সুগন্ধি ফুলে সৌদির মরুভূমি পর্যটকের ঢল…
অন্য বছরের তুলনায় এবারের শীতে বৃষ্টিও বেশি হয়েছে দেশটিতে। এর প্রভাবে দেশটির উত্তরাঞ্চলের বিশাল-বিস্তৃত মরুভূমি ছেয়ে গেছে বেগুনি রঙের সুগন্ধি ফুলে। সৌদি আরবের মক্কা নগরী ও তার আশপাশের পাহাড় গুলোতে ভারি বৃষ্টিপাত ও গত ডিসেম্বরের আকস্মিক বন্যার পর সবুজ হয়ে ওঠার খবর জানা গিয়েছিল জানুয়ারিতেই।
সংবাদমাধ্যম অল মনিটরস এক প্রতিবেদনে জানায়, সুগন্ধি এই ফুলটির সৌদি আরবে বুনো ল্যাভেন্ডার নামে পরিচিত। সৌদির রাফা অঞ্চলে এই ঘটনা ঘটেছে। এই অঞ্চলটি সৌদি-ইরাক সীমান্তের কাছাকাছি। দিগন্ত জুড়ে এই ফুলের সমাহার দেখতে দেশে বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন সৌদির লোকজন। বার্তা সংস্থা এএফপির সঙ্গে ওই অঞ্চলে ঘুরতে আসা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মুহাম্মাদ আল মুতাইরির(৫০) কথা হয়েছে, তিনি ছয় ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে রাফা এসছেন। এই দৃশ্য আর ফুলের সুগন্ধ আত্মাকে তরতাজা করে তোলে। তিনি বলেন সৌদি আরবে এমন দৃশ্য দেখতে পাব এমনটা আমরা আশাও করিনি।
গত শীতে ব্যাপক বৃষ্টিতে সৌদি আরবে পশ্চিমাঞ্চলের অনেক এলাকায় ব্যাপক বন্যাও হয়েছে। এই বৃষ্টি উত্তরাঞ্চলে এনে দিয়েছে প্রাণের পরশ। রাজধানী রিয়াদ থেকে রাফার মরুভূমি অঞ্চলের দূরত্ব ৭৭০ কিলোমিটার। বন্ধু বান্ধবসহ নিজেরা ব্যক্তিগত গাড়িতে এই পরিমাণ পথ পাড়ি দিয়ে উপস্থিত হয়েছেন সৌদি আরবের ব্যবসায়ী নাসের আল কারানি পিকনিকের উদ্দেশ্যে গাড়িতে তাঁবু, খাবার ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামও সঙ্গে এনেছেন তিনি। তিনি বলেন, আর মাত্র ১৫ – ২০ দিন এই গাছগুলো টিকে থাকবে তারপর সূর্যের তাপে শুকিয়ে যাবে। ফুলগাছ ঘেরা একটি ফাঁকা জায়গায় স্টোভে চায়ের কেতলি বসিয়ে চা বানান তিনি, চা খেতে খেতে তিনি বলেন, এখানে আসার পর থেকে নিজেকে খুব নির্ভার লাগছে। সৌদি নাগরিক হামজা আল মুতাইরিও নিজের পরিবারের সদস্য ও বন্ধু বান্ধবদের নিয়ে বনভোজনের উদ্দেশে এসেছেন রাফায়। তিনি বলেন, এখনে আসার পর থেকে জীবনের প্রতি নতুন করে আগ্রহী হয়ে উঠেছি। তেমনই একজন আবদুল রহগমান আল মারি দিগন্তজুড়ে ফুলের এই সমাহার দেখতে কাতার থেকে গাড়ি চালিয়ে ছুটে এসেছেন। তিনি বলেন এখানে আসতে আমার ১২ ঘণ্টা গাড়ি ড্রাইভ করতে হয়েছে আমাকে কিন্তু আসার পর থেকে কোনো ক্লান্তি বোধ হচ্ছে না। মনে হচ্ছে, যেন স্বর্গে এসেছি।