স্বাস্থ্য ও পুষ্টি

ত্বকে সরিষার তেলের উপকারিতা

আমাদের দেশের অনেক পরিবারই  শীতকালে বাচ্চা  থেকে বয়স্কলোক  সরিষার-তৈল প্রায় সবাই ব্যবহার করে।। এটি যোগাযোগ করতে সহজ, এবং তার বৈশিষ্ট্যগুলি ত্বক স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে। সরিষা থেকে তেল তৈরি করা হয় যা ত্বকের যত্নের জন্য অত্যন্ত উপকারী হতে পারে।তাই আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় ত্বকে সরিষার তেলের উপকারিতা

সরিষার তেল মালিশের উপকারিতা 

সেই আদিকাল থেকে বাঙ্গাগালীদের মধ্যে ব্যবহার হয়ে আসছে সরিষার তেল। যার গুণাগুণের কথা বলে শেষ করা যাবে না। আগে দিনে দাদি- নানিরা তেল মানেই সরিষার তেল বুঝতো। এটিই ব্যবহার করা হতো রান্নায় এবং ত্বকের জন্য। আবার শীত এলেতো কথাই নেই নানা রোগের মহাষৌধ হিসেবেও কাজ করে এ সরিষার-তেল

এই তেলকে এক ধরনের আয়ুর্বেদ ঔষধ বলা হয়।যেমন ঠান্ডা ও কাশীতে সরিষার-তেল খুবই উপকারী। শিশু বাচ্চা কিংবা বৃদ্ধ ঠান্ডাজনিত কফের জন্য হাতের তালাতে এবং পায়ের পাতায় মালিশ বিষেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে।তাছাড়া  শরীর ও ত্বকের জন্য খুবই ভাল।কারন প্রয়োজনীয় ভিটামি সি,ভিটামিন ই,প্রোটিন, ক্যালসিয়াম এতে বিদ্যমান রয়েছে। বর্তমানে বিশেষ করে বাচ্চাদের বাজারে কেমিক্যাল পন্য ব্যবহার না করে তৈল মালিশেই উপকার বেশি। 

সরিষার তেলের উপকারিতা

শীতের মৌসুমে সবসময় ঠান্ডা ঠান্ডা একটা ভাব থেকেই যায়। নিয়মিত সরিষার-তেল ব্যবহারে অনেক উপকার পাওয়া যায়-

এ সরিষার তেল ব্যবহার শুধু সাধারণ কিছু রোগ থেকে মুক্তি দেয় না গুরুতর রোগ থেকেও মুক্তি মেলে। রক্ত সঞ্চালন উন্নত হয় হালকা গরম  তেল শরীরে মালিশ করলে। শীতে সরিষার-তেল ব্যবহারের আরও অনেক উপকারিতা রয়েছে।

 হার্ট:- থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, ওমেগা সিক্স ফ্যাটি অ্যাসিড, মনোস্যাচুরেটেড এবং পলি-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। তাই রান্নাতে সরিষার তেল খাওয়া হৃৎপিণ্ডের জন্য উপকারী।

আরও পড়ুন: গ্রিন টি খাওয়ার সঠিক সময়

 ক্যান্সার:- গবেষণায় বলছে, সরিষা ব্যবহারে ক্যান্সার কোষ বাড়তে দেয় না। আবার এই তেল ব্যবহারে হাঁপানি, কাশি এবং দাঁতের ব্যথা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। তাই রান্নায় সরিষার তেল ব্যবহার করা ভালো।

 অ্যাজমা:- সরিষার-তেল অ্যাজমা ও সাইনুসাইটিসের প্রাকৃতিক প্রতিকার হিসেবে অত্যন্ত কার্যকর। ঠান্ডা-কাশি নিরাময়েও চমৎকার কাজ করে এই তেল, আবার ব্যাকটেরিয়ার ইনফেকশনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারে।

