স্বাস্থ্য ও পুষ্টি

কোরিয়ান স্কিন কেয়ার রুটিনের ধাপগুলো

কোরিয়ানরা তাদের ত্বকের যত্নের পিছনে যথেষ্ট সময় দেন, রূপচর্চায় কোরিয়ান ধারা বা কে-ধারা এখন দারুণ জনপ্রিয়। স্টিম সেশন মূলত ত্বকের পোরসগুলো পরিষ্কার করে। গরম ভাপের সাহায্যে সম্পাদিত এই স্টিম সেশন ত্বকের ভেতরের জমে থাকা ময়লাও বের হয়ে যায়। কোরিয়ান রূপচর্চায় ফেস টোনিং অবশ্য পালনীয় একটি ধাপ। টোনার হিসেবে কোরিয়ানরা রাইস বা চাল ভেজানো নিষ্কাষিত পানি প্রক্রিয়াজাত করে ব্যাবহার করেন। তবে সে রকমই সুন্দর ও ঝকঝকে ত্বক পেতে পারেন এই সহজ কোরিয়ান ধারার রূপচর্চায়।

কোরিয়ান স্কিন কেয়ার রুটিনের ধাপগুলো

কোরিয়ান বিউটি ইন্ড্রাস্ট্রি বর্তমান বিশ্ব কাঁপাচ্ছে কে-ড্রামা, কে-পপ এর পাশাপাশি কোরিয়ান রূপচর্চার বিভিন্ন প্রসাধনী বর্তমান সময়ে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কোরিয়ানরা তাদের ত্বকের যত্নের পিছনে যথেষ্ট সময় দেন। তবে নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে চললে আপনিও পেতে পারেন কোরিয়ানদের মতো স্ব্যাস্থজ্জ্বল ত্বক।

কোরিয়ান গ্লাস স্কিন কী?

রূপচর্চায় কোরিয়ান ধারা বা কে-ধারা এখন দারুণ জনপ্রিয়। এই কোরিয়ান ধারায় ত্বকের এমন এক বিশেষত্বকে প্রাধান্য দেওয়া হয়, যাতে ত্বক হয় মসৃণ আর ত্বকে আলোর প্রতিফলন ঘটে কাচের মতোই, যাকে বলা হয় ‘গ্লাস স্কিন’। এসব কিন্তু মেকআপের কারসাজি নয়; বরং ত্বকের যত্ন এখানে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়, যাতে ত্বক ভেতর থেকে আর্দ্র হয়ে ওঠে এবং সতেজ থাকে। ধৈর্য ধরে রোজ যত্ন নেওয়া জরুরি গ্লাস স্কিনের জন্য। সপ্তাহে ১ বার বিশেষ ফেসপ্যাকও লাগাতে হয়। জিনগত বৈশিষ্ট্যের ও আবহাওয়ারও প্রভাব থাকার কারণে একেক জনের ত্বক একেক রকম।

কোরিয়া বা চীনের মানুষদের ত্বকের ধরন আমাদের চেয়ে আলাদা জিনগত বৈশিষ্ট্যের কারণে। তাই পুরোপুরি তাঁদের মতো ‘লুক’ পাওয়া বেশ মুশকিলই বটে। তাঁদের যত্নআত্তির ধারাটা অনুসরণ করে তাঁদের কাছাকাছি ধরনের ত্বক পেতে পারেন। তাই এই নিয়মে যত্ন নিলে ত্বক সতেজ ও মসৃণ হবে। গ্লাস স্কিন পাওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে এমনটাই বলছিলেন রূপবিশেষজ্ঞরা। গ্লাস স্কিন পেতে কীভাবে ত্বকের যত্ন নিতে হবে জেনে নিন…

কোরিয়ান বিউটি হ্যাকসগুলো-

স্টিম সেশন:-

স্টিম সেশনের কোরিয়ানদের ত্বক পরিচর্যায় ভূমিকা অনেক। এই স্টিম সেশন মূলত ত্বকের পোরসগুলো পরিষ্কার করে। গরম ভাপের সাহায্যে সম্পাদিত এই স্টিম সেশন ত্বকের ভেতরের জমে থাকা ময়লাও বের হয়ে যায়।

আরও পড়ুন: প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ভিটামিন ডি এর অভাবে কি রোগ হয়

মুখের ব্যায়াম:-

কোরিয়ানরা ত্বককে স্বাস্থ্যজ্জ্বল করতে বিভিন্ন ধরনের মুখের ব্যায়াম করে থাকেন। ত্বককে টানটান রাখতে বিশেষ করে নিয়মিত ফেস রোলার দিয়ে নিচ থেকে উপরের দিকে ম্যাসাজ করে তারা। এতে করে মুখের রক্ত চলাচল প্রবাহ বাড়ে ও ত্বককে বলি রেখা পড়া থেকে বাঁচায়।

