গ্রামাঞ্চলে অত্যন্ত পরিচিত হলেও শহরাঞ্চলে এটি একটি অপ্রচলিত ফল ডেউয়া। কাঁঠালের মতো ভেতরে হলুদ রঙের ছোট ছোট কোষ থাকে ডেউয়া ফলে। কাঁচা টক টক স্বাদ, কিন্তু পাকলে সেটা তখন অন্য স্বাদ। তবে সেটা টকও নয়, আবার মিষ্টিও নয়। ফলটি রান্না করেও খাওয়া যায়। মানুষের কাছে বিভিন্ন নামে পরিচিত যেমন. ঢেউয়া, ডেউফল, ডেলোমাদার, ঢেউফল ইত্যাদি নামেও ডাকা হয়।

ডেউয়া ফলের উপকারিতা

আমাদের দেশি অনেক ফল আছে, যাদের রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। তেমন একটি ফল, গ্রামাঞ্চলে অত্যন্ত পরিচিত হলেও শহরাঞ্চলে এটি একটি অপ্রচলিত ফল ডেউয়া। এ ফলের দিন দিন চাহিদা অনেক বেড়েছে আবার বিদেশেও এসব ফল রপ্তানি হচ্ছে। আবার অঞ্চলভেদে এই ফল মানুষের কাছে বিভিন্ন নামে পরিচিত যেমন. ঢেউয়া, ডেউফল, ডেলোমাদার, ঢেউফল ইত্যাদি নামেও ডাকা হয়।

প্রায় পাতাহীন ডালপালায় মার্চ মাসে ডেউয়ার ফুল আসে আর আগস্ট মাসে ফল পাকে। কাঁঠালের মতো ভেতরে হলুদ রঙের ছোট ছোট কোষ থাকে ডেউয়া ফলে। ডেউয়া পাকলে ফলটি অতি মোলায়েম হয়, ফলটির গা উঁচু-নিচু হয়, পুরোপুরি গোলাকার হয় না, পাকা ফলের ভেতরের শাঁস লালচে হলুদ হয়ে থাকে। কাঁচা টক টক স্বাদ, কিন্তু পাকলে সেটা তখন অন্য স্বাদ। তবে সেটা টকও নয়, আবার মিষ্টিও নয়। ফলটি রান্না করেও খাওয়া যায়। কাঁঠাল ও ডেউয়ার পুষ্টিগুণ অনেকটা কাছাকাছি।

ডেউয়ার পুষ্টিগুণ:-

প্রায় ০.৮ গ্রাম খনিজ, ৬৬ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি, ০.৭ গ্রাম আমিষ, ১৩.৩ গ্রাম শর্করা, ৫০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ০.৫ মিলিগ্রাম লৌহ, ০.০২ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-১, ০.১৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-২, ১৩৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি ও পটাশিয়াম ৩৪৮.৩৩ মিলিগ্রাম।

ডেউয়ার উপকারিতা:-

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে:- ডেউয়া ফলের রস কোষ্ঠকাঠিন্য ও গ্যাসের কারণে পেটব্যথা কমাতে সহায়তা করে। এ ছাড়া যকৃতের নানা অসুখ নিরাময়ে সাহায্য করে ডেউয়া ফলের রস।

ত্বকের রুক্ষতা দূর করে:- ডেউয়া গাছের ছালের গুঁড়ো ত্বকের রুক্ষতা দূর করে ও ব্রণের দুষিত পুঁজ বের করে দেয়।

মেদ কমানো:- মেদভুঁড়ি কমাতে ডেউয়া ফলের রস ১ থেকে দেড় চামচ ঠান্ডা পানিতে মিশিয়ে প্রতিদিন ১ বার করে এক মাস খেলে উপকার পাবেন।

সানস্ট্রোক রোধ:- লবণ, মরিচ, চিনি দিয়ে ডেউয়া ফল ভর্তা খেলে সানস্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়।

স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়:- ডেউয়া ফলের বিদ্যমান পটাশিয়াম রক্ত চলাচলে সহায়তা করে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমায়।

মুখে রুচি আনতে:- ডেউয়ার রস দু-তিন চামচ সঙ্গে একটু লবণ ও গোলমরিচের গুঁড়া মিশিয়ে দুপুরবেলা ভাত খাওয়ার আগে খেলেই মুখে রুচি আসবে।

বমি ভাব দূর করতে:- বমি বমি ভাব দূর করতে দূর করতে ডেউয়া ফল খান অচিরেই বমি বমি ভাব দূর হয়ে হবে।

পেটে বায়ু জমলে:- তাছাড়া ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে ও পেট পরিষ্কার করতেও ডেউয়া খুবই কার্যকর। পাকা ডেউয়ার রস দেড় চামচ আধা কাপ পানিতে মিশিয়ে অল্প চিনি দিয়ে প্রতিদিন একবার ১ সপ্তাহ খেলে পেটের বায়ুর সমস্যা পুরোপুরি দূর হবে।

আরও পড়ুন: কাঁচা মুরগির মাংস কতদিন ফ্রিজে রাখা উচিত

স্মৃতিশক্তি বাড়ায়:- ডেউয়া নিয়মিত খেলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে ও অতিরিক্ত পিপাসা দূর হয়।

ডেউয়ার ভিটামিন সি:- ডেউয়া ফলের বিদ্যমান ভিটামিন সি ত্বক, চুল, নখ, দাঁত ও মাঢ়ির নানা রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। ডেউয়াতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম যা দাঁত ও হাড়ের ক্ষয়রোগ প্রতিরোধ করে।

ডেউয়া ভর্তার রেসিপি-

যা যা লাগবে:- ডেউয়া ৪টি, ১/২ চা চামচ মরিচগুড়া, স্বাদমতো লবণ, ২/৩টি কাচামরিচ কুচি অথবা টেলে নেওয়া শুকনা মরিচ বা শুকনা মরিচ পোড়া, ১ চা চামচ চিনি ও সরিষার তেল ১ চা চামচ।

যেভাবে তৈরি করবেন:- ডেউয়া ফলটি ভালোভাবে ধুয়ে একটি বাটিতে ডেউয়াটি ভালোভাবে ভেঙে নিন। এবার বাকি সব উপকারণ দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে মজাদার ডেউয়া ভর্তা।