 জ্বর, সর্দি, কাশি:- ছোট-বড় সবারই শীতকালে সর্দি-কাশি লেগে থাকে। এ সময় সরিষার তেল দিয়ে মালিশ করলে বুকে জমে থাকা কফ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আবার সর্দির কারণে নাক বন্ধ হলে গরম পানিতে সরিষার তেল মিশিয়ে ভাপ নিলেও আরাম পাওয়া যায়। তাছাড়া, সরিষার তেলে কিছু লবঙ্গ ও রসুন মিশিয়ে কিছুক্ষণ জ্বাল দিয়ে একটি পাত্রে রাখুন এবং প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে এর কয়েক ফোঁটা তেল নাকে দিন এতে দ্রুত ঠান্ডা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। কিন্তু নবজাতকের বেলায় চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করা ভালো।

 ব্যথা কমায়:- সরিষার তেল হালকা গরম করে ব্যথার জায়গায় মালিশ করলে ব্যথা কমে। কারণ রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়।

আরও পড়ুন: যষ্টিমধু খাওয়ার উপকারিতা কি

 ওজন কমায়:- হার্ট, হাড়, হজম এবং স্নায়ুতন্ত্রের জন্য সরিষার তেলের রান্না যে স্বাস্থ্যকর সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। সরিষার তেলের মনোস্যাচুরেটেড এবং পলি-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। সরিষার তেল ডিপ ফ্রাই, খাবার গরম এবং খাবারে অনন্য স্বাদ আনতে কার্যকর। যাদের পেটের সমস্যা বা যাদের হজমে সমস্যা রয়েছে, তাদের প্রতিদিনের রান্নায় সরিষার ব্যবহার করা উচিত। হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এবং দ্রুত খাবার হজম হলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।

 সানস্ক্রিন:-ক্ষতিকর আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি থেকে এবং অন্যান্য দূষিত পদার্থ থেকে ত্বককে সুরক্ষা দিতে পারে। এ তেল খুব ঘন হয় এবং এতে উচ্চমাত্রার ভিটামিন ই থাকে। সেজন্য স্কিন ক্যান্সারও প্রতিরোধ করতে পারে। সরিষার তেলের ভিটামিন ই বলিরেখা বা বয়সের ছাপ দূর করতে পারে।

চুলে সরিষার তেলের উপকারিতা 

সরিষার তেল উচ্চমাত্রার বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন ও খনিজে পরিপূর্ণ থাকে। বিশেষ করে এতে থাকে বিটা ক্যারোটিন ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়ে চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তাছাড়া   ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফ্যাটি এসিড ও ম্যাগনেসিয়াম থাকে, যা চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

রসুন ও সরিষার তেলের উপকারিতা

রসুন ও সরিষার তেল, বাংলাদেশী রান্নার জন্য অমিলদার মুখরোচক উপকারিতা সহকারে পরিচিত। এই দুটি প্রাকৃতিক উপাদান মিশে রয়েছে অসংখ্য স্বাস্থ্যকর লাভজনক উপকারিতা।

রসুনের গুণগত মান:**রসুনে অমিল, ভিটামিন, মিনারেল, এসেনশিয়াল ফ্যাটি এসিড, ফাইবার, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পোটাসিয়াম, সেলেনিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন সি থাকে। এই উপাদানগুলি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, কোলেস্টেরল মাত্রা কমিয়ে তোলে, অস্থি দন্তের সুস্থ বৃদ্ধি বৃদ্ধি করে এবং স্বাস্থ্যকর হৃদয় ফাংশন বজায় রাখে।

শেষ কথা

পরিশেষে বলা যায়,ত্বকে সরিষার তেলের উপকারিতা এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনায় আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। সরিষার-তেল বাংলাদেশে একটি অমূল্য প্রাকৃতিক উপকরণ, যা না মাত্র খাদ্যে ব্যবহার হয়, বরং মালিশের উপকারিতাও অতুলনীয়। এই তেলে অধিক মাত্রায় পোষক তত্ত্ব ও ভিটামিন পাওয়া যায়, যা ত্বক, চুল, এবং শরীরের অন্যান্য অংশগুলির জন্য ভাল হতে পারে।

One thought on “ত্বকে সরিষার তেলের উপকারিতা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *