অন্যরকম খবরতথ্য ও প্রযুক্তি

কান্নার বৈজ্ঞানিক কারণ কী কী

কান্নার বৈজ্ঞানিক কারণ কী কী

অতি সুখেও, আঘাতের ব্যথ্যা বা দুঃখ পেলেও আমাদের কান্না আসে। কান্নার সঙ্গে ব্যথা-যন্ত্রণার যেমন সম্পর্ক আছে, আবার আবেগেরও সম্পর্ক আছে। সবার আবেগ বা কান্না পাওয়ার কারণ এক নয়।

আবার কেউ কেউ অতি দুঃখেও কাঁদে না, কেউ সামান্য কারণেও কেঁদে ফেলে। কান্নার প্রবণতা বেশি বড়দের তুলনায় বাচ্চাদের আবার পুরুষের তুলনায় বেশি কাঁদে মেয়েরা।

এই কান্না আসলে কী? আমরা কাঁদিই বা কেন? মানুষ জীবনে কখনো না কখনো কাঁদেই। মস্তিষ্ক থেকেই কান্নার অনুভূতির জন্ম হয়। আমাদের চোখের কাছাকাছি অঞ্চলে মস্তিষ্কের যে অংশটি, তার নাম ল্যাক্রিমাল গ্ল্যান্ড আর সেখান থেকেই প্রোটিন, মিউকাস বা তেলতেলে নোনা জল তৈরি হয়। এ নোনা জল গুলো চোখ দিয়ে অশ্রুর আকারে বেরিয়ে আসে। এটিকেই আসলে আমরা কান্না বলে।

মস্তিষ্কের আরও একটা অংশ আছে সেরিব্রাম নামে, সেখানে দুঃখ জমা হয় বা দুঃখের অনুভূতি তৈরি হয় সেই অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ হলো কান্না। দুঃখের বা মন খারাপের কারণে শীররে একধরনের টক্সিন বা ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ তৈরি হয়। চোখের জলের সঙ্গে সেই ক্ষতিকর পদার্থ বেরিয়ে আসে। তাই সেগুলো বের করে দেয়ার জন্য কান্নার প্রয়োজন।

দুঃখ, ব্যথা ছাড়াও অনেক সময় আমরা কেঁদে ফেলি। যেমন চোখে ঝাল বা পেঁয়াজের কষ লাগলে পানি চলে আসে এটাকে কিন্তু আমরা কান্না বলি না অবশ্য। কান্নার বাহ্যিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে এর মিল আছে।

পাকলে ফলের রং বদল পরোক্ষ ও সুদূরপ্রসারী

যন্ত্রণার বা খুশির কান্নাও একই পদ্ধতিতে আসে। এন্ডেক্রিন সিস্টেম বা অন্তঃক্ষরা পদ্ধতিতে হরমোন নির্গত হয় স্রেরিব্রাম অংশ থেকে। দুঃখের কারণে জমা হওয়া ক্ষতিকর পদার্থগুলো বহন করে চোখের আশপাশের অঞ্চলে নিয়ে যায় এই হরমোনগুলো। সেখান থেকে চোখের জলের সঙ্গে টক্সিনগুলো বেরিয়ে আসে কান্নার আকারে। আসলে এটিই আবেগীয় কান্না।

রিফ্লেক্স নামে আরেক ধরনের কান্না আছে অবশ্য এই কান্নাকে সত্যিকার কান্না বলা যায় না। হঠাৎ ব্যথা পেলে, কিংবা ঝাঁঝালো কোনো বস্তু যেমন পেঁয়াজ বা সর্ষের তেলের কিংবা ধুলাবালি চোখ বা নাক দিয়ে ঢুকলে এ ধরনের কান্না তৈরি হয়।

ঝাঁঝালো কোন বস্তু চোখে ঢুকলে চোখের কর্নিয়ায় যে স্নায়ুতন্ত্র আছে সেটাতে বার্তা পাঠায়। তাই মস্তিষ্কও প্রতিরক্ষার জন্য হরমোন পাঠিয়ে দেয়ে চোখের পাতায় তখন চোখে সেগুলো অশ্রুর মতো জমা হয়। ঝাঁঝালো বস্তু, ধুলাবালি বা ক্ষতিকর পদার্থ বয়ে নিয়ে চোখ থেকে বেরিয়ে আসে অশ্রু হয়ে।

আবার আপনজনের কান্নাতে আমরা যে ভয় পেয়ে যাই, সেটা আসলে অমূলক। আসলে কান্নার মাধ্যমে ক্ষতিকর পদার্থই বেরিয়ে আসে চোখ থেকে এবং কান্নার পর মাথা অনেক সজীব হয়। ভালো লাগার অনুভূতি তৈরি হয় তাই ক্ষণস্থায়ী কান্নাকে ভয় পাওয়ার কিছুই নেই।

One thought on “কান্নার বৈজ্ঞানিক কারণ কী কী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *