কালোজিরার তেলের উপকারিতা
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হাঁপানি দূর করে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
স্মৃতিশক্তি বাড়ায়,
জয়েন্টের ব্যথা কমায়।
মাথা ব্যথা থেকে মুক্তি দেয়,
কিডনি রক্ষা করে,
দাঁত মজবুত করে।
কালোজিরার তেলের উপকারিতা
কালিজিরা বা কালিজিরার তেলের আছে অনেক স্বাস্থ্যগুণ। এই কালিজিরার তেল ২০০০ বছরের বেশি সময় ধরে ঐতিহ্যগতভাবে ওষুধে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কালিজিরার তেল নিয়মিত সেবন করলে তা আমাদেরকে বাঁচাতে পারে বিভিন্ন রোগ থেকে। কালিজিরার তেলের বেশ কিছু উপকারী দিক রয়েছে। আমাদের বয়স ও শরীরের ওজন ভেদে দিনে ১/২ চা–চামচ কালিজিরার তেল গ্রহণই যথেষ্ট। কালিজিরার তেলে হাইড্রোজেনেটেড ফ্যাট, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-ডি, ভিটামিন-বি২, কোপার, নিকেল, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, জিংক, সেলেনিয়াম, সেস্কুইটায়ান। তাই একনজরে কালিজিরার তেল নিয়মিত সেবন করলে যেসব রোগ থেকে বাঁচা যাবে, সেগুলো দেখে নেওয়া যাক।
ক্যানসার:-
উচ্চমাত্রায় অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট রয়েছে কালিজিরার তেলে। এই অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট এমন একটি যৌগ, যা কোষকে ফ্রি-র্যাডিক্যালের কারণে সৃষ্ট ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে বেশ সাহায়ক, অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট প্রদাহ কমাতে পারে ও ক্যানসারের মতো রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধক্ষমতা গড়ে তুলতে পারে। আবার কালিজিরার তেল থাইমোকুইনোন-সমৃদ্ধ, যার শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আর অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি প্রভাব রয়েছে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, এই যৌগ বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের চিকিৎসায় বেশ সাহায়ক।
হাঁপানি বা অ্যাজমা:-
হাঁপানি হলে শ্বাসনালিগুলোর ভেতরের দিকের দেয়াল ও ঝিল্লি ইনফ্ল্যামেশন হয়ে ফুলে যায় ও এর চারপাশের পেশিগুলো সংকুচিত হয়। এতে শ্বাসকষ্ট হয়। গবেষণায় দেখা যায় যে, কালিজিরার তেল, বিশেষ করে এই তেলে থাকা থাইমোকুইনোন শ্বাসনালিতে প্রদাহ কমিয়ে বা পেশি শিথিল করে হাঁপানির চিকিৎসায় সাহায্য করতে পারে।
আরও পড়ুন: চুলের যত্নে পেঁয়াজের উপকারিতা
ডায়াবেটিস:-
টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদেরকে নিয়ে বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ২ গ্রাম করে কালিজিরার তেলের ডোজ ফাস্টিং অবস্থায় রক্তে শর্করার মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারে। কেননা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের রক্তের শর্করার উচ্চমাত্রা স্ট্রোক, চোখের রোগ, কিডনি রোগ সহ নানা রোগের জটিলতা ও ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল:-
উচ্চ রক্তচাপ ও ক্ষতিকর এলডিএল কোলেস্টেরলের আধিক্য হৃদ্রোগের জন্য ঝুঁকির কারণ। বিভিন্ন গবেষণায় দেখাগেছে, কালিজিরার তেল উচ্চ রক্তচাপ ও অতিরিক্ত কোলেস্টেরল কমাতে পারে। গবেষণায় দেখা যায়, আট থেকে ১২ সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন ২-৩ গ্রাম কালিজিরার তেলের ক্যাপসুল গ্রহণ করলে এলডিএল আর সেই সঙ্গে মোট কোলেস্টেরলের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। অপর একটি গবেষণায় দেখা যায় যে, ৬ সপ্তাহের জন্য রাতে খাওয়ার পর দুই চা–চামচ বা ১০ গ্রাম কালিজিরার তেল গ্রহণ করলে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়। তবে আধা চা–চামচ কালিজিরার তেল দিনে দুই বার ৪ সপ্তাহ গ্রহণ করলে রক্তচাপের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেতে পারে।
আলঝেইমার ও পারকিনসন্স:-
কালিজিরার তেলের থাইমোকুইনোন এই নিউরো ইনফ্ল্যামেশন কমাতে পারে। মস্তিষ্কের টিস্যুর প্রদাহকে নিউরো ইনফ্ল্যামেশন বলা হয়, এটি আলঝেইমার ও পারকিনসন্সের মতো রোগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বলে মনে করা হয়। গবেষণায় দেখা যায় যে, এই কালিজিরার তেল আলঝেইমার বা পারকিনসন্স রোগের মতো মস্তিষ্কের ব্যাধি থেকে রক্ষা করতে বেশ সাহায়ক।
আরও পড়ুন: মুলা শাকের উপকারিতা
আমাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য কালিজিরার তেলের অনেক উপকারী, যেগুলো নিয়ে এখন বিস্তর গবেষণা হচ্ছে ও ভালো ফলও মিলছে। যেমন:-
#কালিজিরার তেল রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের লক্ষণগুলো হ্রাস করে।
#এই কালিজিরার তেল নিয়মিত সেবনে পুরুষের ফার্টিলিটি রক্ষা ও বৃদ্ধি করে।
#কালিজিরার তেল অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ হিসেবে বেশ ভালো কাজ করে।
#কালিজিরার তেল চুলের জন্য ভালো হতে পারে।
#কালিজিরার তেল একজিমা, শুষ্ক ত্বক, ব্রণ, সোরিয়াসিসের ওষুধ হিসেবে বেশ ভালো কাজ করে।
#এই কালিজিরার তেল ত্বকের বিভিন্ন সমস্যায় ওষুধের মতো কাজ করে।
মন্তব্য:- যে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, কেননা প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে।
Pingback: ডুমুর খাওয়ার উপকারিতা - amaderkhabar