পতঙ্গ কি আত্মহত্যার জন্যই এমন করে
রাতে চোখে ভালো দেখে না বেশিরভাগ পোকামাকড়ই। পতঙ্গরা আত্মহত্যার জন্য আগুনে ঝাঁপ দেয় না। যদি তাই করতো, দিনের বেলায় যেসব আগুন জ্বলে, তাতেও পতঙ্গরা ঝাঁপ দিত।
পতঙ্গ কি আত্মহত্যার জন্যই এমন করে
মানুষ ছাড়া খুব কম প্রাণীই আত্মহত্যা করে, আত্মরক্ষার তাগিদ সব প্রাণীরই সহজাত ধর্ম। এমনকী সব প্রাণীরা অত্যন্ত যন্ত্রণা সয়ে বাঁচতে চায়। তবে পতঙ্গদের আগুনে ঝাপ দেওয়ার ব্যাপারটা দেখে আপনার মনে হতেই পারে, ইচ্ছে করেই এরা নিজের মৃত্যু ডেকে আনছে।
পতঙ্গ আত্মহত্যার জন্যই এমন করে?
আত্মহত্যার জন্য পতঙ্গরা আত্মহত্যার জন্য আগুনে ঝাঁপ দেয় না। যদি তাই করতো, দিনের বেলায় যেসব আগুন জ্বলে, তাতেও পতঙ্গরা ঝাঁপ দিত। কিন্তু কোনো পতঙ্গকে দিনের আগুনে এভাবে ঝাঁপ দিতে দেখবেন না। এখানে কিন্তু আগুনের চেয়ে আলোর ব্যাপারটাই মূখ্য, পোকামাকড়েরা আকৃষ্ট হয় আলোতে।
পোকাদের যন্ত্রণায় রাতে অতিষ্ঠ হননি, এমন কোনো মানুষ পাওয়া যাবে। হয়তো বই পড়ছেন বা খাবার খাচ্ছেন, তখন একদল পোকাশে এসে হয়তো হামলে পড়ল আপনার বইয়ের উপর কিংবা খাবার পাত্রে, তখন খাবারটাই নষ্ট হয়ে যায়। হয়তো তখন মনে পড়ল, আরে আলো কেন পোকাকে আকর্ষণ করে।
আরও পড়ুন: মশা মানুষের পায়ের পাতায় বেশি কামড়ায় কেন
এ প্রশ্নের উত্তর কি?
এর শতভাগ নিশ্চিত কোনো ব্যাখ্যা বিজ্ঞানের কাছে নেই। কিন্তু যৌক্তিক কিছু ব্যাখ্যা তো অবশ্যই আছে। যেমন আগের দিনে, মানুষ যখন কার্যকর কোনো আলো জ্বালতে শেখেনি, তখন মানুষ রাতে পথ চলত কীভাবে। আকাশের চন্দ্র-তারা দেখে, বিশেষ করে ধ্রুব তারার অবস্থান দেখে চলাচল করত বা ধ্রুব তারা দেখে দিক ঠিক করত।
রাতে চলাচলের জন্য পোকামাকড়েরও একই কাজ করে থাকে। রাতে চোখে ভালো দেখে না বেশিরভাগ পোকামাকড়ই। আবার আমাদের না হয় টর্চ লাইট, সার্চ লাইট আছে, পোকাদের তা নেই। তাই পোকামাকড়রা চাঁদ দেখে পথ চলার চেষ্টা করে। মনে রাখবেন, চাঁদ দেখে পথ চলে, চাঁদের আলোয় নয়। কারণ, চাঁদের আলোর অত উজ্জ্বলতা নেই যে সেই আলো দেখে পাকামাকড়েরা পথ চলবে। তবে চাঁদকে একটা নির্দিষ্ট কোণে রেখে রাতে দিক ও পথ চিনে চলাচল করে পোকারা। এমনিতে সমস্যা হয় না, কিন্তু গোল বাঁধে যখন আমরা কৃত্রিম আলো জ্বালাই।
কেননা কৃত্রিম আলোর উজ্জ্বলতা চাঁদের আলোর চেয়ে অনেক বেশি। তাই যখনই রাতে কৃত্রিম আলো পোকামাকড়ের চোখে পড়ে তখন এরা বিভ্রান্ত হয়ে পরে। তখন কৃত্রিম আলোর উৎসটাকেই চাঁদ ভেবে ভুল করে। আবার আলোর উৎসকে সেই নির্দিষ্ট কোণে রেখে পথ চলার চেষ্টা করে, ঝামেলাটা আরও বাড়ে। কারণ চাঁদের আলোর মতো পুরো এলাকা তো কৃত্রিম আলোয় উদ্ভাসিত হয় না। এবং আলোর আওতার বাইরে গেলেই আর পথ চলতে পারে না। তখন বিভ্রান্ত হয়ে আলোর দিকে ফিরে আসে পতঙ্গরা।
আরও পড়ুন: আনারস ও দুধের বিক্রিয়া
তবে এখানেও হয় ঝামেলা, চাঁদের আলো একটা নির্দিষ্ট দিক থেকে আসে দেখে পোকারা। কিন্তু কৃত্রিম আলো চারপাশেই আলো ছড়িয়ে দেয়, তাই সেই নির্দিষ্ট কোণটা আর ঠিক করতে পারে না পোকামাকড়েরা। এবং বিভ্রান্ত হয়ে আলোর চারপাশে ঘোরে ও ঝাঁপিয়ে পড়ে বাতির ওপর।
কিন্তু বৈদ্যুতিক বাতিতে পোকার আসলে তেমন ক্ষতি হয় না, কারণ এখনকার বৈদ্যুতিক বাতিগুলো অনেকটাই ঠান্ডা।
কিন্তু খোলা আগুন যেমন কুপি, মোমবাতি বা প্রদীপের আলোর উপর ঝাঁপ দিলেই নিশ্চিত মৃত্যু। আবার বড়-সড় অগ্নিকুণ্ড হলে তো কোন কথাই নেই, কাতারে কাতারে বিভ্রান্ত পোকারা এসে পড়ে আগুনে, কিছু বুঝে ওঠার আগেই মারা যায়।
সূত্র:-হাউ ইটস ওয়ার্কস.
😇😇😇😇
Thank U.