যখন ঘুমিয়ে থাকি
যখন ঘুমিয়ে থাকি
আপনার বয়স যদি ৩০ হয়, নিশ্চিত থাকুন, আপনি কমপক্ষে দশ বছর ঘুমিয়ে কাটিয়েছেন। আবার এরচেয়ে বেশি ঘুমালেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। আমরা কেন ঘুমাই আমরা? আপাতদৃষ্টিতে মনে হয়, আলস্যের ফসল বুঝি ঘুম। তবে আসলে তা নয়।
অবিরাম কাজ করতে পারে না আমাদের শরীর নামক যন্ত্রটা, তেমনি মস্তিষ্কের সব অংশ দীর্ঘসময় বা একটানা কাজ করতে পারে না। মস্তিষ্কের সব অংশ একই সঙ্গে সমানভাবে সক্রিয়ও থাকতে পারে না। গোটা শরীরটাকে চালায় মস্তিষ্ক।
আমরা যখন কাজকর্ম করি, জেগে থাকি, এর জন্য হাত, পা, চোখ, কানের ওপর মস্তিষ্ককে বাড়তি গুরুত্ব আরোপ করতে হয়। আবার কিছু অঙ্গ আছে, সেগুলো চব্বিশ ঘণ্টা সচল থাকে যেমন- কিডনি, লিভার, হার্ট ইত্যাদি। ঘুমের সময়ও এই অঙ্গ সচল থাকে।
কিন্তু মস্তিষ্কের নিজের জন্যও তো কিছু সময় দরকার হয়। ধরুন, আমাদের মেমোরি কার্ড যেটাকে আমরা স্মৃতি বলি। আমাদের বহু পুরোনো স্মৃতি মনে থাকে কেন? কারণ, স্মৃতি গুলো মস্তিষ্ক বিশেষভাবে সংরক্ষণ করে রাখে।
মরিচ ঝাল লাগে ক্যাপসিনের জন্য
আবার আমাদের ১/২ দিন আগে ঘটা কোনো ঘটনা হয়তো মনে করতে গিয়ে খাবি খাই। কেন? এ জন্যই মস্তিষ্ককে নিজের জন্য কিছু কাজ করতে হয়। মস্তিষ্ক ঘটনার গুরুত্ব অনুসারে স্মৃতিগুলো সাজায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতি, কম গুরুত্বপূর্ণ আর অগুরুত্বপূর্ণ স্মৃতির এই শ্রেণি বিভাগ, সেই অনুযায়ী সাজানোর জন্য মস্তিষ্কের একান্ত কিছু সময় দরকার হয়।
একান্ত কিছু সময় জন্যই মস্তিষ্ক আমাদের ঘুম পাড়িয়ে দেয়। অন্যদিকে শরীরের পেশিগুলোর বেড়ে উঠা, পরিশ্রমের ধকলে ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যুগুলোকে ঠিক করা, এই সকল কাজও মস্তিষ্ক করে আমরা যখন ঘুমিয়ে থাকি। এ ছাড়াও হরমোনের কর্মকাণ্ড ঘুমের সময় সবচেয়ে সচল থাকে।
তাই এই কাজগুলো করার জন্য মস্তিষ্ক শরীরের অন্য কর্মকাণ্ডগুলো বন্ধ করে দেয়, শরীরে ক্লান্তি অনুভব, এবং ধীরে ধীরে ঘুম চলে আসে চোখে। আবার যাদের ঘুমের সমস্যা আছে, তারা কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে মোটেও সুখি নন। দীর্ঘ সময় না ঘুমালে মানুষের মস্তিষ্কবিকৃতি ঘটতে পারে।
সূত্র:- Why We Sleep, and Why We Often Can’t.
Pingback: পানি কিভাবে আগুন নেভাতে সাহায্য করে - amaderkhabar