ডাবল ক্লিনজিং:-

ত্বক পরিষ্কার রাখতে কোরিয়ান এই ডাবল ক্লিনজিং পদ্ধতিটি খুবই কার্যকারী। সারাদিন জমে থাকা মুখের ময়লা, সানস্ক্রিন, মেক-আপ এর অবশিষ্টাংশ ডাবল ক্লিজিং এর মাধ্যমে ভালোভাবে দূর হয়ে যায়। এ পদ্ধতিতে প্রথমে অয়েল বেসড একটি ক্লিনজার দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করুন মিনিট পাঁচেক ধরে। এরপর পানি না লাগিয়ে ত্বক মুছে নিন, এবং ওয়াটার বেসড ফেশওয়াশ দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন। অতিরিক্ত পানিটা হাত দিয়ে সরিয়ে দিন এবং ত্বকে লেগে থাকা বাকি পানিটুকু মুখেই শুকাতে দিন। এতে মুখের মসৃণতা বজায় থাকবে।

রাইস ওয়াটার টোনার:-

কোরিয়ান রূপচর্চায় ফেস টোনিং অবশ্য পালনীয় একটি ধাপ। কোরিয়ানরা অনেক আগে থেকেই টোনার হিসেবে বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান যেমন শসা, টমেটো ও তরমুজের রস ব্যবহার করে আসছে। কিন্তু টোনার হিসেবে কোরিয়ানরা রাইস বা চাল ভেজানো নিষ্কাষিত পানি প্রক্রিয়াজাত করে ব্যাবহার করেন। এই টোনার ত্বককে উজ্জ্বল ও টানটান করতে সাহায্য করে এবং ত্বকে বয়সের ছাপও পড়তে দেয় না।

সিরাম ও ময়েশরাইজার:-

রূপচর্চায় সিরাম ও ময়েশ্চারাইজারকে অনেক প্রাধান্য দিয়ে থাকেন কোরিয়ানরা। ভিটামিন-সি, এবং ভিটামিন-ই, স্নেইল মিউসিন, হায়ালোরনিক এসিডযুক্ত সিরাম ও ময়েশ্চারাইজার তারা প্রতিদিনের রূপচর্চার তালিকায় রাখেন। যা ত্বকের পিগমেন্টেশন দূর করে ও ত্বককে স্বাস্থ্যকর করে তোলে।

আরও পড়ুন: ইলেক্ট্রোলাইট এর অভাবে মাথাব্যথা হতে পারে

ট্যাপিং:-

এই ট্যাপিং হলো ফেসিয়াল রিলাক্সেশন পদ্ধতি, কোরিয়ানরা ট্যাপিংকে গ্লাসস্কিন এর অন্যতম রহস্য বলে দাবি করে থাকেন। টোনার, সিরাম, ময়েশ্চারাইজার বা ত্বকের যত্নে ব্যবহৃত অন্য পন্য এমনভাবে ম্যাসাজের মাধ্যমে ত্বকে লাগানো হয় [তুলার বল বা হাতের আঙুল দিয়ে পাঁচ-সাতবার ত্বক মালিশ করুন বৃত্তাকার গতিতে] যাতে রক্ত চলাচল বাড়ে এবং তারুণ্যও ধরে রাখা যায়।

সূর্যরশ্মি থেকে সুরক্ষা:-

কোরিয়ানরা বাইরে গেলে [কিংবা চুলার তাপে, প্রচণ্ড গরমে বা অতিরিক্ত আলোতে কাজ করতে হলে] তার আগে সানস্ক্রিন পণ্য লাগিয়ে নিন। কিন্তু তা ময়েশ্চাইরাইজার লাগানোর সঙ্গে সঙ্গেই লাগানো যাবে না। ময়েশ্চারাইজার ত্বকে ভালোভাবে মিশে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

শেষ কথা:-

তবে আমাদের পুরোপুরি কোরিয়ান গ্লাস স্কিন পাওয়া সবার জন্য সম্ভব হবে না জিনগত কারণে। তবে সে রকমই সুন্দর ও ঝকঝকে ত্বক পেতে পারেন এই সহজ কোরিয়ান ধারার রূপচর্চায়। এছাড়াও মনে রাখতে হবে, গ্লাস স্কিন পেতে হলে আমাদের ত্বকের দাগছোপ দূর করতে হবে। তাই ত্বকে কোনো প্রকার দাগ থাকলে তার কারণ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।

One thought on “কোরিয়ান স্কিন কেয়ার রুটিনের ধাপগুলো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *