পানি কিভাবে আগুন নেভাতে সাহায্য করে
পানি কিভাবে আগুন নেভাতে সাহায্য করে
আগুন লেগেছে চারপাশে ভয়ার্ত চিৎকার আগুন লেগেছে আগুন। আবার এর মধ্যে কিছু মানুষকে দেখবেন চিৎকার না করে বালতি হাতে ছুটছে, পানি এনে ছুড়ে দিচ্ছে আগুনে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ঢালার পর দেখা যায়, একসময় আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে ও নিভে যায় আগুন। তবে পানি দিলে আগুন নিভে যায় কেন?
আবার সব আগুন পানিতে নেভে না বলতে পারেন, আগুনের আবার বিভিন্ন রকমের হয় নাকি? আগুন সব একই কিন্তু কিসে আগুন লাগছে সেটাও একটা ব্যাপার।
কাগজ, কাঠ, বাঁশ, কাপড়, প্লাস্টিক, রাবার এসব বস্তুতে আগুন লাগলে পানি দিলে নেভে। বৈদ্যুতিক বা তেলের কারণে যেসব আগুন জ্বলে সেগুলো পানিতে নেভে না। কেন নেভে না?,
বরং পানিতে কেন আগুন নেভে, সে বিষয়টা দেখে নেওয়া যাক।
আগুন জ্বলার তিনটি শর্ত আছে, অক্সিজেন, তাপ ও দাহ্য বস্তু। এই তিনটির যেকোনো একটি অনুপস্থিত থাকলে আগুন জ্বলবে না। এমনি আগুন জ্বলার পর এই তিনটির যে কোনো একটিকে সরিয়ে দিতে পারলেই আগুন নিভে যায়। আগুন নেভানোর সময় সেই চেষ্টাটাই করা হয়। পানির অণুতে আছে ২ টি হাইড্রোজেন ও একটি অক্সিজেন পরমাণু। হাইড্রোজেন নিজে একটি দাহ্য পদার্থ। অপর দিকে অক্সিজেন নিজে জ্বলে না, কিন্তু সে অন্যকে জ্বলতে সাহায্য করে থাকে। সেই হিসেবে পানি দিলে আগুন আরো বেশি জ্বলার কথা, উল্টো নিভে যায় কেন?
শক্তিশালী বিদ্যুৎচুম্বকীয় বন্ধন রয়েছে পানিতে থাকা অক্সিজেন আর হাইড্রোজেনের মধ্যে। কিছু বিশেষ প্রক্রিয়াতে পানি শুধু অন্য পদার্থের সঙ্গে বিক্রিয়া করে। তবে আগুন জ্বলার যে শর্ত তাতে অক্সিজেন আর হাইড্রোজেন মুক্তভাবে থাকলেই কেবল তা দিয়ে আগুন জ্বালানো যেত। কিন্তু পানিতে শক্তিশালী বন্ধন তৈরি করে থাকে বলে এরা সরাসরি জ্বলন্ত আগুনে সক্রিয়তা দেখাতে পারে না। উল্টো আগুন নেভাতে সাহায্য করে।
আগুন জ্বালাতে গেলে অবশ্যই তাপ, অক্সিজেন ও দাহ্য পদার্থ এই তিনটা জিনিস একসঙ্গে থাকতে হবে আগেই বলেছি। তাপ, অক্সিজেন ও দাহ্য পদার্থ এই তিনের কোনোটা অনুপস্থিত থাকলে আর আগুন জ্বলবে না, বরং নিভে যাবে।
যখন ঘুমিয়ে থাকি
ধরা যাক, কাঠে আগুন লেগেছে তার মানে তিনটি শর্তই এখানে উপস্থিত। আমরা এখন পানি ঢালব। আমাদের সবারই জানা, পানিতে তাপ দিলে একসময় বাষ্পে পরিণত হয়। আমরা যখন কাঠে পানি ঢালবো তখন সেই পানি আগুনের তাপে বাষ্পীভূত হবে। আর এ জন্য তাপ দরকার সেই তাপ পানি কাঠ থেকে টেনে নিচ্ছে। তার ফলে কাঠের তাপমাত্রা কিছুটা কমছে। সুতরাং আগুনের তেজ কিছুটা হলেও কমবে এ ক্ষেত্রে।
অপর দিকে পানি বাষ্পীভূত হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে কাঠের চারপাশে তখন আশপাশের অক্সিজেন কাঠের কাছ পর্যন্ত পৌঁছতে পারছে না। এবং অক্সিজেনের প্রবাহ খুব কমে যাচ্ছে। অক্সিজেন না থাকলে কখনোই আগুন জ্বলতে পারবে না। সুতরাং আগুন একসময় নিভে যাবে। পানি আগুন নিভতে এই কৌশলেই ব্যবহার করে। সাবধান; বিদ্যুৎ বা তেল থেকে ছড়িয়ে পড়া আগুনে পানি ঢালবেন না, তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে।
সূত্র:- হাউ ইটস ওয়ার্কস।
Pingback: দেহঘড়ি বা সার্কাডিয়ান প্রভাব গাছেরও - amaderkhabar