স্বাস্থ্য ও পুষ্টি

ম্যাগনেসিয়ামের অভাবজনিত লক্ষণ

ম্যাগনেসিয়াম অনেক খাবার এবং পানীয়তে পাওয়া যায়। কুমড়ার বীজ, সূর্যমুখী বীজ, চিনাবাদাম। হার্টের জন্য উপকারী স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও পাবেন এগুলোতে, এগুলোকে সালাদে ছিটিয়ে দিতে পারেন। শস্যজাতীয় খাবারে প্রচুর ফাইবার এবং ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায়। পরিপূরক হিসেবে বা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খনিজটি গ্রহণ করা যায়

ম্যাগনেসিয়ামের অভাবজনিত লক্ষণ

একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ম্যাগনেসিয়াম যা আমাদের পেশী এবং স্নায়ু কীভাবে কাজ করে তা নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়াও ম্যাগনেসিয়াম শরীরের শত শত গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে। ম্যাগনেসিয়াম হাড়কে মজবুত রাখে, হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখে এবং রক্তে শর্করাকে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। এই ম্যাগনেসিয়াম অনেক খাবার এবং পানীয়তে পাওয়া যায়। পরিপূরক হিসেবে বা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খনিজটি গ্রহণ করা যায়…

ম্যাগনেসিয়ামের অভাব হলে কী হয়:-

টাইপ ২ ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং মাইগ্রেনসহ বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে প্রয়োজনের তুলনায় কম ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণ করলে। প্রাপ্তবয়স্ক, মদ্যপানকারী বা যাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিস এবং হজমের সমস্যা রয়েছে, তাদের খনিজটির অভাব হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

কতোটুকু ম্যাগনেসিয়াম প্রয়োজন:-

প্রাপ্তবয়স্ক একজন নারীর প্রতিদিন প্রায় ৩১০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম প্রয়োজন আবার ৩০ বছর বয়সের পরে প্রয়োজন ৩২০ মিলিগ্রাম ও গর্ভবতী নারীদের অতিরিক্ত ৪০ মিলিগ্রাম প্রয়োজন। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের {৩১ বছরের কম} বয়সী প্রয়োজন ৪০০ মিলিগ্রাম এবং ৩১ বছরের পরে দরকার ৪২০ মিলিগ্রাম। শিশুদের ক্ষেত্রে ম্যাগনেসিয়াম প্রয়োজন হতে পারে বয়স এবং লিঙ্গের উপর নির্ভর করে ৩০ থেকে ৪১০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত।

অতিরিক্ত ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণ:-

আপনি যদি সুস্থ থাকেন, আপনার কিডনি খাবার থেকে পাওয়া অতিরিক্ত ম্যাগনেসিয়াম বের করে দেয়। এবং শরীরে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণ করলে অত্যধিক ক্র্যাম্প বা বমি বমি ভাব হতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কখনোই সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ম্যাগনেসিয়াম গ্রহণ করবেন না।

আরও পড়ুন: ঠান্ডায় কানে ব্যথা হলে করণীয়

ম্যাগনেসিয়াম কীভাবে সুস্থ রাখে:-

ম্যাগনেসিয়াম প্রয়োজন শরীর নতুন হাড়ের কোষ তৈরিতে। আবার হাড়ের ক্ষয়, ভেঙে যাওয়া এবং হাড়ের রোগ অস্টিওপরোসিস থেকে রক্ষা করতে পারে ম্যাগনেসিয়াম এবং শরীরকে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ও ক্ষত নিরাময়ে সহায়তা করে। হার্টকে রক্ত পাম্প করতে সাহায্য করে ম্যাগনেসিয়াম। এই খনিজটির সঠিক মাত্রা অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, হৃদরোগ বা হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা কমিয়ে দিতে পারে। আবার রক্তনালীগুলোর দেয়ালকে শিথিল করে এবং রক্তচাপ কম রাখতে সাহায্য করে ম্যাগনেসিয়াম। এই খনিজটির আপনার এইচডিএল বা ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতেও সাহায্য করতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলেন ম্যাগনেসিয়াম মস্তিষ্কে ব্যথার রাসায়নিকগুলোকে ব্লক বা কম করতে সাহায্য করে ও রক্তনালী গুলোকে শক্ত হওয়া থেকে রক্ষা করে। তাই মাইগ্রেন হওয়ার ঝুঁকি থাকে পর্যাপ্ত ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে। ইনসুলিন নামক হরমোনকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে এই ম্যাগনেসিয়াম। ইনসুলিন রক্তে শর্করার মাত্রা স্থির রাখতে সাহায্য করে ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে।

কোন কোন খাবারে ম্যাগনেসিয়াম:-

প্রায় ৮০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম পাবেন এক আউন্স বাদাম বা কাজুতে। ম্যাগনেসিয়ামের উৎসগুলোর মধ্যে রয়েছে কুমড়ার বীজ, সূর্যমুখী বীজ, চিনাবাদাম। হার্টের জন্য উপকারী স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও পাবেন এগুলোতে, এগুলোকে সালাদে ছিটিয়ে দিতে পারেন। শস্যজাতীয় খাবারে প্রচুর ফাইবার এবং ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায়। পর্যাপ্ত ম্যাগনেসিয়াম পেতে চাইলে ওটমিল ও বাদামী চাল খেতে পারেন।

এছাড়াও গাঢ় পাতাযুক্ত সবুজ শাক থেকে পাবেন উপকারী এই ম্যাগনেসিয়াম। প্রায় ১৫০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে এক কাপ রান্না করা পালং শাকে, এছাড়া ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, আয়রন এবং ভিটামিন এ, সি এবং কেও রয়েছে। ছোলা, মটরশুঁটি, কিডনি বিন ম্যাগনেসিয়ামের দারুণ উৎস। ম্যাগনেসিয়াম ছাড়াও ফাইবার, প্রোটিন, আয়রন এবং জিঙ্কের উৎস এইগুলো। এছাড়াও এক কাপ সয়া মিল্ক ৬০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়ামের জোগান দিতে পারে।

তথ্য:-ওয়েবএমডি.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *