স্বাস্থ্য ও পুষ্টি

রমজান সামনে রেখে ফলের দামে আগুন…

রমজান সামনে রেখে ফলের দামে আগুন…

আমদানিতে অতিরিক্ত শুল্কারোপ, ডলার সংকট, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি। এরই মধ্যে রমজান ঘিরে বাড়তি মুনাফা করার ছক তৈরি করছে খুচরা ফল বিক্রেতা সিন্ডিকেটর সদস্যরা। পাইকারি বাজার থেকে কম মূল্যে ফল কিনলেও খুচরা পর্যায়ে উচ্চমূল্যে বিক্রি করছে তারা ।
এতে পরিবারের জন্য যারা নিয়মিত ফল কিনতেন, তারা বাজারের তালিকা থেকে এই পণ্যটি বাদ দিচ্ছেন। এবং খুব প্রয়োজন হলে খরচ সমন্বয় করে একটি-দুটি করে ফল ওজন দিয়ে কিনছেন। এই পরিস্থিতিতে বাড়তি মূল্যের কারণে ভোক্তাসাধারণ ইফতারে ফল খাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন।

xr:d:DAFchzCVuK0:12,j:355522566,t:23030719

রাজধানীর পাইকারি আড়তগুলোতে ক্রাউন আপেল ২০ কেজির বাক্স বিক্রি হচ্ছে ৩৯০০/- থেকে ৪২০০/- টাকা। সেই হিসাবে পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজির দাম হয় ১৯৫/–২১০/- টাকা। তবে রাজধানীর খুচরা বাজারে এই ক্রাউন আপেল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা, যা গত বছর একই সময় প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ১৭০/–১৮০/- টাকায়। পাইকারি আড়তে ১৫ কেজির বাক্সে মাল্টা মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৩৫০/–২৬০০/- টাকায়, যা প্রতি কেজির দাম হয় ১৫৫/–১৭৫/- টাকা। তবে খুচরা বাজারে এই একই মাল্টা বিক্রি হচ্ছে ২১০/–২৩০/- টাকা। পাইকারি আড়তে নয় কেজি ওজনের বাক্সে চায়না কমলা বিক্রি হচ্ছে ১৭৫০/- -১৮০০/- টাকায়, যার প্রতি কেজির দাম হয় ১৯৪/–২০০/- টাকা। তবে খুচরা বাজারে এই একই কমলা বিক্রি হচ্ছে ২৬০/- -২৮০/- টাকায়।

এছাড়া বাদামতলীর আড়তে ৪ থেকে ৫ কেজি ওজনের তরমুজ ১০০ পিস বিক্রি হচ্ছে ৮,০০০/- থেকে ১০,০০০/- টাকা। সে ক্ষেত্রে প্রতি পিস তরমুজের পাইকারি মূল্য হয় ৮০/- থেকে ১০০/- টাকা। তবে রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে পিস হিসাবে কোথাও তরমুজ বিক্রি করতে দেখা যায়নি। বিক্রেতারা খুচরা পর্যায়ে ৪-৫ কেজি ওজনের প্রতি পিস তরমুজ খুচরা ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছেন ৫০/- টাকা কেজি দরে। এতে ৫ কেজির একটি তরমুজের দাম পড়ছে ২৫০/- টাকায়। অথচ আড়ত থেকে খুচরা ব্যবসায়ীরা প্রতি পিস তরমুজ কিনছেন ১০০/– ১২০/-।

তেমনই একজন ক্রেতারা বলেন গেল বছর প্রতি সপ্তাহে ফল কিনতাম। বছরের তুলনায় সব ধরনের ফলের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। পাশাপাশি রোজা সামনে রেখে বিক্রেতারা হঠাৎ করেই দাম আরও বাড়িয়েছে। তাই সংসারের সব খরচ মিটিয়ে এখন আর ফল কেনা হয় না। কিন্তু রোজা রেখে ইফতারে ফল না রাখলে চলে না। এবার উচ্চমূল্যের কারণে মনে হচ্ছে ইফতারে ফল রাখা হবে না।

ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, বিদেশি ফলকে বিলাসপণ্য দেখিয়ে অতিরিক্ত ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এতে গেল বছর রোজার আগে ঠিক একই সময়ের তুলনায় সব ধরনের ফলের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। এবং বিক্রেতাদের সিন্ডিকেট অতি মুনাফার লোভে দাম আরও বাড়াচ্ছে পর্যাপ্ত তদারকি না থাকায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। তাই শিগগিরই ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে ভোগান্তিতে পড়বে ভোক্তারা।

ব্যবসায়ীরা বলেন, আমরা আমদানিকারকদের কাছ থেকে যে দরে ফল কিনি, পরে কিছু কমিশনে বিক্রি করে দিই। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, রোজা উপলক্ষ্যে খুচরা বিক্রেতারা সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। তারা আমাদের কাছ থেকে কম দামে ফল নিলেও খুচরা পর্যায়ে দ্বিগুণ দামে বিক্রি করছে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, ফলের বাজারেও অভিযান পরিচালনা করা হবে। অনিয়ম পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় আনা হবে। রোজা ঘিরে একটি রোডম্যাপ অনুযায়ী বাজারে তদারকি করা হচ্ছে। একই সময় বিভিন্ন বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অনিয়ম পেলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *