প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ভিটামিন ডি এর অভাবে কি রোগ হয়
কর্মঠ কর্মী হিসেবে কর্মক্ষেত্রে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলে নিজের শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব পূরণ করুন। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি বা শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে ভিটামিন ডি প্রয়োজন বলে শেষ করা যাবে না। ভিটামিন ডি হাড়কে শক্তোপোক্ত করার পাশাপাশি হার্ট, ব্রেন এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি ভিটামিন ডির অভাবে ওজনও বেড়ে যায়।
প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ভিটামিন ডি এর অভাবে কি রোগ হয়
ভিটামিন ডি মানসিক সুস্থতার জন্য এটি খুবই জরুরি ও শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এটি ফ্যাট সলিউবল সিকুস্টারয়েড, যার কাজ হচ্ছে ইনটিসটাইন বা অন্ত্র থেকে ক্যালসিয়াম শোষণ করা। এটি পাশাপাশি আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফরাসকেও দ্রবীভূত করে। তবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি বা শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে ভিটামিন ডি প্রয়োজন বলে শেষ করা যাবে না।
শরীর ও মনে ভিটামিন ডির ঘাটতি বিরূপ প্রভাব পরে। ফেলে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি হওয়া মানে হাড় ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়া। যা হওয়া মানেই আর্থাইটিসের মতো রোগ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা। এই ভিটামিন হাড় ও দাঁতের সুস্থতার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। ভিটামিন ডি হাড়কে শক্তোপোক্ত করার পাশাপাশি হার্ট, ব্রেন এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি ভিটামিন ডির অভাবে ওজনও বেড়ে যায়।
আরও পড়ুন: কুমড়ার বীজের উপকারিতা
তাহলে প্রশ্ন হল কীভাবে শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি পূরণ করবেন?
এ সমস্যা সহজেই দূর করতে পারেন কতগুলো সহজ পদ্ধতি অবলম্বন করার মাধ্যমেই। তাহলে জেনে নিন কিছু লক্ষণ সম্পর্কে, যেগুলোর মাধ্যমে বুঝতে পারবেন আপনার শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব আছে কিনা। অষ্টিওপরোসিস, স্তন ক্যান্সার, বিষণ্ণতা, জরায়ু ক্যান্সার এমনকি ডায়বেটিস এবং মেদ বৃদ্ধি প্রতিরোধে ভিটামিন ডি’র ভূমিকা আছে।
বিষণ্ণতা:-
ভিটামিন ডি বিষণ্ণতা বাড়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, যার ফলে সারাক্ষণ মানসিক চাপ অনুভূত হয়। তখন আপনি কারণ ছাড়াই অতিরিক্ত বিষণ্ণতায় ভুগতে পারেন। ভিটামিন ডির অভাবে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায় এবং মানুষ এমনি এমনি রেগে যায়।
মাংসপেশির দুর্বলতা:-
মাংসপেশীর দুর্বলতা বেড়ে যায় ভিটামিন ডির অভাবে। বিশেষ করে মাংসপেশি বেড়ে যাওয়া বা মাংসপেশি কাঁপার মতো সমস্যাগুলো হয়ে থাকে। কাজেই মাংসপেশির দুর্বলতা কাটাতে নিয়মিত ভিটামিন ডি খাওয়া জরুরি।
হাড়ে ফাটল:-
ভিটামিন ডির অভাব হলে হাড়ে সহজেই ফাটল ধরে। এর ফলে একটু পড়ে গেলে কিংবা সামান্য আঘাত পেলেই হাড়ে চির ধরে যায়। অনেকের আবার হাড়ে প্রচণ্ড ব্যথা করলেও বুঝবেন আপনার শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব রয়েছে।
