তচাপ কমে যাওয়া, মাথা ঘোরা, বমি হওয়া এমনকি মূর্ছা যাওয়া।

অ্যালার্জি থেকে বাঁচার উপায়:-রোগীভেদে একেকজনের একেক বস্তুতে অ্যালার্জি থাকতে পারে। কখনও পুরোপুরি দূর করা যায় না অ্যালার্জি, এর প্রকোপ কমানো যায়। যে বস্তুতে অ্যালার্জি আছে তার থেকে দূরে থাকলেই অ্যালার্জিমুক্ত থাকা সম্ভব। ধরুন, কারও চিংড়ি মাছে অ্যালার্জি তিনি চিংড়ি মাছ খাবেন না বা রেশমি কাপড়ে অ্যালার্জি, তিনি রেশমি কাপড় পরবেন না। যার যে বস্তুতে অ্যালার্জি, সেটা রোগী মনে রাখবেন এবং সেগুলো এড়িয়ে চলুন তবেই অ্যালার্জি থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব।

ঘরোয়া উপায় ত্বকের অ্যালার্জি দূর
আপেল সিডার ভিনিগার:- ভিনিগারে আছে অ্যাসিটিক অ্যাসিড। ত্বকের চুলকানি কমিয়ে অ্যালার্জির প্রকোপ দূর করতে বেশ কাজ করে এই উপাদানটি। তবে ব্যবহারের আগে দেখে নিন তাতে অ্যালার্জি আছে কি না। থাকলে ব্যবহার করা যাবে না।

টি-ট্রি অয়েল:- টি-ট্রি অয়েলে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টি-আইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা অনেক ত্বকের অ্যালার্জি থেকে মুক্তি দেয়। ত্বকের অ্যালার্জিতে টি-ট্রি অয়েল দারুণ কাজ করে।

নারকেল তেল:- অ্যালার্জির ক্ষেত্রে ত্বক সুরক্ষায় নারকেল তেলে থাকা ময়েশ্চারাইজিং। শুধু তা-ই কি, নারকেল তেল অ্যালার্জিজনিত চুলকানি কমায়। একটি বাটিতে কুসুম গরম সামান্য নারকেল তেল নিয়ে যেখানে অ্যালার্জির লক্ষণ রয়েছে, সেখানে লাগান। এক ঘণ্টা রেখে দিন, উপকার পেলে দিনে দুই বার ব্যবহার করতে পারেন।

অ্যালোভেরা জেল:- উপকার পাওয়া যায় বেশি সতেজ অ্যালোভেরা সরাসরি ত্বকে লাগালেই। ত্বকের অ্যালার্জি থেকে মুক্তি পাওয়ার সেরা উপায় অ্যালোভেরা জেল। অ্যালোভেরা ত্বকে জ্বালাপোড়া এবং চুলকানি থেকে মুক্তি দেয়।

লবণপানি:- এক গ্লাস পানিতে ৩ চা-চামচ পরিমাণ লবণ গুলে পানি ভালোমতো ফোটান। ঠান্ডা হয়ে গেলে সেই পানিতে এক টুকরা পরিষ্কার তুলা ভিজিয়ে চোখ গুলো ধীরে ধীরে মুছেন। এতে চোখে থাকা ময়লা বেরিয়ে যাবে, জ্বালাপোড়া বা চুলকানি থেকেও আরাম মিলবে।

গোলাপজল:- চোখর অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হলে ২ থেকে ৩ ফোঁটা গোলাপজল ব্যবহার করতে পারেন। চোখের অ্যালার্জিতে গোলাপজল প্রিভেন্টিভ হিসেবে কাজ করে। এতে যে ইনফেকশনের কারণে চোখ অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হয়েছে সেটি কেটে যায়। গোলাপজল দেয়ার পর কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে রাখুন। খোলা রাখলে তরলটি বেরিয়ে যাতে পারে, তাতে পুরোপুরি কাজ হবে না।

ঠান্ডা পানি:- চোখের অ্যালার্জির ক্ষেত্রেও ঠান্ডা পানি অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখে। কথায় আছে পানির অপর নাম জীবন। অ্যালার্জির কারণে চোখ ফুলে গেলে, লাল হলে বা চুলকালে বারবার ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিন। এতে যন্ত্রণার উপশম হবে।

সায়েনি:- সায়েনি অনেকটা মরিচের মতো দেখতে এটি ধরনের হার্ব। সায়েনি শরীরের রক্ত সঞ্চালন উন্নত করার পাশাপাশি টক্সিন রিলিজ করতেও সহায়তা করে। চোখের ময়লা দূর করতে এর ভূমিকা অনেক।

আমলকী ও মধু:- আমলকী পাউডারের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। প্রতি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে খান। এতে শরীরের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে এবং শরীর অ্যালার্জি মুক্ত থাকবে।

সানগ্লাস:- যেখানে বাস করেন সেটি যদি ধুলাবালিপূর্ণ এলাকা হয়, তাহলে চোখকে ডাস্ট অ্যালার্জিমুক্ত রাখতে সানগ্লাসের জুড়ি নেই। যদি আপনার অতিরিক্ত অ্যালার্জির সমস্যা থেকে থাকে অবশ্যই কোথাও বের হওয়ার আগে সানগ্লাস পরে বের হবেন।

পরিচ্ছন্নতা:- ধুলাবালি না উড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ঘর এবং বিছানা সব সময় পরিষ্কার রাখবেন। যাতে টিভি, মোবাইল ফোন ও কম্পিউটারের সামনে টানা বসে থাকবেন না। চোখ চুলকালে আঙুল দিয়ে চুলকানি থেকে বিরত থাকুন।

ঘিতে উপকার:- বিশুদ্ধ ঘি একবার এক চা-চামচ ঘি খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে গ্রহণ করলে ঠান্ডার সমস্যা কেটে যাবে। ঠান্ডাজনিত অ্যালার্জি দূর করতে খাবারের সঙ্গে ঘি খেতে পারেন।

পেয়ারা খান:- প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে পেয়ারায়। ঠান্ডাজনিত অ্যালার্জি দূর করতে এই উপাদানটি দারুণ। পেয়ারার পাশাপাশি লেবু চা বা লেবুর শরবত খেলেও উপকার পাবেন।

কালিজিরা:- রাতের খাবার কালিজিরা ভর্তা বা ঘুমানোর আছে কালিজিরার বড়ি খান। ঠান্ডাজনিত অ্যালার্জি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব কালিজিরা খেয়ে। উপকার পেলে নিয়মিতও খেতে পারেন।

ঠান্ডায় মধু:- যাদের অ্যালার্জিজনিত ঠান্ডার সমস্যার কষ্ট হয়, তারা দিনে দুই চা-চামচ মধু খেয়ে দেখুন, ঠান্ডার সমস্যা চলে যাবে। এখনও গ্রামে ঠান্ডার চিকিৎসায় মধু ব্যবহার করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *