চালের মজুদ পর্যাপ্ত রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার প্রভাব নেই
চালের মজুদ পর্যাপ্ত রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার প্রভাব নেই
চাল রপ্তানিতে ভারত নিষেধাজ্ঞার কোনো প্রভাব দেশের চালের বাজারে পড়েনি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পর্যাপ্ত মজুদ থাকায় বাজারে চালের দাম বাড়েনি। মোটা ও চিকন কোনো ধরনের চালের দাম বাড়েনি। পাইকারি ও খুচরা বাজারে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে চালের দাম।
চাল ব্যবসায়ীরা মনে করেন দুই কারণে এখনই চালের দাম বাড়ছে না। একটি হচ্ছে, দেশে উৎপাদিত চালের এখন ভরা মৌসুম এবং সরকারি গুদামে চালের পর্যাপ্ত মজুদ। বাড়তি চাহিদা তৈরি না হওয়ায় চালের বাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। কারণ কৃষকের ঘরে ঘরে এখন চাল আছে। ফলে একই সঙ্গে সরকার বিভিন্ন কর্মসূচিতে চাল দেওয়ার পরিধি বাড়িয়েছে। ফলেও বাজারে মোটা চালের চাহিদা কমেছে। কেউ যাতে আগামীতে চালের বাজার নিয়ে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে না পারে সে জন্য বাড়তি মজুদ নিশ্চিত এবং বাজার তদারকির পরামর্শ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের।
চাক্তাই চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেন, গত ২ মৌসুমে চালের বেশ ভালো উৎপাদন হয়েছে। সরকারের গুদামে পর্যাপ্ত চাল আছে। বেসরকারি এবং কৃষকদের ঘরেও আছে বিপুল চাল। প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হলে এবং কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি না করলে দাম বাড়ার কোনো সম্ভাবনা দেখছি না।
তিনি আরও বলেন, রোপা আমনের চাল বাজারে আসবে আগামী দুই মাস পর। বর্তমান মজুদের চাল দিয়ে বাজার সামাল দেওয়া যাবে তত দিন পর্যন্ত। অন্য আরেক চাল ব্যবসায়ী কিছুটা ভিন্নমত জানান তিনি বলেন, গত বছর ভারত থেকে বেসরকারি উদ্যোগে চাল আমদানির যে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল খুব একটা সাড়া মেলেনি এর প্রধান কারণ দেশের তুলনায় সেখানে (ভারত) চালের দাম বেশি। দফায় দফায শুল্ক কমানোর পরও বেশি দামে চাল দেশে এনে বাজার ধরা যায়নি। এখনো আমাদের দেশের তুলনায় ভারতে চালের দাম বেশি। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে চালের পর্যাপ্ত মজুদ দেশে আছে। আর দেশে চালের উৎপাদনও বেশ ভালো। রোপা আমন না উঠা পর্যন্ত এই মজুদ চাল দিয়েই চলবে দেশ।
খাতুনগঞ্জ, চাক্তাই ও পাহাড়তলী চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, আড়তে কেজি ৫২/- থেকে ৫৫/- টাকায় মোটা স্বর্ণা কিংবা পাইজাম চাল বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি আকারের চাল যেমন, বিআর-২৮, বিআর-২৯ চাল বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৫৮/- থেকে ৬০ টাকা। ৬৫/- থেকে ৮০/- টাকা কেজি নাজিরশাইল, মিনিকেট চাল ৬২/- থেকে ৬৬/- টাকা এবং বিআর-২৮ নম্বর চাল বিক্রি করছি ৫২/- থেকে ৫৫/- টাকা কেজিতে।
কিন্ডারগার্টেন ও প্রাথমিক বিদ্যালয় নিবন্ধন ছাড়া চালানো যাবে না
২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিগত দুই মাসে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে কোনো ধরনের চাল আমদানি হয়নি। তবে গত ১১ জুলাই বিদেশ থেকে এগার লাখ টন খাদ্যশস্য আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার যার মধ্যে ৫ লাখ টন চাল ও ছয় লাখ টন গম। তিন লাখ টন চাল সরকার থেকে সরকার (জিটুজি) পর্যায়ে, আর আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ২ লাখ টন চাল কেনা হবে। গমের ক্ষেত্রে জিটুজি ভিত্তিতে সাড়ে ৪ লাখ টন ও আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রে দেড় লাখ টন গম সংগ্রহ করা হবে। দ্রুত খাদ্যশস্য আমদানি করে দেশের গুদামে পৌঁছানো নিশ্চিত করতে এখন সময় কমিয়ে দ্রুত করা হয়েছে। পত্রিকায় দরপত্র প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে আগ্রহীদের দরপত্র জমা দিতে হবে। আগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ৪৫ দিনের মধ্যে দরপত্র জমা দেওয়া যেত।
খাদ্য অধিদপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ভিজিএফ, ভিজিডি, ওএমএস এবং সর্বশেষ টিসিবির মাধ্যমেও আমরা ১ কোটি পরিবারকে চাল দিচ্ছি ৩০ টাকা কেজি দরে। এই ১ কোটি পরিবার মানে সরাসরি পাঁচ কোটি মানুষ সুফল পাচ্ছে। ফলে বাজারে চালের চাহিদা কমে গেছে। এটি অব্যাহত থাকবে ফলে বাজার নিয়ন্ত্রণে এই উদ্যোগ বেশ সহায়ক হয়েছে।
সরকারি হিসাবে, চালের মজুদ আগস্ট পর্যন্ত আছে ১৫ লাখ ৭৮ হাজার টন, ৫৭ হাজার টন ধানের মজুদ ও গমের মজুদ আছে দুই লাখ টনের বেশি। আগস্ট পর্যন্ত দেশে উৎপাদিত ধান-চাল থেকে ১৩ লাখ ৫০ হাজার টনের বেশি সরকার সংগ্রহ করেছে।