উচ্চরক্তচাপ:-
উচ্চরক্তচাপের মাত্রা আরও বেড়ে যেতেও পারে ভিটামিন ডি-এর অভাবে। তাই সময় থাকতেই সচেতন হোন এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খান।
ক্লান্তি ও ঘুম আসে:-
অতি সহজেই অনেক ক্লান্তি নেমে আসে ভিটামিন ডির অভাবে, ফলে ঘুম পায়। কর্মঠ কর্মী হিসেবে কর্মক্ষেত্রে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলে নিজের শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব পূরণ করুন।
দাঁত ভেঙে যায়:-
ভিটামিন ডি-এর অভাবে দাঁত ক্ষয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ভেঙেও যায় বা আপনার দাঁতে সমস্যা যেন লেগেই আছে। শক্ত কোনো কিছুই খেতে পারেন না, তাহলে বুঝবেন আপনার শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব রয়েছে।
মেজাজে প্রভাব ফেলে:-
যে কোনো মানুষের মেজাজ-মর্জিতে প্রভাব পরতে পারে ভিটামিন ডি-এর অভাবে, এবং এ সময় মনের মধ্যে চাপা অশান্তি কাজ করে। যার ফলে সবসময় মেজাজ রুক্ষ থাকে ভালো কথা বললেও প্রচণ্ড রাগে যায় কেউ কেউ। কারও সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার আগেই শরীরে ভিটামিন ডি-এর চাহিদা অভাব পূরণ করুন।
অনেকেই নিজেরাও জানেন না তারা ভিটামিন ডি-এর অভাবে ভুগছেন। তাই আপনি যদি নিজের মধ্যে উপরোক্ত লক্ষণগুলো বুঝতে পারেন তাহলে এর মাত্রা জানতে সঙ্গে সঙ্গে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ বা শরীর চেকআপ করে নিন।
ভিটামিন ডি-এর উৎস
ভিটামিন ডি-এর অন্যতম উৎস সূর্যের আলো। ভিটামিন ডি-এর অভাব পূরণের জন্য হালকা রোদে সামান্য ব্যায়ামও করতে পারেন। সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত রোদ সবচেয়ে ভালো, সূর্যের কড়া আলোতে না গিয়ে হালকা রোদ গায়ে লাগান। এই সময় সূর্যের যে আলো আসে, সেটি ভালো। শীতকাল নয়, সব ঋতুতেই যদি আমরা কিছুক্ষণের জন্য রোদে বসি ৫ মিনিট থেকে আধা ঘণ্টা পর্যন্ত সপ্তাহে ২/৩ বার, তাহলে উপকৃত হওয়া যায়।
আরও পড়ুন: বিস্কুট খেলে কি ওজন বাড়ে
এছাড়া নিয়মিত ৫টি খাবারেও ভিটামিন ডি দেহে তৈরি হয়:
* ডিম:- নিউট্রিশনিস্টদের মতে ডিমের ভেতরে প্রোটিন এবং উপকারি কোলেস্টেরলের পাশাপাশি ভিটামিন ডি-ও রয়েছে। শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি মেটাতে চাইলে রোজের ডায়েটে ডিম থাকা জরুরি। তাই শরীরকে কর্মক্ষম রাখতে ও হাড়ের নানাবিধ রোগ দূর করতে রোজ ডিম খাওয়া উচিত।
* চিজ:- শরীরে ভিটামিন ডি তৈরি করতে গেলে চিজ খান। শরীরে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বাড়ে চিজ খেলে।
* সামুদ্রিক মাছ:- মাছের তেলে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়, তাই যথেষ্ট পরিমাণে সামুদ্রিক মাছ খান।
* মাশরুম:- মাশরুমেও বেশ ভিটামিন ডি পাওয়া যায়, খাওয়ার আগে অবশ্যই মাশরুম ভালো করে ধুয়ে রান্না করবেন। তবে অ্যালার্জির প্রবণতা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
* দুধ খাওয়া জরুরি:- দুধেও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি রয়েছে। তাই শরীরের ভিটামিন ডি-এর যোগান বৃদ্ধি করার জন্য দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার খাওয়া জরুরি।
Pingback: ইলেক্ট্রোলাইট এর অভাবে মাথাব্যথা হতে পারে - amaderkhabar
Pingback: কোরিয়ান স্কিন কেয়ার রুটিনের ধাপগুলো - amaderkhabar