স্বাস্থ্য ও পুষ্টি

চর্বি কমাতে সহায়ক খাবার

দেহের বাড়তি মেদ কমাতে খাদ্যাভ্যাসের দিকেও নজর দিতে হবে শুধু শরীরচর্চা নয়। আর এমন খাবারই খাওয়া উচিত যা বার বার খাওয়ার ইচ্ছা কমাবে। অন্য দিকে যোগাবে পুষ্টি।

লেবুর পানি: চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে লেবু দেহে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও যোগায়। দেহের বিপাক বাড়াতে পানি সহায়তা করে। সাউথওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ অফ হর্টিকালচার অ্যান্ড ল্যান্ডস্কেপ আর্কিটেকচার চীনের করা গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিপাক প্রক্রিয়ার গোলমাল সারাতে সাহায্য করে ফলে চর্বি পোড়ানোর পরিমাণ বাড়ে।

পেয়ারা: ওজন কমাতে চাইলে খাবার তালিকায় পেয়ারা রাখুন। পেয়ারা ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এক কাপ পেয়ারায় ৪ গ্রাম তৃপ্তিকারী প্রোটিন থাকে।

সরিষা: ইংল্যান্ডস অক্সফোর্ড পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটয়ের বিজ্ঞানীরা দেখেছেন যে, ওজন কমাতে সরিষা উপকারী। এক চা-চামচ সরিষা খাওয়া ঘন্টায় ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বিপাক বাড়ায় যা ওজন কমাতে সহায়ক।

বাদামের বাটার: বাদান বা পিনাট বাটার পেটের মেদ কমাতে উপকারী। কেননা এটা মনোস্যাচুরেইডেটেড ফ্যাট ও প্রোটিন সমৃদ্ধ।

ডার্ক চকলেট: লুইজিয়ানা স্টেট ইউনিভার্সিটির করা এক গবেষণার ফলাফলের ভিত্তিতে ইটদিস নট দ্যাট ডটকমের প্রতিবেদনে জানানো হয়, চকলেট শরীরের অন্ত্রে-স্বাস্থ্যকর পলিফেনলিক যৌগ বাড়িয়ে তুলতে পারে ও একটি ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যা প্রদাহের সঙ্গে যুক্ত জিনকে বন্ধ করে দেয় এবং শরীরের জ্বালানী হিসাবে চর্বি পোড়াতে সাহায়তা করে।

কফি: সাইকোলজি অ্যান্ড বিহেইভিয়ারর সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে যারা ক্যাফেইনযুক্ত কফি পান করে তাদের বিপাক হার অন্যদের তুলনায় ১৬ শতাংশ বেশি। কালো কফি বিপাক বাড়াতে সহায়তা করে, এতে বাড়তি ক্রিম বা কৃত্রিম মিষ্টি যোগ করা হলে ফলাফল ভিন্ন হয়।

চকলেট দুধ: শরীরচর্চার সময় পেশি চর্বির চেয়ে বেশি ক্যালরি পোড়ায়। তবে চকলেট দুধ নির্বাচন করার সময় চিনির পরিমাণ কম থাকে সেদিকে খেয়াল রাখুন। কম চর্বি-জাতীয় চকলেট দুধের প্রতি এক কাপে ৮ গ্রাম প্রোটিন থাকে যা শরীরচর্চার আগ খাওয়ার জন্য বেশ উপযোগী।

পনির: ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডো হেল্থ সায়েন্স সেন্টারয়ের সেন্টার ফর হিউম্যান নিউট্রিশনয়ের করা গবেষণা থেকে জানা যায় পনিরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে। দুধের তৈরি খাবার দেহের ওজন কমাতে সহায়ক।তাই নাস্তায় পনিরের সঙ্গে আঁশ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উপকারী।

কাঠ-বাদামের মাখন: জার্নাল অফ দ্যা আমেরেকিন হার্ট অ্যাসোসিয়েশন জার্নালে প্রকাশিত দি পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির করা গবেষণা থেকে জানা যায়, প্রতিদিন ১.৫ আউন্স কাঠ বাদাম খাওয়া পেট ও পায়ের মেদ কমাতে সহায়তা করে। কাঠ বাদামের মাখন অনেকক্ষণ পেট ভরা রাখে।

লাল আপেল: যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েক ফরেস্ট ব্যাপটিস্ট মেডিকেল সেন্টারয়ের গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি ১০ গ্রাম দ্রবণীয় আঁশ যারা গ্রহণ করে তাদের পাঁচ বছরে ৩.৭ শতাংশ চর্বি কমাতে সহায়তা করে। এই ফলে রয়েছে দ্রবণীয় আঁশ যা পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করে।

কাঁচা কলা: সুস্থ অন্ত্রের ব্যাক্টেরিয়া তৈরি করতে সাহায্য করে, যা অনেকক্ষণ পেট ভরা রাখে। এতে রয়েছে ভিটামিন বি-সিক্স যা শক্তি যোগায়। অল্প কাঁচা কলা রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ সমৃদ্ধ যা হজমে সহায়তা করে।

বাঁধাকপি: পুষ্টিবিজ্ঞানের তথ্যানুসারে এই সবজি কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমাতে পারে। বাধাকপি যে আঁশে পরিপূর্ণ সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। খাওয়ার পর হজমের জন্য পিত্তথলি থেকে পাচক রস বের হয়। আর এই রসকে চর্বি গ্রহণে বাধা দিতে পারে বাঁধাকপি।

লাল মরিচ: আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনয়ে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে মরিচের মধ্যে পাওয়া ক্যাপসাইসিন নামক যৌগ প্রতিদিন খাওয়া পেটের চর্বি কমানোর গতি বাড়ে। ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ড সমৃদ্ধ যা মানসিক চাপ সৃষ্টিকারী হরমোনের মাত্রা কমায়। বেশি চাপে থাকলে কর্টিসলের মাত্রা বাড়ে যা পেটের চর্বি জমাট বাঁধায় লাল মরিচ খাওয়া এই সমস্যা সমাধানে সহায়ক।

কিডনি বিন: প্রোটিনের মাত্রা বেশি থাকে ও চর্বি কম। মটর খাওয়া পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে ও মেদ কমাতে সহায়তা করে। দ্রবণীয় আঁশ পেটের মেদ কমায় এবং কিডনি বিন দ্রুত পেটের মেদ কমাতে সহায়তা করে।

2 thoughts on “চর্বি কমাতে সহায়ক খাবার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *