অন্যরকম খবরতথ্য ও প্রযুক্তি

আয়োডিন যুক্ত লবণ চেনার উপায়

ইংরেজিতে স্যালারি (Salary) শব্দের উৎপত্তি, লাতিন শব্দ স্যালারিয়াম (Salarium) থেকে এ শব্দ এসেছে। অনেক দেশে সাধারণ মানুষের লবণ ব্যবহার বা খাওয়া ছিল নিষিদ্ধ। কিন্তু অনেক আগে লবণ ছিল দামি বস্তু তাই শুধু ধনী বা প্রভাবশালীরাই লবণ খাওয়ার অনুমতি পেত। লবণ নিয়ে তাতে একটু লেবুর রস কয়েক ফোঁটা দিয়ে দিন। কিছুক্ষণ পর লবণ নীল হলে বুঝতে হবে এই লবণে আয়োডিন আছে।

আয়োডিন যুক্ত লবণ চেনার উপায়

খাবারের স্বাদ বৃদ্ধিতে লবণের কথা বলা বাহুল্য আবার বেঁচে থাকার জন্য খাবারের সঙ্গে লবণ খুব প্রয়োজন। প্রাচীনকাল থেকেই লবণ বা নুনের সঙ্গে মানুষের পরিচয়। তবে প্রাচীনকালে বাংলার গ্রামগুলো ছিল স্বয়ংসম্পূর্ণ ও সমৃদ্ধ, বা লবণ ছাড়া জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় সব তারা তৈরি করতে পারত।

অনেক দেশে সাধারণ মানুষের লবণ ব্যবহার বা খাওয়া ছিল নিষিদ্ধ। কিন্তু অনেক আগে লবণ ছিল দামি বস্তু তাই শুধু ধনী বা প্রভাবশালীরাই লবণ খাওয়ার অনুমতি পেত। মিসরে মমি বানাতেও ব্যবহার করা হতো লবণ ও গ্রিক, রোমান, ইহুদি ও খ্রিস্টান ধর্মে লবণের গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার ছিল। আবার ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল ও এশিয়ার অনেক দেশে লবণ দিয়ে পণ্য বিনিময়ের প্রথা চালু ছিল এবং ইথিওপিয়া ও তিব্বতে তো মুদ্রা হিসেবে সরাসরি লবণ ব্যবহৃত হতো। এবং সে যুগে রোমান সেনাদের বেতন দেওয়া হতো লবণের ক্রয়মূল্য হিসাবে। একজন সেনা কতটুকু লবণ কিনতে পারবে, সে অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হতো। সেই ঘটনার সাক্ষী হিসেবেই ইংরেজিতে স্যালারি (Salary) শব্দের উৎপত্তি, লাতিন শব্দ স্যালারিয়াম (Salarium) থেকে এ শব্দ এসেছে।

প্রাচীনকালে মানুষ খনি থেকে তোলা লবণ ব্যবহার করত। আর এখন সাগরের পানি থেকে সহজেই লবণ উৎপাদন পদ্ধতি আমাদের জানা এই জন্যই এককালের এ মহার্ঘ বস্তু এখন সব দেশে সহজলভ্য।

সোডিয়াম ক্লোরাইড হলো খাবার লবণের রাসায়নিক নাম, এক অণু সোডিয়াম ও এক অণু ক্লোরিন রাসায়নিক বিক্রিয়ায় সোডিয়াম ক্লোরাইডের ক্রিস্টাল বা দানা তৈরি করে। সাগরের পানির প্রতি লিটারে ৩০ গ্রাম বিভিন্ন লবণ মিশে থাকে যার মধ্যে রয়েছে সোডিয়াম ক্লোরাইড, ম্যাগনেশিয়াম ক্লোরাইড, ম্যাগনেশিয়াম সালফেট, ক্যালসিয়াম সালফেট, পটাশিয়াম ক্লোরাইড ইত্যাদি।

আরও পড়ুন: ক্যামেরায় কোন লেন্স ব্যবহার করা হয়

আমাদের দেহের স্বাভাবিক কাজের জন্য লবণ অপরিহার্য, তাই প্রতিদিন খাবারের সঙ্গে লবণ গ্রহণ করতে হয়। আবার গলার কাছে রয়েছে থাইরয়েড গ্ল্যান্ড এ গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হয় থাইরক্সিন হরমোন, যা মানবদেহের বিপাক ও বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এ গ্রন্থির স্বাভাবিক কাজের জন্য আয়োডিন অপরিহার্য।

আমরা প্রাকৃতিক খাবার থেকেই আয়োডিন পাই। আবার কিছু এলাকায় (বিশেষ করে সমুদ্র থেকে অনেক দূরের এলাকা) খাবারে আয়োডিনের অভাব দেখা যায়।

এই সব এলাকায় গলগন্ডসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দেয় ও আয়োডিনের অভাবে ব্যাহত হয় শিশুদের মানসিক বিকাশও। তাই বর্তমানে খাবার লবণে আয়োডিন যোগ করা হয়। কিন্তু লবণের প্যাকেটের গায়ে আয়োডিন আছে বলে দাবি করলেও অনেক অসাধু ব্যবসায়ী আয়োডিন ছাড়াই লবণ বিক্রি করে থাকে। তাই সহজ এক পরীক্ষায় লবণে আয়োডিন আছে কি না, তা জানা সম্ভব। একটু লবণ নিয়ে তাতে একটু লেবুর রস কয়েক ফোঁটা দিয়ে দিন। কিছুক্ষণ পর লবণ নীল হলে বুঝতে হবে এই লবণে আয়োডিন আছে। যদি তা না হয়, তাহলে বুঝে নিতে হবে এই লবণে কোনো আয়োডিন নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *