আন্তর্জাতিক

রুশ যুদ্ধবিমানের সঙ্গে সংঘর্ষে মার্কিন ড্রোন বিধ্বস্ত, রাষ্ট্রদূতকে তলব…

মার্কিন সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়ার যুদ্ধবিমানের ধাক্কা লেগে একটি মার্কিন ড্রোন কৃষ্ণসাগরে বিধ্বস্ত হয়েছে। মঙ্গলবার একটি রুশ সুখোই-২৭ জেট বিমানের সঙ্গে মার্কিন এমকিউ-৯ রিপার ড্রোনের ধাক্কা লাগে এবং ড্রোনটি কৃষ্ণসাগরে বিধ্বস্ত হয়। ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর এই প্রথম এমন ঘটনা ঘটল। এ ঘটনায় রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে ওয়াশিংটন। আর এ ঘটনার জন্য রাশিয়ার সমালোচনা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিদ ও কর্মকর্তারা।

ইউএস এয়ার ফোর্সের ইউরোপ ও আফ্রিকার কমান্ডার জেনারেল জেমস হেকার বলেছেন, আমাদের এমকিউ-৯ ড্রোনটি আন্তর্জাতিক আকাশসীমায় রুটিন অপারেশন চালাচ্ছিল। সেই সময় একটি রুশ বিমান এর সামনে এসে যায় ও ড্রোনটিকে ধাক্কা মারে। ফলে ড্রোনটি ভেঙে পড়ে। রুশদের এই অনিরাপদ ও অপেশাদার কাজের ফলে দুটি উড়োজাহাজ প্রায় বিধ্বস্ত হতে যাচ্ছিল। এই সংঘর্ষকে রাশিয়ার বেপরোয়া পদক্ষেপ বলে উল্লখ করেছে। এই ঘটনায় রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন এ ঘটনায় রাশিয়ার নিন্দা জানিয়েছে। মার্কিন ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, এই অঞ্চলে রুশ বিমানের মুখোমুখি হওয়া সাধারণ ঘটনা। প্রায়ই ঘটে থাকে। তবে এই ঘটনা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। কারণ রাশিয়ার এই পদক্ষেপ ছিল অনিরাপদ ও অপেশাদার। প্রকৃতপক্ষে এটি ছিল বেপরোয়া পদক্ষেপ।

যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোনের নজরদারির কাজ ব্যাহত করতে রাশিয়া এই ঘটনা ঘটিয়েছে নাকি সেটি নামানোর জন্য বেপরোয়া হামলা চালানো হয়েছে। মার্কিন কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে ঐ অঞ্চলে নিজেদের জঙ্গিবিমানের সঙ্গে সমন্বয় করে রাশিয়ার বৈমানিকেরা গুরুতর কাজ করেছেন। সে কারণে যে রুশ বৈমানিক জঙ্গিবিমানটিকে মার্কিন ড্রোনের খুব কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন, তিনি তা ভুলবশত করে থাকতে পারেন। তবে এটা যদি যুক্তরাষ্ট্রের একটি উড়োজাহাজের ওপর রাশিয়ার যুদ্ধবিমানের বেপরোয়া হামলা হয়ে থাকে তাহলে তা বড় ধরনের উসকানি হিসেবে দেখা দেবে। এতে উত্তেজনা নতুন রূপ নেবে।

সেক্ষেত্রে এই হামলাকে দেখা হতে পারে, যুক্তরাষ্ট্র কী প্রতিক্রিয়া দেখায় তা বোঝার জন্য ক্রেমলিন এটা করেছে সে হিসেবে। পশ্চিমা মিত্ররা চাইছে, ইউক্রেন যুদ্ধ যেন সরাসরি রাশিয়ার সঙ্গে সংঘাতের দিকে নিয়ে না যায়। তবে কৃষ্ণসাগরে মঙ্গলবার সকালে যেটা ঘটল, তা সেই সরাসরি সংঘাতের ঘটনাই। তবে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে জানিয়েছে, রাশিয়ার বিমান কোনো অস্ত্র ব্যবহার করেনি বা ড্রোনটির সংস্পর্শে আসেনি। ক্রিমিয়া উপদ্বীপের কাছে কৃষ্ণসাগরের উপর একটি মার্কিন মানববিহীন ড্রোন শনাক্ত করে রাশিয়া। যা রুশ সীমান্তের দিকে যাচ্ছিল। ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের জন্য রাশিয়া যে অস্থায়ী আকাশপথ তৈরি করেছে, ড্রোনটি তা লংঘন করছিল। ওই ড্রোন চিহ্নিত করার জন্য যুদ্ধ বিমান পাঠায় রাশিয়া। কিন্তু বাক বদল করতে গিয়ে এমকিউ–৯ ড্রোনটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সাগরে পড়ে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *